• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০১৯, ১০:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৫, ২০১৯, ১০:০০ পিএম

৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকা

৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকা

দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআরের) চলতি অর্থবছরের অর্থাৎ জুলাই থেকে থেকে মার্চ পর্যন্ত গত ৯ মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৩ হাজার ৮৪৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ৯ মাসের ব্যবধানে রাজস্ব ঘাটতি ৫০ হাজার ৪২৪ কোটি টাকা। 

এনবিআর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকারের জাতীয় বাজেটের প্রায় পুরো অর্থের যোগান দিয়ে থাকে রাজস্ব বোর্ড। কিন্তু গত কয়েক বছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বিশাল লক্ষ্যমাত্রা আদায়ে বিপর্যয় নেমে এসেছে। এনবিআরের তিনটি উইং আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক- তিনটি খাতেই নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। 

জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত শুল্ক বা কাস্টমসে এনবিআরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২ হাজার ৮২ কোটি টাকা। এই সময়ে শুল্ক আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ৯ মাসে শুল্ক খাতে ঘাটতি ১৫ হাজার ১৫২ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়লেও রাজস্ব আদায় ওইহারে বাড়েনি। ফলে বাড়ছে রাজস্ব ঘাটতির পরিমাণ। এছাড়া কর রেয়াতের বিষয়ে আরও বেশি বাছ-বিচার করা উচিত। যেসব ক্ষেত্রে কর অব্যহতি দেয়া হচ্ছে তাদের এই অব্যহতি ভালোভাবে খতিয়ে দেখা উচিত। দিন দিন অর্থনীতির আকারের মতো সরকারের আকারও বাড়ছে। যার কারণে তাদের রাজস্ব আয়ও বাড়ানো উচিত। সব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সরকারের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা উচিত বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন দৈনিক জাগরণকে বলেন, সরকারের এই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা প্রায় অসম্ভব। তাই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা সরকারকে কাটছাট করতে হবে। তবে এই মুহূর্তে কাটছাট করার সম্ভাবনাও খুব কম। এই রাজস্ব ঘাটতি পূরণে সরকার সরকার ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিতে পারে অথবা ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করে এই ঘাটতি মেটাতে পারে।  

সূত্র আরও জানায়, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) খাতে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৬০ হাজার কোটি ১১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ আলোচ্য সময়ে মূসক বা ভ্যাটে এনবিআরের রাজস্ব ঘাটতি ১৮ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা।

ইনকাম ট্যাক্স বা আয়কর খাতে ৯ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা। এক্ষেত্রেও ৯ মাসে আয়কর ঘাটতি ১৬ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। 

রাজস্ব ঘাটতি বিষয়ে জানতে চাইলে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু আহমেদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, সরকারের আকার অনেক বেড়ে গেছে। তাই বিশাল লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হচ্ছে। সরকারের উচিত যেসব খাতে অপ্রয়োজনীয় জনবল রয়েছে তা ছেটে ফেলা। আর এতে সরকারের ব্যয় কমবে। আর এই লক্ষ্যমাত্রা হয়ত সরকার ঋণ নিয়ে পূরণ করবে। কিন্তু সরকারের উচিত যেসব প্রতিষ্ঠানকে কর অব্যহতি দেয়া হচ্ছে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজ নেয়া। কর ব্যবস্থাকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা। যারা কর ফাঁকি দিচ্ছেন তাদের চিহ্নিত করা এবং আদায় করা। এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে বছর শেষে ঘাটতিও কমবে বলে মন্তব্য করেন এই অর্থনীতিবিদ। 

এআই/এসএমএম