• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৫, ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৫, ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত হত্যা

সোনাগাজীর ওসি মোয়াজ্জেমের মামলা তদন্ত করবে পিবিআই

সোনাগাজীর ওসি মোয়াজ্জেমের মামলা তদন্ত করবে পিবিআই
সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন- ছবি : সংগৃহীত

ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 

সোমবার (১৫ এপ্রিল) এই সিদ্ধান্ত দেয় আদালত। 

বাংলাদেশ সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন মামলাটি দায়ের করেন। আদালতে  আইনজীবী  বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে আলোচিত ঘটনার মধ্যে অন্যতম। নুসরাতকে আগুন দিয়ে হত্যা করা হয়। যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাত অভিযোগ করলে আসামিসহ তাকে থানায় নেওয়া হয়। ওই সময় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন তাকে জেরা করেন। ওই জেরার ভিডিও ওসি মুঠোফোনে ধারণ করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পরের দিন গত ১১ এপ্রিল বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন তিনি।

সুমন বলেন, বাংলাদেশ এমন ঘটনা আর একটিও ঘটেনি। ওসি সাহেব তার রুমে এমন ঘটনা ঘটান।  সারা বাংলাদেশ জানে এর চাইতে আর বড় ধরনের উদাহরণ হতে পারে না। থানার ভেতরে এমন ভিডিও ধারণ করা ও সম্প্রচার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ। এই ঘটনার পরে ভিকটিম বেঁচে গেলেও তার বেঁচে থাকাটা কঠিন হয়ে যেত।

গত ১১ এপ্রিল ইউটিউবে এ ভিডিও দেখতে পাই, ‘‘অশ্লীল কিছু তথ্য ধারণ করে ইউটিউব/সোস্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করা হয়েছে।  এর ফলে ভিকটিমের সম্মানহানি হয়েছে।’’

এদিকে মামলায় অভিযোগ করা হয়, ‘‘ফেনীর সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়নের পর কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার পূর্বে গত ২৭ মার্চ ওই ছাত্রীকে অধ্যক্ষের কক্ষে নিয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলে অধ্যক্ষ এবং ছাত্রীকে থানায় নিয়ে যান তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। ওই সময় ওসি নিয়ম-বহির্ভূতভাবে জেরা করতে করতেই অনুমতি ব্যতিরেকে রাফির বক্তব্য ভিডিও করেন। পরবর্তীকালে ওই ভিডিও ডিজিটাল যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ওসি অত্যন্ত অপমানজনক এবং আপত্তিকর ভাষায় নুসরাতকে একের পর এক প্রশ্ন করে যাচ্ছেন। এমনকি ভিডিওর এক পর্যায়ে দেখা যায়, ওসি রাফিকে বুকে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেছিল কি না জিজ্ঞেস করেন, যা অত্যন্ত মানহানিকর।’’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘রাফিকে গত ৬ এপ্রিল অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ও মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মুখোশ পরা ৪/৫ জন ছাত্রী চাপ প্রয়োগ করলে সে অস্বীকৃতি জানালে তার গায়ে আগুন দিয়ে মুখোশ পড়া ছাত্রীরা পালিয়ে যায়। টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯ টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যায়।

ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নিয়ম-বহির্ভূতভাবে অনুমতি ব্যতিরেকে নুসরাত জাহান রাফির ভিডিও ধারণ করে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশ ও প্রচার করে এবং অপমানজনক ও আপত্তিকর ভাষা প্রয়োগ করে মানহানি করেছেন, যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ। বাদী আসামির বিরুদ্ধে মামলাটি আমলে গ্রহণ করে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।

এমএ/এসএমএম