• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ১২:৩৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০১৯, ১২:৩৮ পিএম

বিমান নিরাপদ উড্ডয়নের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

বিমান নিরাপদ উড্ডয়নের তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য তাগিদ দিয়ে সামরিক ও বেসামরিক বিমান চলাচলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মনে রাখবেন, পেশাগত দক্ষতা ও সততার কোনো বিকল্প নেই। আর দেশের মান মর্যাদাও এর সঙ্গে জড়িত। এ সময় তিনি বিমান বাহিনী ও বিমান ভ্রমনে বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আমাদের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিমান ভ্রমনকে আরও সহজতর করবে। এবং পৃথিবীর আরও অনেক দেশের সঙ্গে নতুন নতুন রুট সৃষ্টিতে সহায়তা করবে। সেই সঙ্গে আমাদের পর্যটন শিল্পের দ্রুত বিকাশ ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সুরক্ষা সেমিনার-২০১৯ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করেন বাংলাদেশ বিমান এবং বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিমান ভ্রমন নিরাপদ আরামদায়ক ও সহজতর করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এ জন্য আমরা শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ৩য় টার্মিনাল স্থাপন করছি। তার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে এখন আমরা যে পরিমাণ যাত্রী সেবা দিতে পারি, আগামীতে এর আড়াইগুণ বেশি অর্থাৎ বছর প্রায় ১২ মিলোয়নের বেশি যাত্রী সেবা প্রধান করা সম্ভব হবে। আমরা কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আরও উন্নত ও আন্তর্জাতিকমানের করতে চাই। এছাড়া বাগেরহাটে আরও একটি বিমানবন্দর নির্মাণ করারও লক্ষ্য আছে আমাদের।’ 
‘ইতিমধ্যে বিমান বাহিনীতে স্টেট অফ আর্থ-থ্রিডি হেলিকাপ্টার সিসুলেট স্থাপন করা হয়েছে। যা থেকে আমাদের পাইলটগণ রিয়েল টাইম ফ্লাইং-এর অভিজ্ঞতা অর্জন করে বিশেষভাবে উপকৃত হচ্ছেন’ বলেও এ সময় উল্লেখ করেন তিনি।  

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত পৌনে ১১ বছরে বিমান বহরে আমরা বোয়িং কম্পানির ৪টি অত্যাধুনিক ড্রিম লাইনারসহ মোট ১০টি বিমান আমরা সংযুক্ত করেছি। আরও দুটি ক্রয় করার আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি। কারণ আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, আমরা বিশ্বের সাথে আকাশ পথের যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি নিউইর্য়ক, টরেন্টো, সিডনির মত দূরবর্তী গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবো। এ ব্যাপারে আমরা আগ্রহী। এ লক্ষ্যে সিভিল এ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষকে ক্যাটাগরি-১ এ উন্নত করণের কাজ এগিয়ে চলছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এবং বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ সমন্বিতভাবে কাজ করে নিরাপদ বিমান উড্ডয়ন, চলমাল, অবতরণ নিশ্চিত করে যাচ্ছে। এতে আমাদের বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে পারস্পারিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হয়েছে। পর্যায়ক্রমে উন্নত যুদ্ধ বিমান, র‌্যাডার ও অন্যান্য সরঞ্জামাদী ক্রয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা হবে। আর পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমানকে আধুনিকীকরণের জন্য নানাভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এবং নতুন র‌্যাডার স্থাপন থেকে শুরু করে আরও অন্যান্য পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। 

তিনি বলেন, এ বছরে ২৮শে ফেব্রুয়ারি আমরা জাতীয় সংসদে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ্যাভিয়েশন এন্ড এ্যারো স্পেস বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ করেছি। আমরা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছি, কারণ বিশ্বমানের এ্যাভিয়েশন শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্য আমরা অর্জন করতে চাই। যা অচিরের শিক্ষার কার্যক্রম শুরু করবে বলে আমরা আশা করি। এটা প্রতিষ্ঠিত হবে আমাদের একটি জেলা লালমনির হাটে।

‘আমরা ২০১১ সালে বঙ্গবন্ধু অ্যারোনোটিক্যাল সেন্টার স্থাপন করেছি। নিটক ভবিষ্যতে এই সেন্টারে যুদ্ধাবিমানসহ ব্যবহৃত বিমানও মেরামত করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশা রাখি।’ 

‘সৈয়দপুর বিমানবন্দর আন্তর্জাতিকমানের করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের পাশের দেশ যেমন- নেপাল, ভূটান ও ভারতের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ আরও সহজতর করতে চাই। ওই দেশগুলোও যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে এ জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে একটি আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে আমরা গড়ে তুলতে চাই। ইতিমধ্যে আমরা তার কাজ শুরু করেছি। যা আন্তর্জাতিকমানেরই একটি বিমানবন্দরে উন্নতি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র সাড়ে তিন বছরে যুদ্ধ বিদ্ধস্থ পূর্ণগঠিত করে স্বল্পোন্নত দেশে রুপান্ত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তাই বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে তিনি একটি আধুনিক, শক্তিশালী বিমান ও পেশাদার বাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন।

এএইচএস/টিএফ

আরও পড়ুন