• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১২, ২০১৯, ০৫:২৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১২, ২০১৯, ০৫:২৭ পিএম

কৃষির আধুনিকায়নই তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করবে : কৃষিমন্ত্রী

কৃষির আধুনিকায়নই তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করবে : কৃষিমন্ত্রী
সেমিনার ও তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৯ অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুল রাজ্জাকসহ অন্যরা-ছবি : জাগরণ

তামাক ও তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো থেকে প্রতিবছর সরকার প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে। তবে পরোক্ষভাবে তারচেয়ে বেশি খরচ হয় তামাকজনিত রোগে আক্রান্তদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয়ের পেছনে। শুধু ঢাকায় যারা বসবাস করেন তারা সঠিকভাবে তাদের ট্যাক্স দিলে তামাক কোম্পানির এই ট্যাক্স পরিহার করা সহজ হবে এবং তামাক উৎপাদনও বন্ধ করা যাবে। তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যাযমূল্য নিশ্চিত করা। কৃষিপণ্যের ন্যাযমূল্য নিশ্চিত করতে কৃষির আধুনিকায়ন, যান্ত্রিকীকরণ এবং রফতানির বাজার অপরিহার্য।

সামগ্রিক অর্থে কৃষির আধুনিকায়নই তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করবে চাষিদের।

রোববার (১২ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পিকেএসএফ এর মিলনায়তনে তামাক বিরোধী জাতীয় প্ল্যাটফর্ম এর উদ্যোগে ‘সেমিনার ও তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৯ ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এ সব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মতে ২০৪০ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশ থেকে তামাক শতভাগ নির্মূল হবে। তবে কৃষিকে সত্যিকার অর্থে বাণ্যিজ্যিক কৃষি, আধুনিক কৃষি করা গেলে ২০৪০ সালের আগেই তামাকমুক্ত সমাজ গড়া যাবে। এরই মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষমাত্র অর্জন সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে সকলের অংশগ্রহণ জরুরি।

অনুষ্ঠানে উপস্থাপনায় দেখান হয়, বিশ্বের তামাক উৎপাদনকারী ২০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২তম। প্রথম অবস্থানে চীন। বাংলাদেশের মধ্যে তামাক উৎপাদনকারী জেলার মধ্যে প্রথম হচ্ছে কুষ্টিয়া জেলা।

তামাক চাষের নিবিরতা ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৪৫% থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২১৩% হয়েছে। এতে আরও দেখানো হয়, সামগ্রিকভাবে তামাক চাষের চেয়ে সবজি চাষ লাভজনক। তামাক উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করা গেলে দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র ভেঙ্গে কৃষি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা সম্ভব।

দেশে তামাক ব্যবহারের চিত্র অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট তামাক ব্যবহারকারী মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৭৮ লোখ। যা মোট জনগোষ্ঠীর (১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব) ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ। ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই হার অনেক বেশি। তামাক ব্যবহারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বছরে নিট ক্ষতির পরিমাণ ওই সময় অনুযায়ী ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। প্রতিবছর সিগারেট ক্রয়ে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশ ও বিড়ি ক্রয়ে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ ব্যয় হয়।বর্তমানে এই ক্ষতির পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেড়েছে। শুধু ধূমপানের কারণেই আয়ুষ্কাল কমে যায় ১০ থেকে ২০ বছর। বিশ্বে যত লোক মারা যায় তার দ্বিতীয় প্রধান কারণ ধূমপান।

অনুষ্ঠানে তামাক বিরোধী জনসচেতনাতা বৃদ্ধিতে অগ্রণী ভূমিকার জন্য প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি উদ্যোগ, গবেষণা ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং বিশেষ পদক প্রদান করা হয় মোট চার জনকে। সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন- চিকিৎসক অধ্যাপক ড. প্রাণ গোপাল দত্ত। পিকেএসএফ এর সভাপতি ড. খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় আধ্যাপক ব্রি. জেনারেল (অব.) আবদুল মালিক।

টিএইচ/এসএমএম