• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২১, ২০১৮, ০৯:৪৯ পিএম

নির্বাচনে ঋণখেলাপি ঠেকাতে ত্রিমুখী ব্যবস্থা

নির্বাচনে ঋণখেলাপি ঠেকাতে ত্রিমুখী ব্যবস্থা

 

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণখেলাপিদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে ত্রিমুখী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।  এ ব্যাপারে সক্রিয় রয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও নির্বাচন কমিশন (ইসি)।  

জানা গেছে, ঋণখেলাপিদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার হিসেবে এরইমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দেশে কার্যরত সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তফসিলি ব্যাংককে মৌখিকভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।  একই বিষয়ে লিখিত নির্দেশনাও দেবে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক (ইডি) সিরাজুল ইসলাম জাগরণকে জানান, ঋণখেলাপিদের বিষয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেয়া হবে। ‌'চিঠিটি কবে দেওয়া হবে'- এমন প্রশ্নের জবাবে সিরাজুল ইসলাম জানান, শিগগিরই।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জাগরণকে জানান, নির্বাচনে ঋণ খেলাপিদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।  এতে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো ঋণ খেলাপির অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও তফসিলি ব্যাংকগুলোর সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অন্য যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে এবার ব্যবসায়ীদের অধিক আগ্রহ চোখে পড়ছে।  সেজন্য ঋণখেলাপির ‌‌'তকমা' ঘোচাতে এরইমধ্যে অনেকেই সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থও হয়েছেন।

সূত্র জানায়, ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে অংশ নেয়া ঠেকাতে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখা ব্যবস্থাপকরা (ম্যানেজার) নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা নেবেন।  তারা যাচাই করবেন, সংশ্লিষ্ট এলাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তি ঋণ খেলাপি কি না। একইসঙ্গে তিনি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো শাখায়ও দায়বদ্ধ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নিজ উদ্যোগে যাচাই করতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বা ঋণগ্রহীতার ব্যাপারে তথ্য জানাতে হবে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর শাখা ব্যবস্থাপকদের নিজ উদ্যোগে দেশজুড়ে নির্বাচনে অংশ নিতে যাওয়াদের তথ্য যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়ক ভূমিকা পালন করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরোতে (সিআইবি) সব সময় ঋণগ্রহীতাদের তথ্য হালনাগাদ থাকে।  ফলে যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিতে যাবার আগে এর তথ্য যাচাই করতে পারে। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপি অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ গ্রহণ করতে পারেন না।  এ অবস্থায় যেকোনো ব্যক্তির খেলাপি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা নিতে পারবে।

জানা গেছে, নির্বাচনকে ঘিরে ইতোমধ্যে সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের তথ্য বিশেষভাবে চেয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।  

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থী বাছাইয়ের শেষদিন পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ঋণখেলাপি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তার অবহেলা প্রমাণিত হলে তাকে যথাযথ শাস্তি দেয়ারও হুঁশিয়ারি রয়েছে।  যা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবারও মনে করিয়ে দেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

সূত্রমতে, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঋণ খেলাপিদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে এরইমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। ওই চিঠির সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্র জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচন উপলক্ষে দিতে যাওয়া নির্দেশনার ড্রাফট এরইমধ্যে তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।  সংযোজন-বিয়োজন ও পরিমার্জন এনে ওই নির্দেশনা সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেয়া হবে।

কেএ/এফসি