• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২, ২০১৯, ০৬:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২, ২০১৯, ০৬:৫০ পিএম

বিদ্যুৎ বিভাগে ১ বছরেই অডিট আপত্তি ১২৪ কোটি টাকা

বিদ্যুৎ বিভাগে ১ বছরেই অডিট আপত্তি ১২৪ কোটি টাকা

বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগে এক বছরে ১২৪ কোটি ৫৮ লাখ ৬৬ হাজার ২৪৪ টাকার অডিট আপত্তি পেয়েছে সংসদীয় কমিটি। বিগত ২০১২-১৩ অর্থ বছরের এই বিভাগে এ অডিট আপত্তি পাওয়া গেছে। সংসদীয় কমিটির সদস্যরা বলছেন- এই ভয়াবহ অনিয়ম বন্ধ করা না গেলে, এর প্রভাব গ্রাহকদের মধ্যে পড়বে। এজন্য অডিট আপত্তিগুলো দ্রুপ নিষ্পত্তির সুপারিশ করেছে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

বৃহস্পতিবার (০২ মে) সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে অনুষ্ঠিত কমিটির তৃতীয় বৈঠকে এই অডিট আপত্তি নিয়ে আলোচনা হয়। 

কমিটির সভাপতি মো.রুস্তম আলী ফরাজীর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ, মো. আব্দুস শহীদ, মো. আফছারুল আমীন, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, র,আ,ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জহিরুল হক ভূঁঞা মোহন, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু) এবং ওয়াসিকা আয়েশা খান অংশ নেন।

বৈঠকে মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট ২০১২-১৩ এর অডিট আপত্তির অনুচ্ছেদ ১,২,৩,৪,৫,৬ ও ৭ নিয়ে আলোচনা হয়। আপত্তিগুলো  অধিক ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে আদায় করে কমিটির কাছে প্রমাণ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা যায়, দীর্ঘদিন বিল পরিশোধ না করা সত্ত্বেও ৪২০ জন গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে অনিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ দেয়ায় সংস্থার মোট ১২ কোটি ৮৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬শত ৮৪ টাকার অডিট আপত্তি পাওয়া গেছে।

ঠিকাদারের পরিশোধিত বিল হতে নির্ধারিত হারের চেয়ে কম হারে ভ্যাট কর্তন করায় সরকারের ২৩ কোটি ৮৮ লাখ ৪১ হাজার দুই’ শ ৫২ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। 
এছাড়া যোগসাজশের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ দেয়ায় সরকারের এক কোটি ১৭ লাখ ৪৮ হাজার  দুই’শ ৮৮ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।নিখোঁজ গ্রাহকদের নিকট হতে পাওনা বিদ্যুৎ বিল আদায় না করায় আর্থিক ক্ষতি চার কোটি ৯৪ লাখ ৫৯ হাজার ৩ শত ৫৩ টাকা মর্মে উত্থাপিত অডিট আপত্তির প্রেক্ষিতে কমিটি আপত্তিটিকে গুরুতর অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করে অনধিক ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে অনাদায়ী টাকা আদায়, যে সকল কর্মকর্তা এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পরবর্তী বৈঠকে নিখোঁজ গ্রাহকের সংখ্যা বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করে। 

এছাড়া বিধিবহির্ভুতভাবে এক প্রকল্পের অর্থ অন্য প্রকল্পে এবং ন্যাশনাল এ্যাইডস (এসটিডি) হিসাব হতে সিডি ভ্যাট খাতে অর্থ স্থানান্তর করায় আট কোটি ২০ লাখ টাকা এবং ভাউচারে প্রদর্শিত অতিরিক্ত অর্থ চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে উত্তোলনপূর্রক আত্মসাৎ করায় ৬৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৬ হাজার ৭ শত ৬৮ টাকা ক্ষতি মর্মে উত্থাপিত অডিট আপত্তি পেযেছে সংসদীয় কমিটি। 
আর অনুমোদিত লোড এর অতিরিক্ত লোড ব্যবহার করা সত্ত্বেও ট্যারিফ বিধি মোতাবেক বিল প্রস্তুত ও আদায় না করায় ভ্যাটসহ নয় কোটি ৭৪ লাখ ৯১ হাজার ৮ শত ৯৯ ক্ষতি মর্মে উত্থাপিত অডিট আপত্তি পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমিটির সভাপতি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী বৈঠক শেষে দৈনিক জাগরণকে বলেন,এই ভয়াবহ অনিয়ম বন্ধ করা না গেলে এর প্রভাব গ্রাহকদের মধ্যে পড়বে। বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। তাছাড়া আসল গ্রাহকরা বিদ্যুৎ পাবেন না। এজন্য এইসব অডিট আপত্তি দ্রুত নিষ্পত্তি করে সংসদীয় কমিটিতে প্রমাণ দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এজন্য সর্বোচ্চ ৩০ কার্যদিবস সময় দেয়া হয়েছে।

বৈঠকে বিদ্যুৎ,জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অডিট অফিসের এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এইচএস/বিএস