• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ০৮:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৯, ২০১৯, ০৮:০২ পিএম

৬ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন ২৭.৫১ শতাংশ

কমেছে প্রবাস আয়, বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি

কমেছে প্রবাস আয়, বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাজেটের ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে, যা মোট বাজেটের ২৭ দশমিক ৫১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলিয়ে ঘোষিত বাজেটের মোট আকার ছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। সামগ্রিকভাবে অর্থবছরের প্রথমার্ধে বাজেট বাস্তবায়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। তবে প্রবাস আয়ে প্রবৃদ্ধি ৪.৬৫ শতাংশ কমেছে এবং সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.০১ শতাংশ বেড়েছে।

সোমবার (২৯ এপ্রিল ) সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের বাজেট বাস্তবায়ন চিত্র তুলে ধরেন। বাজেট ২০১৮-১৯: দ্বিতীয় প্রান্তিক (জুলাই-ডিসেম্বর) পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি ও আয়-ব্যয়ের গতিধারা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষণসংক্রান্ত প্রতিবেদন সংসদে উত্থাপন করেন তিনি। এতে তিনি বলেন, অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে পরিচালন ব্যয়সহ অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। আর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা।

অর্থমন্ত্রী বাজেট বিশ্লেষণে বলেন, বর্তমান সরকার একটানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম অর্থবছর আমরা ব্যাপক প্রত্যাশা ও বিপুল সম্ভাবনা নিয়ে শুরু করেছি। বছরের প্রথমার্ধে অগ্রগতিতে দেখা যাচ্ছে, আমাদের গতিপথ সঠিক ধারায় রয়েছে। বিবেচ্য দ্বিতীয় প্রান্তিকে সামগ্রিকভাবে সামষ্টিক অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য চলকসমূহের ইতিবাচক অবস্থা, বিশেষ করে জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু জাতীয় আয় বৃদ্ধি, রফতানি আয়, বৈদেশিক বিনিয়োগ, বেসরকারি ঋণ প্রবাহের ঊর্ধ্বগতি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের স্থিতিশীল অবস্থা এবং মূল্যস্ফীতির নিম্নগতি নির্দেশ করে যে, উন্নয়নের মহাসড়কের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রযাত্রা সুদৃঢ় হয়েছে। 

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আমাদের অর্থনীতির এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। সামনের দিনগুলোয় আমাদের অন্যতম কৌশল হবে অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানবসম্পদ খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, দারিদ্র্য হ্রাস, বহুমুখীকরণের মাধ্যমে গুণগত ও মানসম্পন্ন রপ্তানি পণ্য উৎপাদন, বিদ্যমান বাজার সম্প্রসারণ ও নতুন বাজার অন্বেষণ।
 
প্রতিবেদনে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি, আমদানি-রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, প্রবাস আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মুদ্রা বিনিময় হারসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক চলকসমূহের সার্বিক অবস্থা সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে। বিবিএসের সাময়িক হিসাব মতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জিজিপির প্রবৃদ্ধি হবে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা এ যাবৎকালের রেকর্ড। জিডিপির এই প্রবৃদ্ধি এশিয়ার দেশসমূহের মধ্যে সর্বোচ্চ। 

উল্লেখ্য, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের বেশি হতে যাচ্ছে, যা পূর্বের ৩ অর্থবছরে ৭ শতাংশের অধিক ছিল। এছাড়া মাথাপিছু জাতীয় আয় হবে ১ হাজার ৯০৯ মার্কিন ডলার।

বাজেট বিশ্লেষণে বলা হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের সময়ের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে এনবিআর কর রাজস্ব আয় ৯ দশমিক ৪ শতাংশ  বেড়েছে।  মোট সরকারি ব্যয় ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানি আয় চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে ২০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিক শেষে রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ, বিগত অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধি ছিল ২৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এছাড়া আমদানি ঋণপত্র খোলার হার হ্রাস পেয়েছে ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের ৫ দশমিক ৭ শতাংশ হতে কমে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের সময়ে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।

তবে প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান হ্রাস পাওয়ায় খাদ্য বহির্ভূত মূল্যস্ফীতি গড়ে বিগত বছরের একই সময়ের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরে প্রথমার্ধে ছিল ৩.৫০ শতাংশ, যা চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে বুদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪.৫১ শতাংশ। এছাড়া প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবাস আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮.০৬ শতাংশ। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ১২.৪১ শতাংশ।

এইচএস/ এফসি