• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১, ১০:১৪ এএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২১, ০৪:১৫ পিএম

কে এই রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ?

কে এই রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ?

কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট ১নং ব্লকে তার কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় উগ্রবাদী সংগঠন আরসা’কে দায়ী করেছেন সাধারণ রোহিঙ্গারা। তবে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কে এই মুহিবুল্লাহ, কেন ই বা তাকে হত্যা করা হল।

কে এই মুহিবুল্লাহ?

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচিত একটি নাম মুহিব উল্লাহ। রোহিঙ্গাদের যত সংগঠন ও নেতা রয়েছেন এদের সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ ও তার সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস।

ইউএনএইচসিআরের কক্সবাজার অঞ্চলে নিয়োজিত কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক থাকা মুহিবুল্লাহ উখিয়া-টেকনাফের ৩২ রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে ছিলেন। রোহিঙ্গা নেতা মুহিব উল্লাহ ১৯৯২ সালে রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। তখন থেকেই তিনি টেকনাফ অঞ্চলে বসবাস করে আসছিলেন।

প্রথমে তিনি ১৫ জন সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন ‘আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানরাইটস’ বা এআরএসপিএইচ। স্থানীয় বাংলাদেশি মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ গড়ে তুলেন মুহিবুল্লাহ। ধীরে ধীরে মুহিবুল্লাহ প্রধান পাঁচ রোহিঙ্গা নেতার একজন হয়ে ওঠেন।

দেশের বাইরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে একাধিকবার সফর করেন মুহিবুল্লাহ। কিন্তু ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা ঢল নামার পর পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। সুস্পষ্টভাবে মুহিবুল্লাহর আজকের অবস্থানের মূল উত্থান হয় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ২০১৮ সালে ইউএনএইচসিআরকে সংযুক্ত করার পর। রোহিঙ্গাদের বক্তব্য জানার চেষ্টা থেকেই মদদ পায় মুহিবুল্লাহর সংগঠন এআরএসপিএইচ।

ইংরেজি ভাষা ও রোহিঙ্গাদের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে দক্ষ মুহিবুল্লাহ ধীরে ধীরে প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন বিদেশিদের। ২০১৮- এর জুলাইয়ে র‌্যাব একবার মুহিবুল্লাহকে আটক করে উখিয়া থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশে কোনো প্রকার রেকর্ড ছাড়াই তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর জাতিসংঘ মহাসচিবসহ যত বিদেশি প্রতিনিধি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই রোহিঙ্গা প্রতিনিধি হিসেবে মুহিবুল্লাহ ও তার সঙ্গীদের সাক্ষাৎ করানো হয়েছে। এই মুহিবুল্লাহই মিয়ানমারের পররাষ্ট্র সচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ১৭ দেশের যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২৭ প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করেন- সেখানেও যোগ দিয়েছিলেন মুহিবুল্লাহ।

২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ৩ থেকে ৫ লাখ রোহিঙ্গার মহাসমাবেশ করে তাক লাগিয়ে দেন এবং আনন্দে আত্মহারা করে দেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে লেগে থাকা বিদেশি এনজিওগুলোকে। সমাবেশে মুহিবুল্লাহ বলেছিলেন, নিরাপত্তা আর নিজেদের ভিটা না পেলে কোনো রোহিঙ্গা ফেরত যাবে না। একইসঙ্গে মিয়ানমারকে জুড়ে দিয়েছিলেন পাঁচ দফা শর্ত।


জাগরণ/এমইউ