• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০১৮, ০৭:৩৭ পিএম

জলবায়ুর ক্ষতিপূরণ আদায়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

জলবায়ুর ক্ষতিপূরণ আদায়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ
ছবি: জাগরণ

 

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দক্ষতার অভাবে ক্ষতিপূরণ আদায়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর)টিআইবির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য দেওয়া হয়।
 
সংস্থাটি বলছে,অর্থায়নের ক্ষেত্রে দাতা ও গ্রহীতা- উভয়পক্ষের মধ্যে সমন্বয়হীনতার ঘাটতি রয়েছে। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে কাজ করতে হবে।একইসঙ্গে পোল্যান্ডের কাতোভিতসেতে আসন্ন কপ-২৪ সম্মেলনে প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা কাঠামোর সম্বলিত চূড়ান্ত রূপরেখা প্রণয়ন, প্রতিশ্রুত জলবায়ু আর্থায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

এসময় টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী উপদেষ্টা (ব্যবস্থাপনা) সুমাইয়া খায়ের ও পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবির সিনিয়র প্রোগ্রামার জাকারিয়া হোসেন খান।

এতে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, জলবায়ু পরিবর্রতন মোকাবিলায় বাংলাদেশ চরম ক্ষতির সম্মুখীন হলেও ক্ষতিপূরণ আদায়ে এখনও অনেক পিছিয়ে আছে দেশ। পিছিয়ে থাকার আবার তিনটি কারণও রয়েছে। এক হলো- টেকনিক্যাল জ্ঞান না থাকা, দুই- ন্যায্য দাবি আদায়ে দর কষাকষিতে ঘাটতি এবং তিন- নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত আর্থিক, পরিবেশগত ও সুশাসনের মানদণ্ড নিশ্চত করতে পারেনি। প্রতি বছর কমপক্ষে ২.৫ বিলিয়ন ডলার দরকার বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ খাতে ট্রাস্ট তহবিলকে (বিসিসিটিএফ) ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সরকার এ খাত নিয়ে পৃথক বাজেট প্রণয়ন করেছে। কিন্তু জাতীয় এ বাজেটে বিসিসিটিএফে তহবিল বরাদ্দের পরিমাণ ক্রমেই কমছে। শুধু তা-ই নয়, প্রকল্প অনুমোদন ও তহবিল বরাদ্দে স্থানীয় ঝুঁকিকে প্রাধান্য না দেওয়া, তহবিল ব্যবহারে নাগরিক অংশগ্রহণ, তথ্যের উন্মুক্ততা, জবাবদিহিতা ও শুদ্ধাচারের ঘাটতিসহ বাস্তবায়নে নিরপেক্ষ তদারকির ঘাটতি কার্যকর করা অন্যতম চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন তিন।

টিআইবির অন্য দাবিগুলো হলো- উন্নত দেশগুলো থেকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সম্পদ সরবরাহের জোর দাবি উত্থাপন করা, উন্নয়ন সহায়তার ‘অতিরিক্ত’ জলবায়ু তহবিল যোগানের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রণয়ন করে উন্নয়নশীল দেশগুলোর অভিযোজনকে অগ্রাধিকার দিয়ে জলবায়ু তহবিল প্রদানে একটি সময়াবদ্ধ রোডম্যাপ বাস্তবায়ন করা, ক্ষতিগ্রস্ত স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পরিকল্পিত অভিযোজনের জন্য সঠিক প্রয়োজন নির্ধারণপূর্বক জিসিএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক তহবিল থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল যথাসময়ে ও সহজে সরবরাহের জন্য বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে সমন্বিতভাবে দাবি উপস্থাপন করা এবং তাআদায়ে দর-কষাকষিতে দক্ষতা প্রদর্শন  করা। 

মূল প্রবন্ধে জাকারিয়া হোসেন বলেন, বৈশ্বিক চাহিদা অনুযায়ী প্যারিস চুক্তিতে প্রতিশ্রুত জলবায়ু তহবিল দেওয়া ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের বিষয়টি বাধ্যতামূলক না হয়ে ঐচ্ছিক হওয়ায় ঝুঁকিতে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য অনুদান ভিত্তিক অর্থায়ন পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

উল্লেখ্য, গতবার কপ২৩ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জার্মানির সাবেক রাজধানী বন-এ। ১২ দিনব্যাপী ওই সম্মেলনে ১৯৭টি দেশের ২৩ হাজার প্রতিনিধি অংশ নেন। এবারের সম্মেলন হবে পোল্যান্ডে। তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ থেকে ১৪ ডিসেম্বর।

কেএ/বিএস