• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০১৯, ০১:১০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ১৩, ২০১৯, ০১:১৩ পিএম

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি করে দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী

নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি করে দেয়া হবে : প্রধানমন্ত্রী
‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : টিভি থেকে নেয়া

যেখানে নদী ভাঙন হবে, সেখানেই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাড়ি তৈরি করে দেয়া হবে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বাজেটে একশ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নদীগুলোতে পানির প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে আমরা সেগুলো ড্রেজিং করছি। তাছাড়া ভাঙন রোধে নদীশাসন ও বাঁধ দেয়ার কাজ চলছে।

রোববার (১৩ অক্টোবর) ‘আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ৬৪ জেলায় ১১ হাজার ৬০৪টি দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি ও ১৪ জেলায় ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে এখন বাংলাদেশ শুধু উন্নয়নে রোল মডেল না, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলাও স্থান পেয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকার খুব সচেতন। এ জন্য সরকার বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সম্প্রতিক দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা কমে এসেছে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমরা একটি ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে বাজেট থেকে বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা সাইক্লোন সেন্টারের জন্য আমরা রাস্তা করে দিচ্ছি। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় আমরা দুর্যোগসহনীয় বাসগৃহ করে দিচ্ছি। বর্তমানে দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রায় ৫৬ হাজার প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী আমাদের রয়েছে। তা ছাড়া ৩২ হাজার নগর স্বেচ্ছাসেবক, ২৪ লাখ আনসার-ভিডিপি, ১৭ লাখ স্কাউট, ৪ লাখ বিএনসিসি ও গার্লস গাইডের ৪ লাখ সদস্য দুর্যোগের সময় কাজ করছে। সরকার সারা দেশে দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় এরইমধ্যে ৩৭৮টি মুজিব কেল্লা ও উপকূলীয় অঞ্চলে ৩ হাজার ৬৮টি বহুমুখী সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করেছে। আরও ১ হাজার ৬৫০টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। দুর্যোগের সময় প্রতিবন্ধীদের জন্যও বিভিন্ন পদক্ষেপ হয়েছে। 
 
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। কারণ, নেপালে যখন ভূমিকম্প হলো আমরা আমাদের এই বিমানবন্দর খুলে দিয়েছিলাম, তারা যেন এটা ব্যবহার করতে পারে। এখান থেকেই সমস্ত রিলিফের জিনিস ট্রাকে করে নেপালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেছিলাম। এর পর আমি আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোকে বলেছি, যেকোনো দুর্যোগে তার সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। কারণ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে একে অপরকে সহযোগিতা করা- এটা আমাদের কর্তব্য।
     
তিনি জানান, কৃষক লীগের মাধ্যমে আমরা বৃক্ষরোপন কর্মসূচি পহেলা আষাঢ় থেকে পালন করছি। আমাদের সকল কর্মীদের উপর নির্দেশ আছে প্রত্যেকে অন্তত ৩টি করে গাছ লাগাবে। প্রতি বছর এটা আমরা করে যাচ্ছি। বৃক্ষরোপনের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনি পালন করাই আমাদের লক্ষ্য। সরকারে আসার পর থেকে বনভূমি যেন বৃদ্ধি পায় এর পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি।  

’৯১ সালের ঘুর্ণিঝড়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ’৯১ সালে ঘুর্ণিঝড়ে যারা ক্ষমতায় ছিল প্রকৃতপক্ষে তারা কোনো খবরই জানত না। যেহেতু আমাদের সংগঠন আছে, সারা বাংলাদেশে আমি খুব ভোরেই টেলিফোন পাই। আমাকে বিভিন্ন উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ফোন করে। ঘুর্ণিঝড়ে সেখানে যে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরো উপকূলীয় অঞ্চল ক্ষতির সম্মুখীন হয়, চট্টগ্রামই বেশি ক্ষতি হয়। কিন্তু বিষয়টা সম্পর্কে তখনকার সরকার একেবারেই নীরব ছিল। তখন পার্লামেন্ট চলছিল, পার্লামেন্টে বিষয়টি আমি তুলে ধরলাম। পার্লামেন্টে আমি তখন বিরোধী দলের নেতা, প্রধানমন্ত্রী ছিলেন খালেদা জিয়া। তিনি চট করে উঠে বললেন, যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরেনি। তখন আমি জিজ্ঞাস করতে বাধ্য হয়েছিলাম, কত মানুষ মরলে আপনার তত মানুষ হবে? 

অনুষ্ঠান শেষে দুর্যোগ ব্যবস্থা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

উল্লেখ্য, প্রতিবছর ১৩ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন