• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৩, ২০১৯, ০৮:৫১ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৩, ২০১৯, ০৩:৩২ পিএম

পাটকল শ্রমিক আন্দোলন

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি নিয়ে ব্যাকফুটে মন্ত্রণালয়-বিজেএমসি

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি নিয়ে ব্যাকফুটে মন্ত্রণালয়-বিজেএমসি

সরকারের ঘোষিত বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন ও বকেয়া বেতনের বিষয়ে পাটকল শ্রমিকদের সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যাকফুটে শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি (বাংলাদেশ জুটমিল কর্পোরেশন)। যে কারণে আবারো পাটকল শ্রমিকরা কলের চাকা বন্ধ রেখে নেমে এসেছেন সড়কে। আন্দোলনরত শ্রমিকদের অভিযোগ, ত্রিপক্ষীয় চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। হঠকারিতার আশ্রয় নিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয় ও বিজেএমসি। 

এ বিষয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, বৈঠকে বসলে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। দাবি-দাওয়া মানতে হয়, কোন কোন ক্ষেত্রে চুক্তিও করতে হয়। তবে এখন মনে হচ্ছে, সেদিনের চুক্তিটা হুট করে করা ঠিক হয়নি। দাবির বিষয় নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে আরো আলোচনার প্রয়োজন ছিলো।

চুক্তিতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করা বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ নাছিম বলেছেন, সেদিনের চুক্তির বিষয়টি আমার একার নয়। বৈঠকে বিজেএমসি ছাড়াও সরকারের পক্ষে অনেকেই উপস্থিত ছিলেন, তাদের সম্মতিতেই করা হয়েছিলো। চুক্তির বিষয়ে তাদের আলাদা একটা গতি দেখেছি, যা বাস্তবায়নে পরে আর দেখা যায়নি। 

সরকারের ঘোষিত বেতন কাঠামো বাস্তাবায়ন, বকেয়া বেতন প্রদান, বরখাস্ত করা শ্রমিকদের পুনর্বহাল, মৌসুমে পাট ক্রয়ে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দসহ ৯ দফা দাবিতে গত এপ্রিল মাসে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাক দিয়েছিলো পাটকল শ্রমিকরা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ধর্মঘট চলাকালীন ১৫ এপ্রিল সারা দেশের পাটকল শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শ্রম-কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান ও বিজেএমসি’র চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ নাছিম। রাজধানীর মতিঝিলে শ্রম ভবনে রাত সোয়া ১টা পর্যন্ত চলা এ বৈঠকে পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ  সারা দেশের ২৮টি পাটকল শ্রমিক নেতারা অংশ নেয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর শ্রমিকরা তাদের ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়।

ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে যা উল্লেখ ছিলো : 

১.পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে শবে বরাতের আগে মিল থেকে সকল শ্রমিকদের ১ সপ্তাহের বেতন প্রদান করা হবে। ২. ২৫ এপ্রিল ২০১৯ এর মধ্যে দশ সপ্তাহ অর্থাৎ ৩ মাসের বেতন পর্বের বেতন স্কেলে প্রদান করা হবে। ৩. ১৭ মে ২০-১৯ তারিখে শ্রমিকদের বেতন ফিক্সেশন সম্পন্ন করে ১৮ মে ২০১৯ তারিখে খাতায় উঠবে অর্থাৎ শ্রমিকদের অনুকূলে নতুন মজুরি স্লিপ প্রদান করা হবে। ৪. ৮ মে ২০১৯ তারিখে বিজেএমসিতে পাটকল শ্রমিকদের অন্যান্য দাবি দাওয়া নিয়ে উভয় পক্ষের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের পক্ষে ক্রিসেন্ট জুট মিলস শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন আজাদী গতকাল (১২ মে) দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী ৩ নম্বর চুক্তি বাস্তবায়নের সময় এখনও আছে। তবে বাকি ৩টি চুক্তি বাস্তবায়নের তারিখ অতিবাহিত হয়ে গেছে। এর একটিও যেহেতু বাস্তবায়ন হয় নাই, সেহেতু ধরে নিতে পারি, ৩ নম্বর চুক্তিও বাস্তবায়ন হবে না। অর্থাৎ নতুন বেতন মজুরির স্লিপ আমরা পাটকল শ্রমিকরা পাবো না। 

বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগ সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দিন দৈনিক জাগরণকে বলেন, ‘এটা পরিষ্কার, আমাদের সাথে শ্রম মন্ত্রণালয় এবং বিজেএমসি প্রতারণা করেছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। যে কারণে আবার রাস্তায় না নেমে আমাদের আর কোন পথ খোলা ছিলো না।’

এমএএম/আরআই