• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১, ০৯:৫৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১, ১০:৫৮ এএম

রিজার্ভ ফের ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

রিজার্ভ ফের ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

করোনা মহামারির মধ্যেই বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন ফের ৪৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে গত ৩০ ডিসেম্বর রিজার্ভ ৪৩ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করে।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) নভেম্বর-ডিসেম্বর মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধের পর অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক ৪২ বিলিরয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে এক মাস না যেতেই সেই রিজার্ভ বেড়ে আবার ৪৩ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিনের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।

এই রিজার্ভ দিয়ে প্রতি মাসে চার বিলিয়ন ডলার হিসেবে ১০ মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, একটি দেশের কাছে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর সমপরিমাণ বিদেশি মুদ্রার মজুত থাকতে হয়।

বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ-এই ৯টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এই দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে তার বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করতে হয়।

আকুর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মেয়াদের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হবে মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে।

তার আগে রিজার্ভ ৪৪ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করবে বলে আশা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

মূলত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর ভর করেই রিজার্ভ একটার পর একটা রেকর্ড গড়ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান।

জাগরণকে তিনি বলেন, “রেমিট্যান্সের বাইরে বিদেশি ঋণ-সহায়তা বৃদ্ধিও রিজার্ভ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এই রিজার্ভ কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলায় সরকারকে সাহস জোগাচ্ছে।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, গত ১৫ ডিসেম্বর রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়। দুই সপ্তাহে রিজার্ভে যোগ হয় আরো এক বিলিয়ন ডলার।

গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১০ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভে ছিল ৩২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার।

গত কয়েক বছর ধরেই রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ১০ বছর আগে ২০০৯-১০ অর্থবছরের জুন শেষে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে সেই রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায়।

৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে ২০১৯ সালের অক্টোবরে। গত বছরের ৩০ জুন সেই রিজার্ভ বেড়ে ৩৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। অক্টোবরের ৮ তারিখে ছাড়ায় ৪০ বিলিয়ন ডলার।

মহামারির মধ্যেই চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।

নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৬ কোটি ২৬ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। যা গত বছরের জানুয়ারির চেয়ে প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।

সব মিলিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ১৪ দশমিক ৯১  বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

আর জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে ২২ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের ১ দশমিক ১ শতাংশ কম।

বিদেশি ঋণ-সহায়তার গত ছয় মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এতে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে ২৮৮ কোটি ৫০ লাখ ডলারের বিদেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২ দশমিক  শূন্য ৮ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে এই ছয় মাসে আমদানি ব্যয় কমেছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।