• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৫:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১৬, ২০১৯, ০৫:৪৬ পিএম

রাজধানীতে আকস্মিক হামলার পরিকল্পনার সময় আটক ৬ জঙ্গি

রাজধানীতে আকস্মিক হামলার পরিকল্পনার সময় আটক ৬ জঙ্গি
আটককৃত ৬ জঙ্গি

রাজধানীতে আকস্মিক হামলার (লোন উলফ অ্যাটাক) পরিকল্পনার সময় উত্তরায় ৬ জঙ্গিকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৪)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন উগ্রবাদী বই-লিফলেট, উগ্রবাদী ডিজিটাল কনটেন্ট, মোবাইল ও ল্যাপটপ জব্দ করা হয়।

আটককৃত ৬ জন হলেন- শফিকুল ইসলাম সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির, ইলিয়াস হাওলাদার খাত্তাব, ইকরামুল ইসলাম আমীর হামজা, আমীর হোসাইন তাওহীদি জনতার আর্তনাদ, শিপন মীর আব্দুর রব ও ওয়ালিউল্লাহ ওরফে আব্দুর রহমান। 

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‌্যাব-৪-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে উত্তরা, গাজীপুর ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল আনাসের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪।

তিনি আরও বলেন, জঙ্গিরা দেশে কথিত ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বাতিল চায়। তাদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে আক্রমণের মাধ্যমে কঠোর শাস্তি দেয়া হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রের পরিবর্তে তারা চাপাতি ব্যবহার করে থাকে। সংগঠনের ভাষায় আকস্মিক আক্রমণকে লোন উলফ অ্যাটাক বলে থাকে। সম্প্রতি লোন উলফ অ্যাটাক পরিকল্পনার জন্য জঙ্গিরা উত্তরায় মিলিত হওয়ার সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয় তারা।
 
র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, শফিকুল ইসলাম সাগর ওরফে সালমান মুক্তাদির ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পঞ্চম বর্ষের ছাত্র। ইলিয়াস হাওলাদার নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে অ্যাপসের মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম দল সম্পর্কে প্রথমে জানতে পারে। পরে তাদের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে যোগ দেয়। প্রায় দুই বছর যাবত এ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।

গ্রেফতার ইলিয়াস হাওলাদারের সাংগঠনিক নাম খাত্তাব। তিনি পরিবহনের চালক। অনলাইনে খাত্তাব ছদ্মনাম ব্যবহার করে জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ছাত্রজীবনে হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। হরকাতুল জিহাদ নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে তিনি তার সক্রিয়তা কমিয়ে দেন, কিন্তু সবসময় সশস্ত্র উগ্রবাদে অংশ গ্রহণে আগ্রহী ছিলেন।

ইকরামুল ইসলামের সাংগঠনিক নাম মুত্তাকিন ওরফে আমীর হামজা ওরফে সালাউদ্দিন আইয়ুবী। তার বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগরের সুন্দরবন সংলগ্ন চকবারা এলাকায়। প্রায় ৩ বছর ধরে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। একটি মোবাইল কোম্পানির টাওয়ারে জেনারেটর পরিচালনা কাজে চাকরি করেন। আমীর হোসাইনের নামে এক জঙ্গি তাকে সংগঠনে ভেড়ায়। অনলাইনে তার সঙ্গে বিভিন্ন জঙ্গির পরিচয় হয়। আমীর হামজা জঙ্গি সংগঠনের বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা করে আসছিলেন।

আরেক জঙ্গি আমীর হোসাইনের সাংগঠনিক নাম সুলতান মাহমুদ ওরফে রাজা। তার বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর। স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে হাফেজি শেষ করে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। পরে অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে। আনসার আল-ইসলামের বিভিন্ন ভিডিও, বইপত্র, মোবাইল অ্যাপস সংগ্রহ করত এবং সংগঠন পরিচালনা ও ব্যয় বহনের জন্য প্রতিমাসে চাঁদা দিয়ে আসছিল। তিনি ছয়টি উগ্রবাদী ফেসবুক পেজের অ্যাডমিন।

আটক জঙ্গি শিপন মীরের সাংগঠনিক নাম আব্দুর রউফ। তিনি চালক হিসেবে কর্মরত। অ্যাপসের মাধ্যমে আনসার আল ইসলাম দল সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে এবং তাদের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে দলে যোগ দেন।

ওয়ালি উল্লাহর সাংগঠনিক নাম আব্দুর রহমান। সুত্রাপুরের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরা হাদিস পাস করে শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০১৬ সালে সুত্রাপুরে মাদ্রাসায় থাকাকালে আব্দুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে আনসার আল ইসলাম দল সম্পর্কে জানতে পারেন এবং তাদের হয়ে কাজ শুরু করেন। ৪ বছর তিনি সংগঠনের ঢাকা দক্ষিণ বিভাগের অন্যতম শীর্ষ নেতা হিসেবে আছেন।

এইচএম/একেএস

আরও পড়ুন