• ঢাকা
  • রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৯, ০৭:২৯ পিএম

দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে টিআইবি

দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে টিআইবি


'দুর্নীতির ধারণা সূচক ২০১৮' প্রসঙ্গে অবহিত করে সুপ্রিম কোর্টকে একটি চিঠি দিয়েছে ট্রান্সফারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিটি গত ২৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল জাকির হোসেনের বরাবর লেখা হয়।

চিঠির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথিপত্রও সরবরাহ করা হয় দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে। চিঠিতে বলা হয়, 'গত ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ বার্লিনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সফারেন্সি ইন্ট্যারন্যাশনাল  (টিআই) কর্তৃক দুর্নীতির ধারণা সূচক (করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স-সিপিআই) ২০১৮ বিশ্বব্যাপী একযোগে প্রকাশিত হয়েছে। টিআইবি’র ধানমণ্ডিস্থ কার্যালয়ে আজ (২৯ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিপিআই ২০১৮ এর ফলাফল টিআই - এর বাংলাদেশ চ্যাপ্টার হিসেবে টিআইবি কর্তৃক স্থানীয় গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরা হয় ।

চিঠিতে বলা হয, ‘উল্লেখিত বিষয়ে কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে বা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে তা আমাদের জানাতে দ্বিধা করবেন না।’

প্রসঙ্গত, সম্মেলনে প্রকাশ করা সূচক অনুসারে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণা সূচকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। সদ্যবিদায়ী এ বছর সূচকে বাংলাদেশ ১০০ এর মধ্যে স্কোর করেছে ২৬। আর আগের বছর ২০১৭ সালে এটি ছিল ২৮। ওই বছর বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থান ছিল নিচের দিক থেকে ১৭। ২০১৮ তে তা হয়েছে ১৩।

সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দুদকের কাজ নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে সীমাবদ্ধ উচ্চ পর্যায়ে নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো টলারেন্সের’ যে ঘোষণা আছে সেটা কার্যকর করার জন্য পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় দুর্নীতি বিরোধী কৌশল প্রণয়ন করা দরকার। সংসদকে জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা দরকার। আসামিদের পরিচয় ও রাজনৈতিক অবস্থান নির্বিশেষে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

ওপরের দিক থেকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯। ধারণা সূচকে পাকিস্তানের স্কোর ৩৩, ওপরের দিক দেশটির অবস্থান ১১৭। ভারতের অবস্থান ৭৮। তাদের স্কোর ৪১।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে একযোগে ওইদিন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) কার্যালয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিতে আমাদের অবস্থান বৈশ্বিক অবস্থানের চেয়ে অনেক নিচে। এখানে আত্মতুষ্টির কোনো অবস্থা নেই।’

দুর্নীতির ধারণা সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পরে আছে শুধু আফগানিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভুটান কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় ২৫ নম্বরে স্থান পেয়েছে। সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় আছে ডেনমার্ক। সবচেয়ে বেশি সোমালিয়া। দেশটি গত ১২ বছর ধরে একই অবস্থানে আছে।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ার কারণ এখানে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও ঘোষণা থাকলেও এটার বাস্তবায়ন সেভাবে নেই। উচ্চ পর্যায়ের লোকদের বিচারের আওতায় আনার সেরকম উদাহরণ কম। ব্যাংক খাতে অবারিত দুর্নীতি, জালিয়াতি, ভূমি-নদী-জলাশয় দখল, সরকারি ক্রয় খাতে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কারণে দুর্নীতি এক ধরনের ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। দুদক ও অন্যান্য জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল। গণমাধ্যম ও নাগরিক প্রতিষ্ঠানের কাজের ক্ষেত্রও সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগতভাবে অর্থ পাচার হচ্ছে।

মা আ/টিএফ