• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০১৯, ০৮:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৩, ২০১৯, ১১:০৫ এএম

সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

আড়ং-এ অভিযানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া গ্রহণযোগ্য ছিল না

আড়ং-এ অভিযানকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া গ্রহণযোগ্য ছিল না
জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ফাইল ছবি

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কর্তৃক আড়ংকে চার লাখ টাকা জরিমানাসহ শাস্তি আরোপের ঘটনায় ওই সংস্থার কর্মকর্তা মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে তাৎক্ষণিক বদলির ঘটনাকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না।

বুধবার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলের সংসদ সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। 

৭৩০ টাকার পাঞ্জাবি দ্বিগুণ দামে বিক্রির দায়ে রাজধানীর উত্তরায় দেশীয় ব্র্যান্ড আড়ংয়ের ফ্ল্যাগশিপ আউটলেটে গত ৩ জুন (সোমবার) অভিযান চালিয়ে সেটি বন্ধ করে দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এর কয়েক ঘণ্টা পরই আবার সেটি খুলে দেয়া হয় এবং তারপরেই মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারকে খুলনায় বদলি করা হয়।

আড়ং-এর ঘটনা উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার সময় যদিও আমি দেশের বাইরে ছিলাম, তখনও বেশ কিছু বড় বড় জায়গায় হাত দিলো বলে কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হঠাৎ একটা ব্যবস্থা নেয়া হলো। আমার কাছে সেটা মোটেও গ্রহণযোগ্য ছিল না। সাধারণ ছোটখাটদের ধরতে পারবে, আর বড় অর্থশালী-সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না- এটা তো হয় না।

তিনি বলেন, আমি আজকেই বলে দিচ্ছি তাকে (মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার) আরও ওই দায়িত্বই দিতে হবে। কারণ খুব দামি দামি জায়গা, তাদের যে খারাপ কিছু থাকবে না বা হবে না যারা ওগুলোর মালিক তারাও তো এই গ্যারান্টি দিতে পারেন না। সেখানে কেনো পরীক্ষা করতে পারবে না, পরীক্ষা করার অধিকারটা কেনো থাকবে না?

শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধী সে অপরাধী। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলেই দেখা যায় হাতটা পুড়ে যাচ্ছে এবং যারা এই কাজটি করতে যায় তারা অপরাধী হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন সংস্থার মধ্যে অনেকেই যে দুর্নীতি ব্যধিতে আক্রান্ত বলে জনশ্রুতি আছে- এটা একেবারেই মিথ্যা না। সবাইতো ধোয়া তুলসীপাতা না। আর এই গ্যারান্টি কেউ দিতে পারবে না যে, সবাই একশভাগ একভাগই সৎ হবে। সংস্থাকে এখন থেকে সচেতন হতে হবে যারা কাজ করবে তাদের ব্যাপারেও যেন সতর্ক থাকে, তারাও যেন এমন কোনও কাজ না করে যাতে এমন জনশ্রুতি সৃষ্টি না হয়। এখানে একটা ব্যাপার আছে, দুর্নীতি দমনই বলেন বা খাদ্য নিরাপত্তার কথাই বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন এমন বড় বড় জায়গা আছে যেখানে হাত দিলে হাতটাই পুড়ে যাচ্ছে। যারা এই কাজটি করতে যান তারা অপরাধী হয়ে যান। আর কিছু পত্র-পত্রিকাতো আছে এটা নিয়ে লেখা শুরু করে। সেখানেও আমি নিজে মনে করি- আমাদের সচেতন থাকা, সঠিক কাজটা করেছে কি-না সেটা দেখে তারপর বিচার করা। কোন পত্রিকা কি লিখলো, কে কি বললো সেটায় কান না দেয়া।

তিনি বলেন, সাধারণ ছোটখাটদের ধরতে পারবে আর বড় অর্থশালী-সম্পদশালী হলেই তাদের হাত দেয়া যাবে না, তাদের অপরাধ অপরাধ না- এটা তো হয় না। অপরাধী সে অপরাধী। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বেগম রওশন আরা মান্নানের (মহিলা আসন-৪৭) অপর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুর্নীতি করবো না, করতেও দেয়া হবে না। ঘুষ যে গ্রহণ করবে, ঘুষ যে দেবে উভয় অপরাধী। ঘুষ নিলে তাকে ধরা হবে তা না, যে দেবে তাকেও ধরা হবে। কারণ দেয়াও অপরাধ। সেভাবেই কিন্তু বিচার হবে। অপরাধে উস্কানিদাতা, মদদদাতাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে চাই। সেজন্য দলমত নির্বিশেষে সংসদ সদস্যের সহযোগিতা কামনা করি। এই ব্যাপারে সবাই এক হয়ে কাজ করে অবশ্যই সমাজ থেকে অনিয়মগুলো দূর করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো।

এইচএস/এসএমএম