• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০১৯, ১০:৪১ এএম

বরিশালে

বিআইডব্লিউটিএর শত কোটি টাকার প্রকল্পে বাধা সিটি মার্কেট

বিআইডব্লিউটিএর শত কোটি টাকার প্রকল্পে বাধা সিটি মার্কেট

 

বরিশাল আধুনিক নৌ বন্দরে শত কোটি টাকার প্রকল্পের বাধা বহুমুখী সিটি মার্কেট। এই প্রকল্পের জন্য সিটি মার্কেট ভেঙে ফেলা হবে কিনা এর কোন সিদান্ত পাওয়া যায়নি। ফলে শত কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।

এদিকে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) মালিকানাধীন সিটি মার্কেটের প্রায় ২শ ব্যবসায়ী। যদিও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে এই সমস্যা সমাধানে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত টিম রয়েছে। পাশপাশি সিটি মার্কেটে থাকা ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে বিষয়ে ৬ সদস্যের আরও একটি কমিটি করা হয়েছে। 

বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩ হাজার ২শ কোটি টাকার ‘বাংলাদেশ রিজোনাল ট্রান্সপোর্ট বিআরডব্লিউটিপি ওয়ান প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওয়াতায় চট্রগ্রাম, ঢাকা, আশুগঞ্জ, বরিশাল, চাঁদপুরে উন্নয়ন করা হবে।

এর মধ্যে বরিশালে আধুনিক নৌ বন্দর সম্প্রসারণ, টার্মিনাল ভবন বর্ধিতকরণ ও নৌ যাত্রীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষে বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হবে। এরইমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদল বরিশাল নৌ বন্দরে কি কি চাহিদা রয়েছে তার ভালো দিক ও মন্দ দিক খতিয়ে দেখছেন। তাদের মতামত নিয়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে উন্নয়ন কাজ শুরু করা হবে।

তবে বরিশাল সিটি করপোরেশন থেকে জানানো হয়েছে, মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় তারা মার্কেট স্থানান্তরের ক্ষতির দিকটি তুলে ধরেছে। সেখানে বিসিসি কোটি কোটি টাকা খরচ করেছে। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর মোটা অঙ্কের টাকা ব্যাংক ঋণ রয়েছে। মার্কেট সরানো হলে ব্যবসায়ী পরিবারগুলোতে মানবিক বিপর্যয় ঘটবে বলে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে বিসিসি কর্তৃপক্ষ।

এসব দিক বিবেচনা করে সিটি মার্কেট বহাল রেখে নদী বন্দরের ঠিক উল্টো দিকে চরকাউয়া খেয়াঘাট সরিয়ে নৌবন্দর সম্প্রসারণের তারা প্রস্তাবনা দিয়েছে। এরইমধ্যে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান ও বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান স্থানটি পরির্দশন করেছেন।

সিটি করপোরেশনের বাজার পরির্দশক এসএম আবুল কালাম বলেন, সাবেক নৌ মন্ত্রী ও এ চেয়ারম্যান প্রস্তাবিত স্থান পরির্দশন করেছেন। তারা দেখে বলেছেন, ‘আমরা মনে করেছি এখানে অস্থায়ী ভিত্তিতে ব্যবসা চালানো হচ্ছে। কিন্তু এখানে ৩শ দোকানদার ব্যবসা করছেন স্থায়ী ভিত্তিতে। তাই তাদের উচ্ছেদ করা হবে না বলে ব্যবসায়ীদের নিশ্চিন্তে ব্যবসা করার বিষয়ে বলেছেন মন্ত্রী।

বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা বলছেন, সিটি মার্কেট স্থানান্তর ছাড়া নৌ বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেয়া হয়নি।

জানা গেছে, এক সময় মার্কেটের জমির মালিক ছিল তৎকালীন বরিশাল পৌরসভা। ১৯৬১ সালে নৌবন্দর স্থাপনের জন্য বিআইডব্লিউটিএর কাছে জমিটি হন্তান্তর করা হয়। ২০০৫ সালে বার্ষিক ৩ লাখ ৫ হাজার ১০০ টাকা চুক্তিতে বিআইডব্লিউটিএর কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়ে মার্কেট স্থাপন করে বিসিসি।

বিআইডব্লিউটিএর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, অভ্যন্তরীণ নদী পথ উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ২০১৬ সালে একনেকে অনুমোদিত হয়। এর আওতায় বরিশাল নৌবন্দরে শতকোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়।

এই প্রকল্পের নাম ‘বাংলাদেশ রিজোনাল ট্রান্সপোর্ট বিআরডব্লিটিপি ওয়ান প্রকল্প’। কন্সালটেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে ডিজাইন তৈরি করা হবে। কিন্তু বিসিসির সঙ্গে মার্কেট নিয়ে সমস্যা থাকার কারণে কাজে এগুনো যাচ্ছে না বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

এএস/