• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৩, ২০১৯, ০৯:২৫ পিএম

ব্যাংক খাতের আরো কর সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় নেবে এনবিআর

ব্যাংক খাতের আরো কর সুবিধা প্রদানের বিষয়টি বিবেচনায় নেবে এনবিআর

 

ব্যাংকের মন্দ ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ করা হয়। এই প্রভিশনকে খরচ হিসেবে বিবেচনায় নিলে কর কমে যায়। তবুও বিষয়টি বিবেচনায় নেবে এনবিআর বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

রোববার (৩ মার্চ) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় কর অঞ্চল-১ আয়োজিত ‘অংশীজন রাজস্ব সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

কর অঞ্চল-১ এর কমিশনার নাহার ফেরদৌসী বেগমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কাতার এয়ারওয়েজ বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার জয় প্রকাশ নায়ার।  এ সময় কর অঞ্চল-১ এর আওতাধীন ৯৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ৩৪টি এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীকে রাজস্ববান্ধব ও সৎ হতে হবে। নিজের নয়, দেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। প্রয়োজনে অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই বলে জানান তিনি। 

মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, করের আওতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে করহার কমিয়ে আওতা বাড়ানো যেতে পারে। অর্থমন্ত্রীও এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। এটা পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কাজ করছে। করদাতা বৃদ্ধির জন্য বাড়ি, ফ্ল্যাটসহ অন্যান্য খাতে জরিপ শুরু করেছে এনবিআর। 

কৌশলগত কারণে আগের করের বিষয়ে জিজ্ঞাসা না করে বর্তমান আয়ের ওপরই করদাতা বাড়ানো যেতে পারে। আমরা কর না দেওয়ার কারণ চিহ্নিত করতে চাই। আমাদের কর জিডিপির হার অন্যান্য দেশের তুলনায় কম। আর একটু বেশি হলে ভালো হতো। দেশে ১৬ কোটি মানুষ হলেও সরাসরি ১ কোটি মানুষও কর দেয় না। তবে উৎসে করসহ হিসেব করলে করদাতার সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যাবে। রিটার্ন দেয় ২০ লাখের কম। যা লজ্জার। এ সংখ্যা বাড়াতে হবে। কর জিডিপির হার না বাড়ালে উন্নয়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে। সেজন্য কর জিডিপি বাড়াতে হবে। কর আদায় না বাড়ালে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেবে। এ ঋণ নেওয়ার ফলে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ কমে যাবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, গণপরিবহন খাত অনেক বড় হয়েছে। এ খাত থেকে কর আদায় বৃদ্ধি করার সময় এসেছে। কিন্তু এ খাতে কর বৃদ্ধি করতে গেলে একটি গোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধভাবে তাতে ব্যাঘাত ঘটায়। যাত্রীদের ওপর ভাড়া বাড়িয়ে দেয়। তাই সময় এসেছে আলোচনার মাধ্যমে এ খাত থেকে কর আদায় বৃদ্ধি করার। 

অনেকেই সম্পত্তি কিনে রাখেন। একসময় এর দাম অনেক বেড়ে যায়। কিন্তু বৃদ্ধি করা দাম অনুযায়ী কর আদায় হয় না। এ সম্পত্তিকেও করের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। 

এনবিআর সদস্য কালিপদ হালদার বলেন, আমরা করদাতাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে যাই কিছু করি না কেন, করদাতাদের মধ্যে এখনো ভীতি রয়েছে। সে অলীক ভীতি দূর করতে আমরা কাজ করছি। এ বছর থেকে কর আহরণ পদ্ধতি আরো সহজ করা হবে। আধুনিক কর ব্যবস্থায় উৎসে কর ভূমিকা রাখছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ পদ্ধতিতে কর প্রদান করে বছর শেষে করদাতারা রিবেট পায়। আমাদের সীমাবদ্ধতার কারণে আমরা তা চালু করতে পারি না। তবে এ ক্যালেন্ডার বছর থেকে কয়েকটি উৎসে কর অঞ্চল গড়ে তোলা হবে।

রাজস্ব সংলাপে অংশ নিয়ে সেনালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বলেন, সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ২১৫টি ব্র্যাঞ্চ জিডিটাল করা হয়েছে। ডিজিটাল করার আগে এসব ব্র্যাঞ্চে প্রায় ৪৫০ কোটি টাকার উৎসে কর আদায় হতো। ব্র্যাঞ্চ ডিজিটাল ও হোম সার্ভিস চালু করার ফলে প্রায় ৬শ কোটি টাকার উৎসে কর আদায় হয়। কিন্তু কর অফিস নিয়ে তাদের মধ্যে জড়তা আছে। শুধু করসেবা জিডিটাল করলে হবে না, দোরগৌড়ায় পৌঁছে দিলে কর আদায় অনেক বেড়ে যাবে বলে জানান রাষ্ট্রয়াত্ব ব্যাংকের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

এআই/এসএমএম