• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ০৭ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৪:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৪:১৭ পিএম

৪ শর্তে ইসি মাহবুবকে সংসদ লাইব্রেরি ব্যবহারের অনুমতি

৪ শর্তে ইসি মাহবুবকে সংসদ লাইব্রেরি ব্যবহারের অনুমতি
গ্রন্থাগারের প্রতীকী ছবি
মাহবুব তালুকদার

‘‘মাহবুব তালুকদার মূলত কথা সাহিত্যিক। তিনি গ্রন্থাগারের বিভিন্ন ধরনের উপন্যাস ও গবেষণা-ধর্মী বই পড়েন। সাধারণত সংসদের অধিবেশন চলাকালীন বাইরের কেউ লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু বিশেষ অনুমতি নিয়ে অধিবেশন চলাকালীন তাকে লাইব্রেরি ব্যবহারের করতে দেয়া হয়েছিল’’

..............................

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে ৪ শর্তে জাতীয় সংসদের লাইব্রেরি ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। শর্তগুলো হল- লাইব্রেরি থেকে বই ইস্যু করে বাসায় নেয়া যাবে না। লাইব্রেরির ভেতরে ধুমপান বা কোনও কিছু খাওয়া যাবে না। কোনও মোবাইল বা ক্যামেরায় কিছু ধারণ করা যাবে না। গ্রন্থাগার ব্যবহারের সময় নিরবতা পালন করতে হবে।

জানা গেছে, উল্লেখিত শর্ত মেনে সংসদ লাইব্রেরি ব্যবহার করছেন নির্বাচন কমিশন বৈঠকে একাধিকবার নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়ে খবরের শিরোনামে আসা কমিশনার মাহবুব তালুকদার।

সংসদ সূত্র জানায়, প্রথমে গত ১ আগস্ট থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি সংসদের লাইব্রেরি ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছিলেন। কিন্তু পরে বিশেষ বিবেচনায় এই সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু তিনি লাইব্রেরি থেকে কোনও বই বা ডকুমেন্ট বাইরে নিয়ে যেতে পারছেন না।

মাহবুব তালুকদারকে বই ইস্যু না করা সম্পর্কে জানতে চাইলে গ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক জেব-উন-নেছা মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দৈনিক জাগরণকে বলেন, আমাদের গ্রন্থাগারের একটা নীতিমালা আছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা পদাধিকার বলে গ্রন্থাগারের সদস্য। শর্ত সাপেক্ষে শুধু তাদের নামেই বই ইস্যু করা হয়। এছাড়া সংসদের কর্মকর্তাদের নামে বই ইস্যু করা হয়। তারা বাসায় নিয়ে গিয়ে বই পড়তে পারেন। এই বাইরে আর কারর নামে বই ইস্যুর সুযোগ নেই। তিনি যদি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানেরও কেউ হন- তাও আমরা কিছুই করতে পারি না। আমাদের গ্রন্থাগারে অনেকেই গবেষণা করেন। তাদের নামেও বই ইস্যু করা হয় না।

গ্রন্থাগারের একাধিক ব্যক্তি জানান, মাহবুব তালুকদার মূলত কথা সাহিত্যিক। তিনি গ্রন্থাগারের বিভিন্ন ধরনের উপন্যাস ও গবেষণা-ধর্মী বই পড়েন। সাধারণত সংসদের অধিবেশন চলাকালীন বাইরের কেউ লাইব্রেরি ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু বিশেষ অনুমতি নিয়ে অধিবেশন চলাকালীন তাকে লাইব্রেরি ব্যবহারের করতে দেয়া হয়েছিল।

জানা গেছে,  অধিবেশন না থাকলে সংসদের লাইব্রেরিটি রোব-বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়। অধিবেশনকালে সকাল ৯টা থেকে বৈঠক শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়। অধিবেশন চলাকালীন সময় শুক্র ও শনিবারও লাইব্রেরি খোলা থাকে। এ দু’দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত লাইব্রেরি ব্যবহার করা যায়।

সংসদের পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, দেশ-বিভাগের পর ১৯৪৮ সালে ৫ হাজার পুস্তক ও ৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে ঢাকায় পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদ গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫৬ সালে এর নামকরণ করা হয় পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদ গ্রন্থাগার। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তেজগাঁওয়ের পুরাতন সংসদ ভবনে গণপরিষদ গঠিত হলে সেখানে গ্রন্থাগারও প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ গঠিত হলে এ গ্রন্থাগারকে ‘জাতীয় সংসদ লাইব্রেরি’ নামকরণ করা হয়। ১৯৮৫ সালে এ গ্রন্থাগারকে শেরে বাংলা নগরের বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত করা হয়। আইন প্রণয়ন কাজে সংসদ সদস্যগণকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহায়তা করাই জাতীয় সংসদ গ্রন্থাগারের মূল উদ্দেশ্য।

তিনি আরও জানান, গ্রন্থাগারে বর্তমানে প্রায় ৮৫ হাজার পুস্তক, সাময়িকী, গেজেট, সংসদ বিতর্ক, কমিটি রিপোর্টসহ বিভিন্ন দুস্প্রাপ্য প্রতিবেদন সংরক্ষিত আছে। ১৯৭৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রকাশিত প্রধান দৈনিক পত্রিকাসমূহ; বঙ্গীয় আইন পরিষদের বিতর্ক (১৯৩৭-১৯৪৬); পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক আইনসভা বিতর্ক (১৯৪৮-১৯৬৯); পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ বিতর্ক (১৯৪৭-১৯৬৯); হাউস অব কমন্স বিতর্ক (যুক্তরাজ্য) (১৮০৯-১৯৮০); পাকিস্তান গেজেট (১৯৪৮-১৯৭১); বাংলাদেশ গেজেট (১৯৭১-অদ্যাবধি); বাংলাদেশ গণপরিষদ বিতর্ক ; বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ বিতর্ক আছে।

২৪টি শিরোনামের ৬০টি দৈনিক জাতীয় পত্রিকা এবং দেশি-বিদেশি ৯টি ম্যাগাজিন কেনা হয় লাইব্রেরির জন্য। 

এইচএস/এসএমএম

আরও পড়ুন