নদী দখলকারীরা নির্বাচন করতে পারবেন না, ব্যাংক লোন পাবেন না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে সব নদী দখলদারদের নাম প্রকাশ করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এক রায়ে এসব নির্দেশ ও সিদ্ধান্ত দেয়। রায়ে দেশের সব নদ-নদী-খাল-জলাশয় ও সমুদ্র সৈকতের সুরক্ষা এবং তার বহুমুখী উন্নয়নে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন বাধ্য থাকবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আদালত নদী দখলকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কঠিন সাজা ও জরিমানা নির্ধারণ করে অভিযোগ দায়ের, তদন্তের ব্যবস্থা রেখে ২০১৩ সালের নদী রক্ষা আইন সংশোধন করার নির্দেশ দেয়। ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে।
আদেশে নদী রক্ষা কমিশন আইনের যেসব সংশোধন প্রস্তাব করেছে, তা অনতিবিলম্বে বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। কমিশনকে একটি স্বাধীন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নির্দেশনায় আদালত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই মাসে একদিন এক ঘণ্টা করে নদী দূষণের ওপর সচেতনতামূলক ক্লাসের ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া দেশের বড়, মাঝারি ও ছোট শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের অংশগ্রহণে দুই মাস অন্তর একদিন এক ঘণ্টা করে নদী বিষয়ে বৈঠক অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগীয় পর্যায়ে ৩ মাস অন্তর এক দিনব্যাপী নদী বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি চলমান তদারকিতে থাকবে বলে রায়ে বলে আদালত। রায়ের অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাতেও বলা হয়েছে, যাতে তিনি নদ-নদীর বিষয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে পারেন।
মামলায় পক্ষভুক্ত হওয়া তুরাগ তীরে থাকা ১৪ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের স্থাপনা ৩০ দিনের মধ্যে নিজ খরচে সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায়, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন ওই সব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের খরচায় উচ্ছেদের ব্যবস্থা করবে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পূরবী রানী শর্মা ও পূরবী সাহা।
ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এ ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ‘টাইম টু ডিক্লেয়ার টুরাগ ডেড’ শিরোনামে একটি সচিত্র প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটি যুক্ত করে তুরাগ রক্ষায় সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে পর দিন রিট করে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
মা আ/এফসি