• ঢাকা
  • বুধবার, ০১ মে, ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৯, ১০:৪০ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৯, ২০১৯, ১০:৫৯ এএম

বিমানবন্দরে হচ্ছে ডগস্কোয়াড ইউনিট 

বিমানবন্দরে হচ্ছে ডগস্কোয়াড ইউনিট 

সোনা, মাদক, টাকা, অস্ত্রসহ নিষিদ্ধ পণ্য পাচার বন্ধে দেশের ৩টি আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরের নিরাপত্তায় স্থাপিত হচ্ছে ডগস্কোয়াড ইউনিট। প্রাথমিক পর্যায়ে জরুরি ভিত্তিতে নিরাপত্তার স্বার্থে এই ডগস্কোয়াড ইউনিট চালু করার কাজ পুরোদমে শুরু করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট বিমান বন্দরগুলো হচ্ছে, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর এবং সিলেট এম এজি ওসমানী আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর। পর্যায়ক্রমে দেশের অন্যান্য বিমান বন্দরগুলোতেও ডগস্কোয়াড ইউনিট স্থাপন করা হবে।

জানা যায়, গত ২০১৮ সালে বিমান বন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি ডগস্কোয়াডের টিম ছিল। শাহজালাল বিমান বন্দরের নিরাপত্তার স্বার্থে যুক্তরাজ্য থেকে আনা ৮টি কুকুর এপিবিএন দলে দেয়া হয়েছিল। এ ডগস্কোয়াড টিম বিমান বন্দরে নিরাপত্তার কাজে স্থায়ীভাবে রেখে কখনও সুইপিং করতে দেখা যায়নি। বড় ধরনের নিরাপত্তা বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা দেখা দিলে খবরের মাধ্যমে এপিবিএন হেড কোর্য়াটার উত্তরা থেকে ডগস্কোয়াড আনতে হয়। স্থায়ীভাবে ডগস্কোয়াড রাখার কোন ব্যবস্থাই নেই বিমান বন্দরে। 

জানা গেছে, ২০১৭ নভেম্বরে ইংল্যান্ড থেকে ওই কুকুরগুলোকে ঢাকায় আনা হয়। এগুলোকে ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে উপযোগী করে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়। প্রশিক্ষণ শেষে কুকুরগুলো দায়িত্বে নিয়োজিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন এপিবিএনর পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম। 

বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এক কর্মকর্তা জানান, এপিবিএন এর অধীনে শেম, কোরি, ডিজেল, ডাই, বেক্স, বো, ফিন ও রক নামের ৮টি কুকুরের মধ্যে চারটি জার্মান শেফার্ড এবং চারটি ল্যাবরেডর প্রজাতির। প্রশিক্ষিত এ কুকুরগুলো পরিচালনার জন্য ‘কে-৯’ নামে একটি ইউনিট গঠন করা হয়েছে। এপিবিএনর ১৫ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কুকুর পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এর আগে, এপিবিএনর একজন কর্মকর্তা ডগস্কোয়াডের উপড় ইংল্যান্ড থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন। 

পুলিশ সুপার বলেন, কুকুরগুলো মাদক, অস্ত্র, বিস্ফোরকসহ ক্ষতিকর বস্তু শনাক্তে পারদর্শী। ঢাকার পরিবেশের সঙ্গে এবং যারা পরিচালনার দায়িত্বে আছেন, তাদের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে কুকুরগুলোকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার কাজে ব্যবহার করা হবে।

এদিকে দেশের সব বিমানবন্দরগুলোতে ডগস্কোয়াড ইউনিট রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুন) শেরে বাংলা নগরের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মো. নূরুল আমিন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রবল। বিমানবন্দরে পৃথিবীর অনেক দেশে ডগ স্কোয়াড ইউনিট আছে। আমাদেরও করতে হবে। বিমানবন্দরে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য ডগস্কোয়াড ইউনিট প্রয়োজন।

জানা গেছে, গত এক বছরে বিমানবন্দর পুলিশ ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫০ কোটি টাকার চোরাচালান পণ্য আটক করেছে। এর মধ্যে স্বর্ণের বার, ও বৈদেশিক মুদ্রা, অস্ত্র, ছাড়াও রয়েছে কোকেনের মতো মাদক। প্রতিদিনই  চোরাচালান হচ্ছে। এ চোরাচালান বন্ধে ডগস্কোয়াডের প্রয়োজন।

বিমানবন্দরের একাধিক সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের কাছে সবচেয়ে নিরাপদ ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এগুলো হচ্ছে, ঢাকার শাহজালাল, চট্টগ্রামের শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী বিমান বন্দর।

চোরাচালান বন্ধের উপায় হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জানান, ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের ব্যাগেজ ডগস্কোয়াড দিয়ে সুইপিং (পরীক্ষা) করালে চোরাচালান বন্ধ করা সম্ভব। কারণ হিসেবে তারা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও মাদকদ্রব্য চিহ্নিত করার জন্য ডগস্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হয়। আর যেসব দেশের বিমানবন্দরে ডগস্কোয়াড আছে, সেসব বিমানবন্দর চোরাচালানিরা ব্যবহার করেন না।

এইচ এম/ একেএস