• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২১, ০৭:০৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ১৯, ২০২১, ০৮:৩১ পিএম

দুটি কবিতা

দুটি কবিতা

প্রাক্তন

ডায়েরিতে রাখা গোলাপের পাপড়িগুলো শুকিয়ে গ্যাছে। পরক্ষণে প্রাক্তনের বেদানার্ত হৃদয়ের বিলাপ মাখা চিঠি চোখে পড়তেই বিষণ্ন হয়ে যায় মন। অথচ গতজন্মে আমার এক সমুদ্র ভরা আক্ষেপ ছিল একটি চিঠি উপহার পাওয়ার। সাদা পায়রার সাথে ডানা মেলবার। এই জন্মে সাদা পায়রার দল ঠোঁটে করে চিঠি নিয়ে এলেও তুমি আর এলে না কার্তিকের সকল শীত উপেক্ষা করে! কেবলই স্মৃতি হয়ে গেলে!

হারিয়ে যাওয়া মানেই কি হৃদয়ে স্থায়ী হয়ে যাওয়া মিহির?

মৃত্যুগাছ ও প্রার্থনা

ঝুলন্ত সাঁকোয় ঝুলছে কান্তার তাজা প্রাণ
যেকোনো সময় পাটখড়ির মতো 
ভেঙে যেতে পারে তার জীবনের সাঁকো। 
জীবন তাকে দু’হাত ভরে দিয়েছে বিষের পেয়ালা
শরীরে গজিয়েছে এক মৃত্যুগাছ।
খুব ছোট। কিন্তু ভীষণ তেজি।
বারবার শেকড় নিয়ে সাপের মতো ফণা তোলে!
বুকে সাতশো ক্ষত খুব যত্ন করে ঢেকে রাখে।
তারপর ভোরের রোদ্দুরের মতো হাসি দিয়ে—
কান্তা বলে,  “আমি ভালো আছি রিক্তা, টেনশন করো না।” 
আমি নিরীহ পাথরের মতো চোখ নিয়ে তার দিকে তাকাই; 
তারপর মুচকি হাসি। 
অগোচরে বিষাদগ্রস্ত আকাশে দুঃখের পাখা ছড়াই
খানিক পরে দুঃখগুলো লুকিয়ে আমরা—
দূর বহু দূরে ভ্রমণের স্বপ্ন দেখি।
মায়াবতী নদীর ধারে বিশুদ্ধ বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নেওয়ার, 
প্রাণ শীতল করা ঝরনার জলে ভিজবার স্বপ্ন দেখি।
কান্তা, সাদা পালকের মতো গাউন পরে— 
আমাদের সমুদ্রস্নান হোক।
ফাল্গুনি সাজে আমাদের ধানমন্ডি লেক, টিএসসি, 
শাহবাগ, বইমেলা ঘুরাঘুরি হোক।
তাজমহল রোডের চায়ের আড্ডায় কিংবা 
গোপাল মামার চায়ের দোকানে আমাদের 
বারবার দেখা হোক।
আরো হাজারবার দেখা হোক হাউজিংয়ের রেস্তোরাঁয়, 
পুরির হোটেলে।
দেখা হোক লক্ষ-কোটিবার।
এক পৃথিবী সমান সুস্থতা নিয়ে সুখের গোলাপেরা ফিরে আসুক।
তোমার জন্য একটি গোলাপ, হাজারো চড়ুই, 
ভোরের শিশিরেরা সিজদায় রত।
সিজদায় রত গাছের পাতারা। দূরের মায়াবী মেঘেরা।

হে মৃত্যুগাছ,
তুমি অদৃশ্য হয়ে যাও
এক জীবন ভিক্ষে দাও
সুস্থতার শিমুল তুলো উড়িয়ে দিয়ে তুমি চলে যাও।