• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ৮, ২০১৯, ০৫:৫৯ পিএম

‘সহযোগিতা ছাড়া অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ অসম্ভব’

‘সহযোগিতা ছাড়া অস্ত্র নিয়ে বিমানবন্দরে প্রবেশ অসম্ভব’

 

নিরাপত্তা কর্মকর্তা বা কর্মীর সহযোগিতা ছাড়া আসল বা খেলনা অস্ত্র, অস্ত্রসদৃশ কোনো বস্তু, চাকু-ছোরা, গোলাবারুদ বা লিকুইড কোনো দাহ্য পদার্থ নিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ বা বিমানে আরোহণ একেবারেই অসম্ভব। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তো নয়ই, অভ্যন্তরীণ রুটের বিমানবন্দরেও তা সম্ভব নয়।

দৈনিক জাগরণকে আজ শুক্রবার (৮ মার্চ) এমনটাই বলেছেন দেশের সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) মো. আবদুর রশীদ এবং উইং কমান্ডার (অব.) হাসান মাসুদ। 

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে (বিজি-১৪৭) বাংলাদেশি এক অস্ত্রধারীর আরোহন ও ছিনতাইয়ের চেষ্টা এবং এর ৯ দিন পর চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের ১০ রাউন্ড গুলিসহ নাইনএমএম পিস্তল বিমানবন্দরের স্ক্যানিং মেশিনে ধরা না পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এসব কথা বলেন সাবেক এই দুই সেনা কর্মকর্তা।
  
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে পলাশ নামের ওই বিমান ছিনতাইকারী নিহত হন। এর ৯ দিন পর ৫ মার্চ সন্ধ্যায় নভোএয়ারের একটি আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে যান নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের প্রথম গেটের স্ক্যানার মেশিনের নজর এড়িয়ে ৯ এমএম পিস্তল আর ১০ রাউন্ড গুলিভর্তি ব্যাগসহ বিনা বাধায় পার হন তিনি। চাঞ্চল্যকর এ দুটি ঘটনায় বিমানবন্দরের মোট ১১ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

মো. আবদুর রশীদ  - ফাইল ছবি

সাবেক সেনা কর্মকর্তা, সামরিক বিশ্লেষক মো. আবদুর রশীদ বলেন, ‘যে বিমানবন্দর থেকে ছিনতাইকারী বিমানে আরোহন করেছিল, সেটা কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। বিমানটিও আন্তর্জাতিক রুটের। আর ইলিয়াস কাঞ্চনের ঘটনাটি একই বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ রুটের। দুই ক্ষেত্রেই কতটা নিরাপত্তা থাকার কথা? এর ওপর ছিনতাইয়ের ঘটনার দিন দেশের প্রধানমন্ত্রী ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম যান। তাহলে ঐ দিন এই রুটে এবং বিমানবন্দরে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা থাকার কথা। এর পর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক বিমানে অস্ত্রধারী যুবক কীভাবে প্রবেশ করল, বা ইলিয়াস কাঞ্চনের অস্ত্র কেন স্ক্যানিং মেশিনে শনাক্ত হলো না, তা আমার বোধগম্য নয়। শুধু এতটুকুই বলবো... এসবের ক্ষেত্রে বিমানবন্দরের ভেতর থেকে সহযোগিতা ছাড়া অস্ত্র বা অস্ত্রসদৃশ্য বস্তু নিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবেশ অসম্ভব। 

উইং কমান্ডার (অব.) হাসান মাসুদ দৈনিক জাগরণকে বলেন, ছিনতাইকারীর বহন করা অস্ত্রটি আসল না খেলনা, সেটা এখানে বিবেচ্য নয়, কারণ নকলটা যদি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিতে পারে তাহলে আসলটা কি পারবে না? তাই তো ঘটেছে। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনেরটি তো আসল ছিল!

হাসান মাসুদ বলেন, অস্ত্রসদৃশ কোনো বস্তু, চাকু-ছোরা বা গোলাবারুদ, লিকুইড কোনো দাহ্য পদার্থ নিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে তো নয়ই, দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটেও আরোহন করা অসম্ভব। তবে হ্যাঁ, এটা সম্ভব... যদি দায়িত্বরত কোনো নিরাপত্তা কর্মকর্তা বা কর্মী সহযোগিতা করেন। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, সেটা তদন্তে নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসবে।

এমএম/এফসি