• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১৯, ২০১৯, ০৮:১৩ এএম

নিষেধাজ্ঞার পরও লবণ আমদানি করতে চায় ৭ প্রতিষ্ঠান

নিষেধাজ্ঞার পরও লবণ আমদানি করতে চায় ৭ প্রতিষ্ঠান
লবন

 

লবণ আমদানি নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ১১ লাখ টন লবণ আমদানি করতে চায় ৭ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৫ টন লবণ দেশের সাধারণ মিল মালিকদের মধ্যে সমহারে আমদানির সুযোগ দেয়ার জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতি। বাকি ৬টি প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানাধীন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকারের অনুমতি ছাড়াও দেশে লবণ আমদানি হচ্ছে। শিল্প ও খাবার মিলিয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে লবণ আমদানি হয়েছে ৫ লাখ ৬৬ হাজার টন। পরের বছর তা বেড়ে ১০ লাখ ৯০ হাজার টনে উন্নীত হয়। যদিও এর মধ্যে আমদানির অনুমতি ছিল আড়াই লাখ টন লবণের। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৪ লাখ ৪০ হাজার টন লবণ আমদানি হয়েছে, যার মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার টন আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। অসাধু ব্যবসায়ীরা দেশে পরিশোধনের ব্যবস্থা ছাড়াই শিল্পকারখানার নামে লবণ এনে প্যাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করতে পারছেন। তাদের আয়োডিনও মেশাতে হচ্ছে না। আর শুল্কহার কম হওয়ায় এতে প্রচুর মুনাফা হচ্ছে। অতিরিক্ত মুনাফার লোভে এসব করছেন কিছু ব্যবসায়ী। এতে সরকার যেমন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন উৎপাদনকারীরা।

সূত্র আরো জানায়, আবেদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে গেটকো লিমিটেড ও শরিফ সল্ট ইন্ড্রাস্ট্রি যথাক্রমে ৫ লাখ টন এবং ২০ হাজার টন বোল্ডার লবণ আমদানির অনুমতি চেয়েছে। এছাড়া কবির আহম্মেদ সল্ট রিফাইনিং ইন্ড্রাস্ট্রি বাজারে খাবার লবণের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৫০ হাজার টন লবণ আমদানি করতে চায়। পাশাপাশি বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকা ৫৪ টন লবণ খালাসের জন্য অনুমতি চায় অ্যাপেক্স স্পিনিং মিলস। আর তাসনিম কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লিমিটেড ও সামুদা কেমিক্যাল কমপ্লেক্স লবণ আমদানির অনুমতি চাইলেও আবেদনে সুনির্দিষ্ট কোনো পরিমাণ উল্লেখ করেনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল কবির বলেন, আমরা কখনও লবণ আমদানির পক্ষে নই। যদি সেটা করা হয়, তবে তা প্রকৃত ব্যবসায়ীদের সমহারে আমদানির সুযোগ দেয়া উচিত। তা না হলে শিল্প খাতের ব্যবসায়ীরা কস্টিক সোডা প্রস্তুতের কথা বলে লবণ এনে সেটা বাজারে বিক্রি করছে। এতে সরকার বিপুল অঙ্কের রাজস্ব যেমন হারাচ্ছে, অন্যদিকে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ভোক্তারা পড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। 

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে করা ঐ আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়ে। শিল্প মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) এবং বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের  (বিটিসি) পাশাপাশি লবণ মিল মালিক ও ব্যবসায়ীদের মতামত যাচাই করছে। শিগগিরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে। 

দেশে খাওয়ার লবণ আমদানি নিষিদ্ধ হলেও শিল্প খাতের লবণ আমদানি নিষিদ্ধ নয়। ফলে শিল্প খাতে ব্যবহারের জন্য আমদানি দেখিয়ে সেসব লবণ ভোক্তার কাছে বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। কারণ এই দুই লবণের মধ্যে পুরোপুরি মিল রয়েছে। তবে শিল্পখাতের লবণে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার লবণের উপাদান না থাকায় তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। 

দেশের লবণ পরিশোধনকারী কোম্পানিগুলো বলছে, শিল্পের নামে খাওয়ার লবণ আমদানির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। দেশে লোকসানের কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে একেক পর এক মিল। লবণের দাম পাচ্ছেন না চাষীরা। এমন পরিস্থিতিতে এসব লবণ আমদানির অনুমতি দিলে তারা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এআই/ এফসি