• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২০, ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২০, ২০১৯, ০৬:৫৪ পিএম

শিশুজন্মে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের মাত্রা বেড়েছে

শিশুজন্মে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের মাত্রা বেড়েছে

শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারী সাহায্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেনের নতুন পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ শিশুজন্মে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের মাত্রা বেড়েছে। এই দুই বছরে এ মাত্রা বাড়ার হার ৫১ শতাংশ। কেবল গেল বছরই দেশে ৮ লাখ ৬০ হাজার অপ্রয়োজনীয় প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার হয়েছে। অন্যদিকে প্রায় ৩ লাখ নারী থেকে যাচ্ছেন যাদের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হলেও ব্যয় বহনের সামর্থ্য নেই। সে কারণে তারা উপযুক্ত চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
  
সেভ দ্য চিলড্রেনের পরিসংখ্যান প্রসবকালীন অস্ত্রপচারের ক্রমবর্ধমান বিস্তৃতির দিকে গুরুত্ব দিয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে মা ও শিশু দুইজনের ঝুঁকির কথা জেনেও দেশের ধনী শ্রেণীর মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ অস্ত্রপচারের দিকে ঝুঁকছে।

বিশেষজ্ঞ মূল পর্যবেক্ষণে বলা হয়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশি বাবা-মায়েরা সিজারিয়ানের পেছনে খরচ করেছে ৪৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা চিকিৎসাগত ভাবে অপ্রয়োজনীয় ছিল। এই খরচ প্রতি জনে গড়ে ৬১২ মার্কিন ডলার। 

২০১৮ তে হওয়া সমস্ত প্রসবকালীন অস্ত্রোপচারের মধ্যে ৭৭ শতাংশই অর্থাৎ ৮ লাখ ৬০ হাজার অস্ত্রোপচারই চিকিৎসাগতভাবে অপ্রয়োজনীয় ছিল। যেখানে ২০১৬ তে এই সংখ্যাটি ছিল ৫ লাখ ৭০ হাজার। অর্থাৎ বৃদ্ধি ঘটেছে ৫১ শতাংশ।
 
একই সময়ে প্রায় ৩ লাখ নারী থেকে যাচ্ছেন যাদের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হলেও ব্যয় বহনের সামর্থ্য না থাকায় কিংবা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারছেন না। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ৪ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।
 
সেভ দ্য চিলড্রেন এই বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব সহকারে দেখে চিকিৎসকদের উপর নজরদারি রেখে একটি সুষম ভারসাম্যে আসার জন্য কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষায় আরও বরাদ্দ বাড়ানোর আশা রাখছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর এবং নবযাতক ও মাতৃস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ড. ইশতিয়াক মান্নান বলেন, অস্ত্রপচারের এই জনপ্রিয়তা এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে যে দিনকে দিন মায়েরা আরও বেশি এই অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের দিকে ঝুঁকছেন। তারা বিশ্বাস করেন যে, হয়ত এটি আরও বেশি আরামদায়ক হবে কিংবা তারা তাদের চিকিৎসকদের কথায়ও বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল, যে দরিদ্র্য মায়েদের সত্যিই সিজারিয়ান প্রয়োজন হয়, তারা সেটি পর্যন্ত পৌঁছাতেই পারেন না।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসক এবং চিকিৎসাসুবিধা আসলে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে না গিয়ে অস্ত্রোপচার করতে অনুপ্রাণিত করে। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হচ্ছে স্বীকৃত মিডওয়াইফের অভাব, যারা প্রাকৃতিক জন্মদানে সাহায্য করার জন্য সর্বচ্চ চেষ্টাই কেবল করে না, বরং ব্যস্ত চিকিৎসকদের বোঝাও অনেকাংশে কমায়।

টিএস/বিএস