• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০১৯, ০৮:০৭ পিএম

‘টিআইবি মোটেই একচোখা নয়’

‘টিআইবি মোটেই একচোখা নয়’

 

গণমাধ্যমে প্রচারিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে টিআইবি সম্পর্কে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের অমূলক ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য হতাশাব্যঞ্জক বলে অভিহিত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বুধবার (৬ মার্চ) এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, দুদকের কর্তৃপক্ষ টিআইবির কর্মপরিধি ও কার্যক্রম সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বলেই ধারণা করতো টিআইবি| দুঃখজনকভাবে দুদক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে তা ভুল প্রতীয়মান হয়েছে। টিআইবি কোনভাবেই ‘একচোখা’ নয়; টিআইবির সকল অবস্থান, প্রতিবেদন ও বক্তব্য সম্পূর্ণ বস্তুনিষ্ঠ ও বৈজ্ঞানিকপন্থায় প্রণীত গবেষণা প্রসূত ও নিরপেক্ষ।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি শুধু বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও খাতের সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণের ওপর নির্ভর করে ঘাটতি চিহ্নিত করে না বরং প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা উত্তরণে সুনির্দিষ্ট সুপারিশমালা প্রদান করে থাকে। তাছাড়া টিআইবি প্রণীত প্রতিটি গবেষণা প্রতিবেদনেই সংশ্লিষ্ট খাতের বা প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি ইতিবাচক অর্জনসমূহ অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন করা হয়।

তিনি বলেন, উদাহরণস্বরূপ টিআইবির গবেষণালব্ধ সুপারিশ ও অধিপরামর্শমূলক কাজের ফলশ্রুতিতে যে দুদকের সৃষ্টি হয়েছে, তা যদি দুদক ভুলে যায়, তাহলে সেটা হবে দুঃখজনক। অধিকন্তু বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব উল্লেখযোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক, আইনি ও নীতিগত সংস্কার এবং ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তার প্রায় সবক্ষেত্রেই টিআইবির প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

ড. জামান বলেন, আগ্রহী যে কারো জন্য টিআইবির আয়-ব্যয়ের হিসেব সংক্রান্ত নথিপত্র সর্বদা উম্মুক্ত। দুদক যদি টিআইবির আর্থিক প্রতিবেদনসহ সার্বিক কার্যক্রমের ব্যাপারে কোনোরূপ সন্দেহ প্রকাশ করে, তাহলে দুদক সহজেই টিআইবি সম্পর্কে তদন্ত করে দেখতে পারে। আমরা দুদককে এ ব্যাপারে পূর্ণ সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দুদকসহ যে কোন প্রতিষ্ঠান বা বিষয়ে যে কোন ধরনের মন্তব্য বা বক্তব্য প্রদান করার ক্ষেত্রে টিআইবি সর্বদা বস্তুনিষ্ঠভাবে বিদ্যমান পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গবেষণার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে থাকে। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলছি, টিআইবি সরকার অনুমোদিত কর্ম-পরিধির মধ্যে থেকেই সরকার তথা দুদকের সহায়ক শক্তি হিসেবে দেশে সুশাসন নিশ্চিত এবং দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন কার্যক্রমসহ অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর তাই দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমের সহযোদ্ধা হিসেবে দুদকের যেকোন গঠনমূলক পরমর্শকে টিআইবি স্বাগত জানায় বলে মন্তব্য করে ড. জামান বলেন, প্রতিটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রণয়নের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য প্রক্রিয়ায়, প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি উভয় প্রকার তথ্যের ওপর নির্ভর করে টিআইবি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সামাজিক বিজ্ঞানের গবেষণাপদ্ধতি ও সর্বোচ্চ মানদণ্ড অনুসরণ করে থাকে। প্রতিটি গবেষণা প্রতিবেদনের শুরুতেই কোন পদ্ধতি অনুসরণ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়। শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সর্বমহলে টিআইবির গ্রহণযোগ্যতা অটুট থাকার অন্যতম কারণ হল এর গবেষণাপদ্ধতি, যার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময়ে যখন প্রয়োজন হয়েছে, টিআইবি তার গবেষণা প্রাপ্ত ফলাফলকে সঠিক প্রমাণে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, টিআইবির গবেষণা কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা নতুন কিছু নয়। এটা এখন আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়েছে। তবে দুদকের মত একটি সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, যার আইনগতভাবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ থাকার কথা, যখন একই সংস্কৃতির প্রভাবে প্রভাবিত হয়, তখন তা সতিই দুঃখজনক। টিআইবি বিশ্বাস করে, সমালোচনা সহ্য করার মত সৎ সাহস দুদক অর্জন করবে। আর যা-ই হোক দুদক কোন রাজনৈতিক বা সরকারি প্রতিষ্ঠান নয়।

জাহো/এসএমএম