• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৯:১৩ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জানুয়ারি ২৪, ২০২০, ০৯:২০ পিএম

সরকারের ধারাবাহিকতা দেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান করেছে : প্রধানমন্ত্রী

সরকারের ধারাবাহিকতা দেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান করেছে : প্রধানমন্ত্রী
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দলের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটি এবং উপদেষ্টা কাউন্সিলের যৌথ সভায় বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা - ছবি : পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতায় তার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা দেশের অগ্রগতি দৃশ্যমান করেছে। জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটানোর লক্ষ্যে সরকারের প্রয়াসে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে তিনি দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনা শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দলের কেন্দ্রীয় ওয়ার্কিং কমিটি এবং উপদেষ্টা কাউন্সিলের যৌথ সভায় বক্তৃতাকালে একথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয়লাভের পর থেকে একটানা তিন মেয়াদের জন্য সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। আমাদের সরকারের ধারাবাহিকতার ফলে দেশের উন্নয়ন দৃশ্যমান হচ্ছে এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে। দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে জাতির জনকের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ইনশাল্লাহ, আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে পারব।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তৃণমূল এবং পল্লী এলাকায় বসবাসকারী জনগণ যেন আমাদের সকল অর্জনের সুফল পায় সেই লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করা। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছি এবং এই কাজ অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা উচ্চ প্রবৃদ্ধি হার অর্জন করেছি এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে আমরা ভালো অবস্থানে রয়েছি। আমরা সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রাখব।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জাতীয় পর্যায়ে মুজিব বর্ষ উদযাপনের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন করবে। আমরা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত মুজিব বর্ষ উদযাপন করব এবং এরইমধ্যে ক্ষণগণনা শুরু করেছি। আমরা ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করব।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে তার নাম একেবারে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু এখন আর কেউ তার নাম মুছতে পারবে না, কারণ তিনি সংগ্রাম করেছিলেন এবং সারাজীবন দেশের মানুষের জন্য কষ্ট সহ্য করেছিলেন। তার ২৪ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং জাতির পিতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে স্বাধীন করেছিলেন তখন ৮২ শতাংশের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করত। আওয়ামী লীগ সরকার দারিদ্র্য হারকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে যেহেতু আমরা জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণ করছি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদিতে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   - ছবি : পিআইডি 

এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে এই শ্রদ্ধা জানান।

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রথমে জাতির পিতার সমাধি সৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান জানাতে সেখানে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে দলের পক্ষ থেকে সমাধি সৌধের বেদিতে আরেকটি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধের বেদিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   - ছবি : পিআইডি 

তারা সেখানে ফাতেহা পাঠ করেন এবং বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করে অনুষ্ঠিত বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন। সেখানে অনুষ্ঠিত একটি মিলাদেও তারা অংশ নেন। মোনাজাতে দেশ ও জাতির অব্যাহত শান্তি, সমৃদ্ধি এবং অগ্রগতি কামনার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্ট সচিবগণ এবং বিশেষ সহকারীগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, সকাল ১১টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার পৈত্রিক নিবাস গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এসে পৌঁছান। টুঙ্গিপাড়া পৌঁছেই প্রধানমন্ত্রী সরাসরি বঙ্গবঙ্গুর সমাধিসৌধে যান এবং সেখানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত এবং ফাতেহা পাঠ করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিকে ফাতেহা পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা   - ছবি : পিআইডি 

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর এটাই ছিল টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর। গত ২০ এবং ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনা পর পর ৯ম বারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের টানা দ্বিতীয় বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সূত্র : বাসস

এফসি