• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১২, ২০১৯, ০২:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০১৯, ০২:০৮ পিএম

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি

নিহত ৭০ জনের মধ্যে ৩৭ জনই বাংলাদেশি

নিহত ৭০ জনের মধ্যে ৩৭ জনই বাংলাদেশি
যে ১৬ জনকে শনিবার সকালে সাগর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তাদের একজন আহমেদ বিলাল, বাড়ি বাংলাদেশের সিলেটে - ছবি: বিবিসি

অবৈধ পথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে একটি অভিবাসী দলের অন্তত প্রায় ৬০ জন সদস্যের মর্মান্তিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ তথ্য মতে জানা গেছে, নিহতদের মাঝে ৩৭ জনই বাংলাদেশি। নৌকাটিতে ৮৫ জন অভিবাসী ছিল বলেও জানা যায়। 

রোববার (১২ মে) তিউনিসিয়া সরকার এবং উদ্ধার কাজে নিয়োজিত দেশটির রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যদের দেয়া তথ্যের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়,  শুক্রবারের এই দুর্ঘটনায় এখনো ৬ জন বাংলাদেশির খোঁজ মিলছে না। এর মধ্যে সিলেটের ৪ জন ও মৌলভীবাজারের ২ জন রয়েছেন।

এদিকে নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে চারজনের বাড়ি সিলেট বলে জানা গিয়েছে। এখন পর্যন্ত নিহত ৩ জনের পরিচয় জানা গেছে। নিহতরা হলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার কটালপুর এলাকার মুয়িদপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), একই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ (২৪) এবং সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন (২৪)। এ ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের দিনপুর গ্রামের আরেকজন নিহত হয়েছে। তার পরিচয় জানা যায় নি।

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবি থেকে কোন মতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া বাংলাদেশিদের কয়েকজন - ছবি: বিবিসি

অপরদিকে নিখোঁজ হওয়া ৬ বাংলাদেশি হলেন- সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের আব্দুল আজিজ, আহম্মেদ হোসেন, লিটন শিকদার ও আফজাল মাহমুদ। বাকি দুজন মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাফিজ আহসান হাবিব ও কামরান আহমেদ।

লিবিয়ার বাংলাদেশ মিশনের বরাতে জানা গেছে, ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে বাংলাদেশি মারা যাওয়ার ঘটনাটি তারা জানেন। তবে ওই ঘটনায় কতজন বাংলাদেশি ছিল এবং কতজন বাংলাদেশি মারা গেছেন এই বিষয়ে তাদের কাছে নিশ্চিত তথ্য নেই।

প্রকৃত ঘটনা জানতে এবং বাংলাদেশিদের উদ্ধার করতে মিশনের পক্ষ থেকে তিউনিসিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ চলছে এবং সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে লিবিয়াতে যুদ্ধ চলায় তিউনিশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে বলে মিশন থেকে জানানো হয়।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসী বিষয়ক সংগঠনের দেয়া তথ্য মতে, ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবে যাওয়ার ওই ঘটনায় শনিবার তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। যার মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি রয়েছে। বাকিদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রাজধানী তিউনিস থেকে ৭৪ কিলোমিটার দক্ষিণের সাফাক্স শহরের উপকূলে শরণার্থীদের নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। এসব অভিবাসী সাব-সাহারা আফ্রিকা থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিউনিসিয়া রেড ক্রিসেন্টের বরাত দিয়ে সংবাদ সংস্থাগুলো বলছে, বৃহস্পতিবার ভূমধ্যসাগরে এক নৌকা ডুবিতে নিহত প্রায় ৬০ জন অভিবাসীর অধিকাংশই ছিল বাংলাদেশী নাগরিক।
বেঁচে যাওয়া লোকজন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইটালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়।

তিউনিশিয়া উপকূলের কাছে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত অন্তত ৭০ জনের অধিকাংশই বাংলাদেশি শরণার্থী। জীবিত উদ্ধার ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশের নাগরিক। নিহতদের মধ্যে ৫ জনের বাড়ি সিলেটে বলে দাবি করেছেন তাদের স্বজনরা। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার দেয়া তথ্যে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

এসকে