বিএনপির পুরনো চেহারা আবারও ভেসে উঠেছে : নানক 

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৫, ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম বিএনপির পুরনো চেহারা আবারও ভেসে উঠেছে : নানক 
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক -ছবি : আল হেলাল শুভ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আজকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনকে কেন্দ্র করে সুপ্রিমকোর্টে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা হট্টগোল সৃষ্টি করেছেন। তা নজিরবিহীন। এতে প্রমাণিত হয় বিএনপির পুরনো চেহারা আবার ভেসে উঠেছে। যেমনভাবে এর আগে তারা আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও অগ্নিসংযোগ করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

নীলফামারী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

নানক বলেন, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। এই মামলা আওয়ামী লীগ সরকার করেনি, এই মামলা করেছে খালেদা জিয়ার পছন্দের ব্যক্তি ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দিনরা। আদালত তাকে সাজা দিয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে তিনি এখন জেলে আছেন। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা বিচারপতিদের চাপ সৃষ্টি করে খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্ত করতে চান। কিন্তু জোর করে আদালত থেকে রায় নেয়া যাবে না।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন।

সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য রাবেয়া আলীম, আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সেলের সহ-সম্পাদক নাইমুজ্জামান মুক্তা।

এর আগে বেলা পৌনে ১২ টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়।

নীলফামারী সদর সহ ৬ টি উপজেলা ও পৌরসভার কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি ও দলীয় নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগে যারা অনুপ্রবেশ করেছেন দল থেকে তাদের বের করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, দুঃসময়ে কর্মী আর সুসময়ে আত্মীয়-স্বজন, এটা চলবে না। ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে কমিটি করা চলবে না। এতদিনে যারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনের হাত ধরে দলে অনুপ্রবেশ করেছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের ঝেটিয়ে বের করে দিতে হবে।

নানক বলেন, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সভা ছিল। দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুপ্রবেশকারীদের আরও একটি তালিকা দিয়েছেন। সেই তালিকা ধরে ধরে অনুপ্রবেশকারীদের বের করার নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী।

বিএনপির ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে নানক বলেন, খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমান ষড়যন্ত্র করে একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল। ১টি নয় ২টি নয় ১৪ টি গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সে দিন বেঁচে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই বিএনপি-জামায়াত জ্বালাও পোড়াও শুরু করে।

বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতে হট্টগোল করে জোর করে চাপ সৃষ্টি করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। আইনকে আইনের গতিতেই চলতে দেয়া উচিত।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। উত্তরাঞ্চল এক সময় ছিল মঙ্গাপীড়িত। জননেত্রী শেখ হাসিনার ১০ বছরের ওই এলাকার জন্য ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছেন। আজকে উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা নেই। উত্তরাঞ্চলের মঙ্গাকে তিনি জাদুঘরে পাঠিয়েছেন। বিএনপি খাদ্য ঘাটতি রেখে গিয়েছিলো। আজকের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদ্বৃত্ত আছে। আজকে বাংলাদেশ বিশ্ব উন্নয়নের রোল মডেল।বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোকে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের পথ দেখায়।

বিএম মোজাম্মেল বলেন, রাজনীতিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিযোগিতা থাকবেই কিন্তু কোনও প্রতিহিংসা থাকবে না। প্রতিহিংসার কবর রচনা করে ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করে দলের আদর্শে ভর করে সকল ভেদাভেদ ভুলে মানুষের জন্য রাজনীতি করতে হবে।

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা কথা সবসময় বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তি তৃণমূল। সেজন্য তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে হবে। সরকার আজ ব্যাপক উন্নয়ন করছে, দেশটা এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যারা সরকারের উন্নয়ন সহ্য করতে পারে না তারা ষড়যন্ত্র করছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা শান্তি বিঘ্নিত করতে চাচ্ছে। দলে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির যেন অনুপ্রবেশ না ঘটে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।

সংগঠনের জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেন নীলফামারী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক।

এএইচএস/এসএমএম

আরও সংবাদ