• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯, ০৫:৪৪ পিএম

বাণিজ্যমেলায় ২শ কোটি টাকার রফতানি আদেশ

বাণিজ্যমেলায় ২শ কোটি টাকার রফতানি আদেশ
বাণিজ্যমেলায় সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি


এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় অংশ নেয়া বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো প্রায় দুইশ’ কোটি টাকার রফতানি আদেশ পেয়েছে। শনিবার মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ তথ্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।  

তিনি বলেন, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৪তম আসরে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ কোটি টাকা রফতানি আদেশ পেয়েছে।

গত বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৩তম আসরে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো ১৬৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার রফতানি আদেশ পেয়েছিলো উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো প্রায় ২০০ কোটি টাকা রফতানি আদেশ পেয়েছে। সে হিসেবে এ বছর রফতানি আদেশ বেড়েছে ৩৫ কোটি টাকা।’ 

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিবছরই আমাদের মেলার ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে, তাতে পূর্বাচলে স্থায়ী বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণেও এ ধরনের মেলা আয়োজন করা সম্ভব নয়। একইসঙ্গে আজ থেকে ১০ বছর পরে এখানে এ মেলা করা যাবে কি-না তা নিয়ে এখন থেকেই ভাবতে হবে।

শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বাণিজ্যমেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব এস এম রেজওয়ান হোসেন এবং রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য।

প্রসঙ্গত, গত ৮ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যমেলা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ব্যবসায়ীদের অনুরোধে সময় একদিন বাড়ায় আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। এবারের মেলায় ১২ ক্যাটাগরিতে ৪২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

টিপু মুনশি বলেন, বাণিজ্যমেলায় এবার বিক্রি ও রফতানি আদেশ ভালো হয়েছে। আমাদের মেলার চাহিদা যেভাবে বাড়ছে, এখানে মেলা করতে হিমশিম খেতে হয়। আগামীতে পূর্বাচলে ৩০ একর জায়গায় এ মেলা আয়োজন করা সম্ভব কি-না, তা এখন থেকেই ভাবতে হবে। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর পর মেলার চাহিদা আরো বাড়বে। কারণ পূর্বাচলে ৩০ একর জায়গা এ মেলার জন্য অপ্রতুল। তবে সেখানে সারা বছর অন্যান্য মেলা চলবে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা সেখানে আয়োজন করা যাবে না। তাই এখন থেকে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে।  

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের মেলায় আমাদের দেশি পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। বিদেশি ক্রেতারা আমাদের পণ্যে আকৃষ্ট হচ্ছে। আগামীতে আমাদের আমদানি কমে যাবে। এছাড়া রফতানিতে আমাদের পোশাক খাতের নির্ভরতা কমিয়ে অন্যান্য পণ্য রফতানি বাড়াতে হবে। পাশাপাশি চিন্তা ও চেতনায় আমাদের আরো এগোতে হবে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, এবারের মেলায় রফতানি আদেশ ভালো হয়েছে। গতবার আমাদের রফতানি হয়েছিল ৪১ বিলিয়ন ডলার। এবার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। ২০৪১ সালে আমাদের রফতানি হবে ৬০ বিলিয়ন ডলার। সবক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো করছে। 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব রেজওয়ান হোসেন বলেন, এবার মেলায় অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা বেড়েছে। আমাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভিশন ২০২১, ২০৪১ ও ডেল্টা প্ল্যান বাস্তবায়ন করা। এজন্য আমাদের ব্যবসা বাড়াতে হবে। আর ব্যবসা বাড়াতে পণ্যের মানের পাশাপাশি সেবার মান বাড়াতে হবে। 

এবারের বাণিজ্যমেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ১১০টি প্যাভিলিয়ন, ৮৩টি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং রেস্তোরাঁসহ ৪১২টি স্টলে মোট ৬৯৫টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। এদের মধ্যে ২২টি দেশের ৫১টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ছিলো। মেলায় এবারই প্রথম অনলাইনে টিকিট বিক্রি করা হয়।মেলায় আসা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য ৫টি বিশ্রামাগার ও প্রতিবন্ধীদের জন্য হুইল চেয়ার ছিল।

উল্লেখ্য, গত বছর ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৩তম আসরে ২০ মিলিয়ন ডলার বা ১৬৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকার রফতানি আদেশ পেয়েছিলো বাংলাদেশি কোম্পানিগুলো। তার আগের বছর ২২তম আসরে মেলায় স্পট অর্ডার এসেছিলো ২৪৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বা ৩০ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার।

২০১৬ সালে স্পট অর্ডার ছিল ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। তবে রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে রফতানির আদেশ ছিলো যথাক্রমে ৯৫ কোটি ও ৮০ কোটি টাকা। তার আগের বছর ২০১৩ সালে রফতানি আদেশ এসেছিল ১৫৭ কোটি টাকা।

আরআই