• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৩০, ২০১৯, ০৫:৫২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৩০, ২০১৯, ০৫:৫৩ পিএম

‘নাগরিকের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ মানবাধিকার কমিশন’

‘নাগরিকের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ মানবাধিকার কমিশন’
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) আয়োজিত ‘কেমন মানবাধিকার কমিশন দেখতে চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় অতিথিরা- ছবি : জাগরণ

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ নাগরিক সমাজের দীর্ঘ আন্দোলনের ফসল হলেও কমিশনের কার্যাবলি সর্বস্তরের জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করেতে পারেনি। ফলে এক ধরনের আস্থাহীনতা ও হতাশা তৈরি হয়েছে। এ হতাশা কাটিয়ে কমিশনের ওপর জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন করতে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক বাছাই প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট ও যোগ্য ব্যক্তিবর্গকে চেয়ারপারসন ও সদস্য পদে নিয়োগ দেয়া অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া কমিশনের চেয়ারপারসন ও সদস্যদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত না হয়, তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। প্রয়োজন বাছাই প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা এবং নাগরিক সমাজের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) আয়োজিত ‘কেমন মানবাধিকার কমিশন দেখতে চাই’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবিগুলো উঠে এসেছে।

নাগরিক সমাজ কেমন কমিশন দেখতে চায় এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডসমূহ কি বলছে- তা নিয়ে মতবিনিময় করতে আসক এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে। এ আলোচনা সভায় বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, উন্নয়ন সংগঠন, উন্নয়ন সহযোগী, দূতাবাসের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, লিগ্যাল এইড ও সার্ভিসেস ট্রাস্টের প্রধান আইন উপদেষ্টা ও সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম, অ্যাডভোকেট সালমা আলি, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত, ডেনমার্ক দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সসহ আরো অনেকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন।

তারা কমিশনের চেয়ারপারসন ও সদস্যদের বাছাই প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯, প্যারিস নীতিমালা এবং জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানসমূহের বৈশ্বিক জোট কর্তৃক প্রদত্ত সুপারিশসমূহ অনুসরণ করার জোর দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, গত তিনবার নিয়োগের ক্ষেত্রে কিভাবে বাছাই প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়েছে সে সম্পর্কে নাগরিক সমাজের কাছে কোনও তথ্য ছিল না। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও বাছাই প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে তাদের কোনোভাবে সর্ম্পৃক্ত করা হয়নি।

আলোচনায় আরও উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানসমূহের বৈশ্বিক জোট কর্তৃক ‘এ’ মর্যাদা পেতে হলে বাছাই প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সরকারি দলের প্রতিনিধিদের প্রাধান্য হ্রাস করতে এবং নাগরিক সমাজের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। কমিশন বর্তমানে ‘বি’ মর্যাদায় রয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশকে ‘বি’ মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বাছাই প্রক্রিয়ার দুর্বলতা। এছাড়া ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯’ দ্রততার সাথে সংশোধন করে এর সীমাবদ্ধতাগুলো দূর করার দাবি জানানো হয়। দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারকে সুপারিশ প্রদান, জবাবদিহিতা, সর্বোপরি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ গঠন করা হয়। আসকসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন দীর্ঘদিন এমন একটি জাতীয় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করার জন্য অ্যাডভোকেসি কার্যক্রম চালিয়েছে এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে শক্তিশালী করার জন্য স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নানা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বর্তমান কমিশনের চেয়ারপারসন ও সদস্যদের মেয়াদ শিগগিরই শেষ হতে যাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, নতুন চেয়ারপারসন ও সদস্য বাছাই প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। জাতীয় মানবাধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী একটি বাছাই কমিটি এ প্রক্রিয়া পরিচালনা করবে।

আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন আসকের নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা।

টিএস/এসএমএম