• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০১৯, ০৫:৫১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৯, ২০১৯, ০৫:৫১ পিএম

‘বাজেট ঘোষণা মানে একদিকে স্বপ্ন অন্যদিকে শঙ্কা’

‘বাজেট ঘোষণা মানে একদিকে স্বপ্ন অন্যদিকে শঙ্কা’
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া

আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়া বলেছেন, বাজেট ঘোষণা মানে একদিকে স্বপ্ন অন্যদিকে শঙ্কা। আশা আর স্বপ্ন হাত ধরাধরি করে চলে। বাজেটে আশার জায়গা তৈরি হওয়ার সুযোগ থাকে, আর তাতে ভর করেই মানুষ স্বপ্ন দেখে উন্নতি ও সমৃদ্ধির। অন্যদিকে নতুন করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি কিংবা মূল্যস্ফীতির সংকেত মিলবে কিনা এমন শঙ্কাও মানুষের মনে জাগে। একজন দায়িত্বশীল অর্থমন্ত্রী যে উভয় দিক সম্পর্কে সচেতন থাকেন- তার প্রমাণ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী তার বাজেটে। এই বাজেটে সরকারের রূপকল্প এবং অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষ্য সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

বুধবার (১৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে প্রতি তিন কিলোমিটারের মধ্যে একটি করে ডিজিটাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। ইন্টারনেট ব্যবহারের আওতা বৃদ্ধির মাধ্যমে জনগণকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সঙ্গে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশে ইটারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ২.৬৭ শতাংশ। এই সংখ্যা ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৫৬.৮৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।

তিনি বলেন, এবার আমার নির্বাচনি এলাকার জনগণের কিছু দাবির কথা তুলে ধরছি। আমার এ এলাকায় গত সাড়ে দশ বছরে ৩০০০ কোটি টাকার উন্নয়ন হয়েছে। ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান, মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা সংস্কার ও নির্মাণে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। দাউদকান্দি উপজেলার বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হয় গৌরীপুরকে। জনবহুল এই অঞ্চলটি আশপাশের কয়েকটি উপজেলার ব্যবসার প্রাণ কেন্দ্র। এখানে ব্যবসা কেন্দ্রিক নানান শিল্প-প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ, চিকিৎসা কেন্দ্র ও সামাজিক অবকাঠামো রয়েছে। উপজেলার প্রধান স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিও এই ইউনিয়নে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশ ঘেঁষা এই স্থানটি আশপাশের কয়েকটি উপজেলার যোগাযোগের সংযোগ স্থলও। তাই যে কোন বিবেচনায় গৌরীপুরকে পৌরসভায় উন্নীত করা যায়। মাননীয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী কুমিল্লার কৃতি সন্তান, তিনি অবশ্যই গৌরীপুর সম্পর্কে অবহিত।

তিনি বলেন, আমি একটি দাবি এই মহান সংসদে গত দশ বছর ধরে করে আসছি। দাউদকান্দিকে হেড কোয়ার্টার করে কুমিল্লা উত্তর সাংগঠনিক জেলাটিকে পূর্ণাঙ্গ জেলা ঘোষণা করা। আশির দশকে তৎকালীন সরকার দেশের সকল মহকুমাকে জেলা ঘোষণা করলেও কুমিল্লা উত্তর মহকুমাকে জেলায় রূপান্তর করেনি। সময়ের প্রয়োজনে এটি এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দাবি।

তিনি বলেন, কুমিল্লা একটি বর্ধিষ্ণু অঞ্চল। এই জনপদের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। ৩০৮৫ বর্গ কি.মি. আয়তনের এই জেলাটিতে প্রায় ৬০ লাখ লোকের বাস। ১৬টি উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলাটি সাংগঠনিকভাবে দু’ভাগে বিভক্ত হলেও প্রশাসনিকভাবে এখনও একটি। বিশাল এই প্রশাসনিক জেলাটি জনগণের সেবায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। কেননা হোমনা, তিতাস, মেঘনা, দাউদকান্দি, মুরাদনগর, চান্দিনার সুবিধাবঞ্চিত মানুষ এতে নানাভাবে বিড়ম্বিত হচ্ছে। কুমিল্লা উত্তর সাংগঠনিক জেলাটি দাউদকান্দি, মেঘনা, হোমনা, তিতাস, চান্দিনা, মুরাদনগর এবং দেবীদ্বার উপজেলা নিয়ে গঠিত। দাউদকান্দিকে জেলা হেডকোয়ার্টার করে সাংগঠনিক এই জেলাটিকে প্রশাসনিক জেলা হিসাবে ঘোষণার দাবি দীর্ঘদিনের। জনসংখ্যা, যোগাযোগ ও কাঠামোগত কারণে ৭টি উপজেলার মধ্যে দাউদকান্দি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এসময় তিনি তার নির্বাচনি এলাকায় বিভিন্ন দাবি-দাওয়া তুলে ধরেন। এগুলো হলো- ফেনী-লাকসাম-দাউদকান্দি হয়ে ঢাকা পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন; দাউদকান্দির ট্রমা সেন্টার ও দোনারচর ২০ শয্যা হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যসেবা চালু করা, মেঘনা উপজেলাকে সমন্বিত সেচ প্রকল্পের আওতায় আনা; গৌরপুর ও দাউদকান্দিতে স্থায়ী বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ; কাঁঠালিয়া, কালাডুমুর ও খিড়াই নদী খনন; প্লাবন ভূমিতে মৎস্য চাষ নিয়ে এই অঞ্চলে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা মেঘনা উপজেলা হয়ে হোমনা পর্যন্ত রাস্তা বাঁকাসোজা ও প্রশস্ত করা এবং দাউদকান্দিতে একটি সুপরিসর মিলনায়তন নির্মাণ।

এইচএস/টিএফ