নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদকে বদলি করা হয়েছে। তাকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার পুলিশ অধিদফতরের টিআর পদে সংযুক্ত করা হয়েছে।
রোববার (০৩ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ বদলি করা হয়
দেশের অন্যতম ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এম এ হাশেমের ছেলে ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও গুলশান ক্লাবের সভাপতি শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ও পুত্রকে তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠার পর রোববার (৩ নভেম্বর) প্রত্যাহারের এই আদেশ আসলো।
তবে সরকারি আদেশে প্রত্যাহারের কারণ উল্লেখ করা নেই।
গত বছরের ২ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের এসপি হিসেবে বদলি হয়ে আসেন হারুন অর রশিদ। এরপরই একের পর এক অভিযান চালিয়ে আলোচনায় আসেন তিনি। রাসেলের ঘটনা নিয়ে এসপি হারুনের দাবি- শুক্রবার (০১ নভেম্বর) ভোররাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় চৌরঙ্গী ফিলিং স্টেশনের সামনে শওকত আজিজ রাসেলের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৩-৮৩৭৫) থেকে ২৮ রাউন্ড গুলি, ১২শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৪ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিদেশি মদ, ২৮ ক্যান বিয়ার, নগদ ২২ হাজার ৩৮০ টাকা পাওয়া যায়। এসময় গাড়িতে থাকা শওকত আজিজ রাসেলের স্ত্রী ফারাহ রাসেল, ছেলে আনাব আজিজ ও গাড়িচালক সুমনকে আটক করা হয়।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাতে সংবাদ সম্মেলন করে এসপি হারুন এসব তথ্য উপস্থাপন করেন। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে শওকত আজিজ রাসেল ও তার গাড়িচালক সুমনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেছে ডিবি পুলিশ।
এদিকে, রাসেলদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আম্বর গ্রুপের মালিকানাধীন নিউজ বাংলাদেশে ওই ঘটনার একটি ভিডিও আপলোড হয়। যেখানে দেখানো হয়, ১ নভেম্বর রাতে রাজধানীর বাসা থেকে রাসেলের স্ত্রী ও ছেলেকে নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশের একটি টিম তুলে নিয়ে আসে। এটা প্রকাশের পরই ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
শনিবার (২ নভেম্বর) সকালে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ছুটে যান পারটেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ হাশেম ও স্ত্রী সুলতানা হাশেম। ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে শওকত আজিজ রাসেলের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশকে সহায়তার আশ্বাস ও মুচলেকা দিয়ে ফারাহ রাসেল ও আনাব আজিজকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান এম এ হাশেম।
সংবাদ সম্মেলনে হারুন জানিয়েছিলেন, গাড়ি থেকে উদ্ধারকৃত পিস্তলের গুলি ও মাদক শওকত আজিজ রাসেলের বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত করেছেন গাড়িচালক সুমন। প্রধান আসামি শওকত আজিজ রাসেল পলাতক রয়েছেন। তাকে ধরার জন্য তার বাসা, গুলশান ক্লাব ও ঢাকার একটি ক্লাবে অভিযান চালানো হয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে গত বছরের ২ ডিসেম্বর তাকে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) পদে বদলি করা হয়। তার আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি গাজীপুরের পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
টিএস/আরএম/বিএস