• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৪, ২০১৯, ০৯:৫৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৪, ২০১৯, ১১:১০ এএম

অবসরে যাচ্ছেন পুলিশের দাপুটে কর্মকর্তারা

অবসরে যাচ্ছেন পুলিশের দাপুটে কর্মকর্তারা

অবসরে যাচ্ছেন পুলিশ বাহিনীর দাপুটে কর্মকর্তারা।স্বমহিমায় দেশে-বিদেশে সুনাম কুড়ানো কর্মকর্তাদের হারাচ্ছে বাহিনী। পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, বেশ কিছুদিন ধরে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এসব কর্মকর্তা প্রায় কাছাকাছি সময়ে অবসরে যাবেন। এতে পুলিশ বাহিনীতে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন পুলিশের দাপুটে কর্মকর্তারা। তবে উত্তরসূরিরা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাহিনীকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে আশা করছেন তারা। 

এদিকে আসন্ন ঈদের পরই অবসরে যাচ্ছেন ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। তার স্থলাভিষিক্তের জন্য চলছে জোর লবিং। এমন একটি স্পর্শকাতর পদে যোগ্যতা সম্পন্ন এবং ক্লিন ইমেজের একজন দক্ষ পুলিশ কর্মকর্তা খুঁজছেন দেশের নীতিনির্ধারকরা। এখনও ডিএমপি কমিশনার পদে কর্মকর্তা খোঁজা শেষ হয়নি। পাশাপাশি ডিএমপি কমিশনার পদের জন্য কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। 

এ বিষয়ে পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ডিএমপি কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য অভিজ্ঞ ও দক্ষ তিনজন কর্মকর্তা জোর লবিং ও তদবির চালাচ্ছেন। এরমধ্যে আলোচনায় এগিয়ে রয়েছেন ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলাম। তার পাশাপাশি তালিকায় রয়েছেন- চট্টগ্রামের ডিআইজি ইকবাল বাহার । এদের মধ্য থেকেই ডিএমপি কমিশনার নির্ধারণ হতে পারেন বলে পুলিশ সদর দফতরের একাধিক পুলিশ কর্তা মন্তব্য করেছেন।
    
এদিকে পুলিশ সদর দফতর সূত্র বলছে, আগামী ১৩ আগস্ট অবসরে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর ডিএমপির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দৃঢ়তা এবং দক্ষতার সঙ্গে হলি আর্টিজান হামলা-পরবর্তী জঙ্গি দমনে বিশেষ সফলতা, বিরোধী দলের জ্বালাও-পোড়াও কর্মসূচি ছাড়াও অনেক চ্যালেঞ্জ সফলতার সঙ্গে মোকাবিলা করেন তিনি। তার আমলেই রাজধানীতে ই-ট্রাফিক সিস্টেম, হ্যালো সিটি অ্যাপস্ চালু হয়, যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে নাগরিক জীবনে। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৮ সালে সরাসরি সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে পুলিশ সার্ভিসে যোগদান করা এই কর্মকর্তা ডিআইজি হিসেবে হাইওয়ে রেঞ্জ, ঢাকা রেঞ্জ, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও খুলনা রেঞ্জের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও তিনি পুলিশ সুপার হিসেবে সুনামগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলা, রেলওয়ে জেলা চট্টগ্রাম ও রেলওয়ে জেলা সৈয়দপুরে দায়িত্ব পালন করেছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি বিপিএম, পিপিএম ও আইজি ব্যাজ পদকে ভূষিত হয়েছেন।

এছাড়া সম্প্রতি অবসরে গেছেন পুলিশের দাপুটে, সদা হাস্যোজ্জ্বল কর্মকর্তা অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (প্রশাসন) মোখলেছুর রহমান। দীর্ঘদিন সিআইডির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা, ১০ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধার মামলাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলার রহস্য উদঘাটন করে চার্জশিট দেন। বিশেষ শাখায় দায়িত্ব পালন করার সময় তার নেতৃত্বে ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি লে. কর্নেল ফারুক, লে. কর্নেল রশীদ ও খায়রুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ২০১৮ সালের ৭ জানুয়ারি পুলিশ সদর দফতরে অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ বিভাগের আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে নেপথ্য ভূমিকা পালন করেন ’৮৫ ব্যাচের এই কর্মকর্তা। সিআইডির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে তিনি ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি, ডিআইজি (ট্রেনিং), সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপাল, বরিশাল আরআরএফের কমান্ড্যান্ট, গাজীপুরের পুলিশ সুপার, ডিএমপির ডিসি মতিঝিলসহ পুলিশ বিভাগের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন।

অপরদিকে পুলিশের তদন্ত বিভাগ সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক শেখ হেমায়েত হোসেন অবসরে যাওয়ার কথা ছিল গত ৩ মে। তবে মুক্তিযুদ্ধে তার সক্রিয় অংশ গ্রহণ এবং তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই তার চাকরির মেয়াদ আগামী এক বছর বাড়ছে বলে একাধিক সূত্র বলছে। চাকরি জীবনে তিনি ঝালকাঠি, কুষ্টিয়া, খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার, ঢাকা, খুলনা ও রেলওয়ে রেঞ্জের ডিআইডি, রাজশাহী মহানগর পুলিশের কমিশনার, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে তিনি বিপিএম, পিপিএম ও আইজি ব্যাজ পদকে ভূষিত হয়েছেন। 

অপরদিকে চলতি বছরেই ডিআইজি হিসেবে অবসরে গেছেন একই ব্যাচের সিআইডির আরেক দক্ষ কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। গত ৯ মার্চ অবসরে গেছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদর দফতরে দায়িত্বরত অতিরিক্ত আইজি সিদ্দিকুর রহমান। আগামী ৯ ডিসেম্বর অবসর নেওয়ার কথা রয়েছে সিআইডির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. মনজুর কাদের খানের।

এইচ এম/বিএস