• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২৭, ২০১৯, ১২:১৯ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২৭, ২০১৯, ১২:৩৮ পিএম

পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের

পেঁয়াজ নিয়ে কারসাজি, নাভিশ্বাস ক্রেতাদের

রাজধানীসহ সারাদেশে লাগামহীনভাবে দফায় দফায় বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমুখী দামে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে। তাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। দুদিনের ব্যবধানে মসলাজাতীয় এই পণ্যের দাম পাইকারিতে কেজিতে ৮-১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। সেখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং চাহিদা কমে আসায় কমতির দিকে রয়েছে পেঁয়াজের বাজার। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা এটা মানতে নারাজ। তারা লাগামহীনভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। মিয়ানমার ও চীন থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হলেও দাম কমেনি। বরং প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৫ থেকে ২৫ টাকা বেড়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি শনিবার (২৬ অক্টোবর) এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, এবার মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে পেঁয়াজের সেই চালান চলে আসলে দাম কমে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে আসবে।  

মাত্র ১ দিনের ব্যবধানে বর্তমানে দুই ধরনের পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি উঠেছে ১১০ টাকায়। বেশ কিছুদিন দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকায় স্থির ছিল। আমদানি করা পেঁয়াজ নেমেছিল ৯০-৯৫ টাকায়। অর্থাৎ দেশি পেঁয়াজের প্রতি কেজিতে ১০ টাকা এবং আমদানি করা পেঁয়াজে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে।

শনিবার পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের কেজি এখন ১১০ থেকে ১১৫ টাকা। আর খুচরা বাজারে দাম উঠেছে ১২০ টাকায়। আমদানি ও সরবরাহ কমায় আরেক দফা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

কারওরান বাজার ও কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি ও আমদানি পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারেই দেশি পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকার ওপরে। আড়ত ভেদে দামের তারতম্য লক্ষ্য করা গেছে। কোনও কোনও আড়তে পেঁয়াজ ১১৫ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে যেখানে আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল তা সপ্তাহের ব্যবধানে এখন ১০৫ থেকে ১১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৮ থেকে ৯০ টাকা দরে। মিয়ানমার থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০৫ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ এর থেকে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর অন্যান্য বাজারগুলোতে বড় আকারের পেঁয়াজ ১১৫ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী সোলায়মান জানান, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ দেখা গেলেও গত সপ্তাহের থেকে পেঁয়াজের সরবরাহ কমেছে। আমরা দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি করছি। পেঁয়াজের দাম আরো বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

আরেক পাইকারি বিক্রেতা অলিউল্লাহ বলেন, পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না। বাজারে নতুন পেঁয়াজ উঠতেও অন্তত দুই মাস বাকি আছে। তখন হয়তো পেঁয়াজের দাম কমবে।

বিক্রেতা আল আমিন বলেন, মিসরের পেঁয়াজ এখন ৯৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অথচ মাস খানেক আগে যখন আমদানির সুযোগ দেয়া হয় তখন এই পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিতে ৬০ টাকা।

কারওরান বাজারের ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান মোস্তফা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম খুব বেশি ওঠা-নামা করছে। মোকামগুলোতে দাম বেড়েই চলছে। বেশি দামে কিনে আনায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আগের চেয়ে এখন পেঁয়াজের বিক্রিও কম। দাম বাড়তি থাকায় আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

বাজারে ভারতীয় নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু করেছে এমনটাই বলেন পাইকারি বিক্রেতা কাদের মিয়া। তিনি বলেন, শ্যামবাজারে নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই হয়তো বাজারে দেশি পেঁয়াজ উঠতে শুরু করবে। তখন পেঁয়াজের দাম নাগালে আসবে।

কারওরান বাজারে পেঁয়াজে কিনতে আসা ফার্মগেটের বাসিন্দা রহিম বলেন, দাম বাড়ায় আগের চেয়ে এখন পেঁয়াজ কম কিনি। তারপরও তো আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে। বাজার খরচ সামাল দিতে গিয়ে এতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এইচএম/একেএস