• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৮:৪১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৯, ০৮:৪১ পিএম

শেখ বোরহানুদ্দিন কলেজের ব্যতিক্রমী এক বিভাগ নৃবিজ্ঞান

শেখ বোরহানুদ্দিন কলেজের ব্যতিক্রমী এক বিভাগ নৃবিজ্ঞান
শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা -ছবি : জাগরণ

শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের নৃবিজ্ঞান বিভাগের করিডোরে পা দিতেই চোখে পড়লো বেশ কিছু পোস্টার। যার শিরোনাম ‘আলো, ছবি ও নৃভাবনা’। সেখানে সত্যজিৎ রায়ের ‘নায়ক’, গৌতম ঘোষের ‘পদ্মা নদীর মাঝি’, জেমস ক্যামেরনের ‘অ্যাভাটর’সহ নানান চলচ্চিত্রের উপর করা শিক্ষার্থীদের রিভিউ। আরও একটু এগুতেই দেখা মিলল- বিভাগটির বিশাল নোটিশ বোর্ডটি। সেখানে গত জানুয়ারিতে বিভাগের শিক্ষাসফর-২০১৯ ‘ঢাকা-বান্দরবান-কক্সবাজার-ঢাকা’ এর উচ্ছাসে পূর্ণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত ছবির প্রদর্শনী। একপাশে চলছে শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত আড্ডা। সারা বাংলাদেশে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র নৃবিজ্ঞান বিভাগ এটি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগের কর্মকান্ড থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ও অনন্য একটি বিভাগ। 

গত ২ বছরে বিভাগটি বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। জানা যায়, এই বিভাগ প্রতি বছর নবীন বরণ, শিক্ষা সফর, বসন্ত ও বৈশাখ উদযাপন, ইফতার আয়োজনের পাশাপাশি কিছু ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন করে থাকে। যেমন গত অক্টোবরে এই বিভাগটি আয়োজন করে প্রথম এনথ্রোপলোজিক্যাল প্রেজেন্টেশন প্রতিযোগিতা। সারা বছরই এই বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রেজেন্টেশন করতে হয়। কিন্তু ওই প্রতিযোগিতায় বাছাইয়ের মাধ্যমে ফাইনাল উঠে আসে সেরা ১০ জন প্রেজেন্টার। সেখানে প্রধান বিচারক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. ফারহানা বেগম। এই বছরে এ প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া বিভাগের পক্ষ থেকে নিয়মিত চলে মাঠকর্ম। 

প্রতি সপ্তাহের বুধবার বিতর্কের আয়োজন করে এই বিভাগের নৃবিজ্ঞান বিতর্ক সংঘ এবং বৃহস্পতিবার বিভাগে প্রদর্শিত হয় চলচ্চিত্র। যার রিভিউ করেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইফাত জারিন জানান, এই বিভাগে গত দুই বছরে প্রায় ৮০ টি চলচ্চিত্র প্রদশিত হয়েছে।

২০১৯ সালের ৬ জুলাই বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যারিয়ার বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালায় ইউএনডিপি, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল, একসেস টু ইনফরমেশনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের নানা বিষয়ে পরামর্শ দেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান। কর্মশালার সহযোগী স্পন্সার ছিল ক্যারিয়ার কী, মিডিয়া পার্টনার ছিল- দৈনিক জাগরণ ও রেডিও টুডে।

এই মুহূর্তে নৃবৈজ্ঞানিক তথ্যচিত্র নিমার্ণে শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছে। বিভাগটিতে প্রায় ১৫টি নৃবৈজ্ঞানিক তথ্যচিত্র নিমার্ণের কাজ চলছে। এ বিষয়ে বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ বলেন, বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে যা কল্পনা করা যায় না, তাই আমরা করছি গত দুই বছর ধরে। আমাদের শিক্ষকরা বন্ধুর মতন। একটা পরিবারের মতন। আবেগ-অনুভ‚তিপূর্ণ ও আনন্দময় এক বিভাগ।

এ ধরণের ব্যতিক্রমী কার্যক্রম সম্পর্কে বিভাগের প্রধান দিলরুবা আক্তার বলেন, আমাদের মূলশক্তি সৃজনশীল তরুণ শিক্ষক এবং তাদের পরিকল্পনার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সাড়া প্রদান। শ্রেণিকক্ষ ও শ্রেণিকক্ষের বাহিরে সমান গুরুত্ব প্রদান করাই এই কর্মকাণ্ডের মূল কারণ।

তিনি বলেন, মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন, আত্মীক বন্ধন তৈরীর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা সংস্কৃতির অধ্যয়ন করে। ওরা যে দক্ষতা অর্জন করছে তাই তাদের কর্মজীবনে অভাবনীয় সফলতা আনবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

এমআইআর/ একেএস