• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২২, ০৭:৪৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ১৩, ২০২২, ০৭:৪৫ পিএম

নির্বাচনের সময় মন্ত্রীরা দলীয় আচরণ করবেন না : সিইসির আশা

নির্বাচনের সময় মন্ত্রীরা দলীয় আচরণ করবেন না : সিইসির আশা

নির্বাচনের সময় সরকারের মন্ত্রীরা দলীয় আচরণ করবেন না বলেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

তিনি বলেছেন, মন্ত্রীরা কোনো দলের নয়, সরকারের মন্ত্রী হিসেবে কাজ করবেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইসির বিষয় নয়, নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। 

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সিইসি। এর আগে সিইসির সঙ্গে বৈঠক করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। 

বৈঠক শেষে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। নির্বাচনে যেন সবার জন্য সমান সুযোগ থাকে। এ বিষয়ে আমরা কিছু প্রস্তাব দিয়েছি।

নির্বাচনকালীন সরকার প্রশ্নে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার সাংবিধানিক বিষয়। রাজনৈতিক নেতারা যদি একমত তারা সেটা দেখবেন। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বর্তমানে যে আইন আছে, সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। ’

সিইসি বলেন, ‘সব দেশেই দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়। সরকার আর দল ভিন্ন বিষয়। সরকার যেটা রয়েছে, তারা কিন্তু শপথ নিয়েছেন, সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন, সম আচরণ করবেন, পক্ষপাতিত্ব করবেন না। শপথে উনারা বলেন নাই যে আমরা আমাদের দলকে আগামীতে আরও বেশি করে সহযোগিতা করবো। স্বভাবতই উনারা বলেন না। আমার বিশ্বাস উনারা উনাদের শপথটা জানেন।’

কাজী আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারের ধরণ পাল্টে যাবে, তখন সরকার পলিসি নিয়ে কাজ করবে না। নির্বাচনের কাজে ইসিকে সহযোগিতা করতে সরকার বাধ্য। সহায়তা মূলত পুলিশ প্রশাসন ও জনপ্রশাসন আর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কেন্দ্রিক।’

ইসি আয়োজিত সংলাপে বিভিন্ন অংশীজনদের পরামর্শের কথা তুলে ধরে সিইসি বলেন, ‘মূল বিরোধী দল নির্বাচনে না এলে নির্বাচন স্বচ্ছ হোক, অস্বচ্ছ হোক, যাই হোক তার গুরুত্ব, গ্রহণযোগ্যতা অনেক কমে যাবে। ইসি চায় একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হোক।’

তিনি নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসারও আহ্বান জানান।

সিইসি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। নির্বাচন যদি সহিংসতার কারণে বিঘ্নিত হয় তাহলে ইসির ক্ষমতা আছে নির্বাচন বাতিল করার। বড় ধরণের সহিংসতা হলে পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করে পারবে ইসি।’ 

ইসি সংসদ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণ করতে পারব কি না জানি না। বিষয়টা আপেক্ষিক। ইসির চেষ্টা থাকবে।’

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, নাগরিক সমাজের সঙ্গে ইসি যে বৈঠক করেছিল তার ফলোআপ হিসেবে তারা আবার বৈঠক করেছেন। তারা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চান। নির্বাচনে যেন সবার জন্য সমান সুযোগ থাকে। এ বিষয়ে তারা কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে পদে থেকে সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রিপরিষদ সদস্যরা নির্বাচন করতে পারেন। এই বিষয়টি ইসি বিবেচনা করে দেখতে পারেন, এটা পরিবর্তন করার সুযোগ তারা নিবেন কিনা বা প্রস্তাব করবেন কি না ‘ 

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার, তার চরিত্র কি রকম হবে, তার আচরণ কি রকম হবে, গঠন কি রকম হবে, এই ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে তারা সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব দেননি। এই বিষয়টি যেহেতু দেশবাসীর উদ্বেগ আছে, সে দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের আচরণ কি রকম হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ইসি তাদের পরামর্শ সরকারকে দিতে পারে। প্রয়োজনে আইনি সংস্কার করার জন্য প্রস্তাব করতে পারে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব  সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা। এ জন্য তাদের নিজস্ব বিশ্লেষণে তারা যদি মনে করে যে, কোনো সাংবিধানিক বা আইনি সংস্কারের প্রয়োজন, তাহলে তারা সেই প্রস্তাব করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন কি করবেন না, সেটা পরের বিবেচনার বিষয়। 

এ ছাড়াও নির্বাচনের সময় তথ্য প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা যেনো সৃষ্টি না হয়, গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের যেনো অবাধে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যমকে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের সুযোগ দেওয়া, দেশি বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অবাধে পর্যবেক্ষনের সুযোগ দেওয়া, নির্বাচনকালীন তথ্য বিস্তারিত প্রকাশ করারও প্রস্তাব করেছে টিআইবি।

ইভিএমের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে উল্লেখ ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তারা বলেছেন, ইভিএমে যাতে কোনো কারিগরি ত্রুটি না থাকে সেটা নিশ্চিত করা হয় এবং অংশীজনেরকাছে এটি গ্রহণযোগ্য হয়। 

 

এসকেএইচ//