• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৮:১১ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯, ০৮:১১ পিএম

টেকসই উন্নয়ন : আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার

টেকসই উন্নয়ন : আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকার

প্রেক্ষাপট
আর কিছুদিন পরেই বাংলাদেশ উদযাপন করবে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। অনেক রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এদেশের অর্জনও কম নয়। তলাবিহীন ঝুড়ি বলে যে দেশের ভবিষ্যত নিয়ে অবজ্ঞা করা হয়েছিল, যে দেশকে স্বাধীনতা অর্জনের তিন বছরের মধ্যে ভয়াবহ দূর্ভিক্ষ মোকাবেলা করতে হয়েছে সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং গড় প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক। তাই বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সামাজিক কিছু সূচকেও প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিদ্যমান গতানুগতিক উন্নয়ন চিন্তাকে বিবেচনায় নিলেও এখনও প্রায় ২১.৮ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছে যার মধ্যে অতিদরিদ্র রয়েছে ১১.৩ শতাংশ। দেশের একটি বিরাট সংখ্যক মানুষের আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে খুব সামান্য এবং তাতে মৌলিক চাহিদাগুলোর ন্যুনতম মেটাতে পারলেও তাদের বেশিরভাগই মৌলিক অধিকার, মর্যাদাপূর্ণ জীবিকায়ন এবং রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দিক থেকে অনেকদূরে রয়েছে। দেশের সবচেয়ে ধনী ১০ শতাংশ মানুষ যেখানে দেশের মোট আয়ের ৩৮ শতাংশ অর্জন করেন, সেখানে সবচেয়ে গরিব ১০ শতাংশ মানুষ পান মোট আয়ের মাত্র ১ শতাংশ। এই প্রশ্ন এখন প্রবলভাবে উঠছে যে,রাষ্ট্রের যেসকল অর্জন নিয়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো বাহবা কুড়াচ্ছেন তার সুফল কী সবাই সমানভাবে পাচ্ছে?

আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সুফল মুষ্টিমেয় মানুষের হাতেই সীমাবদ্ধ। বিশেষ করে সমতলের আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষ তথাকথিত সামাজিক স্তর, বিন্যাসের একেবারে প্রান্তিক অবস্থান করছে এবং সে কারনে উন্নয়নের খুব সামান্যই তাঁদের ভাগ্যে জোটে। মুক্ত বাজার অর্থনীতি এবং তথাকথিত চুঁইয়ে পড়া উন্নয়ন মডেলে তাঁদের কাছে যা পৌঁছায়, তা একজন মানুষের সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন পারে না। অথচ, স্বাধীনতা সংগ্রামের মূলমন্ত্রই ছিল আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ও বৈষম্যহীনতা। বাংলাদেশের সংবিধানও সবটা না হলেও অনেক অধিকার স্বীকার করে নিয়েছে যার মূলসুর ১৯ (১) অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা নিশ্চিত করিতে রাষ্ট্র সচেষ্ট হইবেন ধ্বনিত হয়েছে।

কিন্তু বর্তমান উন্নয়ন চিন্তা সংবিধানের মূলসুর কীভাবে ধারণ করছে তার নির্মোহ বিশ্লেষণ এখন সময়ের দাবি। বিশেষ করে সমতলের আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষ,তাদের দারিদ্রতা শুধুমাত্র টাকার অংকে মাপা যাবে না, কিংবা মাপা যাবে না ক্যালরির হিসাবেও। তাদের দারিদ্রতা মাপতে আর্থিক-সামাজিক-রাজনৈতিক-ধর্মীয় পরিমাপকপ্রয়োজন হবে। কিন্তু বহুমূখী এই দারিদ্রতা মাথাপিছু গড় আয় দিয়ে মাপতে গিয়ে এবং অধিকারের মতো অবশ্যম্ভাবী একটি দিককে উপেক্ষা করে যে দান-খয়রাতের উন্নয়ন দর্শন তা কিছু সহায়তা হিসেবে গ্রহণযোগ্য হলেও টেকসই উন্নয়নের জন্য কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না। তাই, উন্নয়ন ত্রুটি এবং দৃষ্টিভঙ্গিগত অসামঞ্জস্যতার দরুণ পিছিয়ে পড়া আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রয়োজন অধিকারভিত্তিক উন্নয়ন দৃষ্টিভঙ্গি। বিশেষ করে রাষ্ট্র যখন বৈশ্বিক টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠে পৌঁছাতে জাতীয় অগ্রগতি নিশ্চিত করতে চায় তখন তা আরও অনিবার্য হয়ে ওঠে।

সমতলের আদিবাসী ও দলিত: কিছু প্রাসঙ্গিক তথ্য

সমতলে আদিবাসী মানুষের সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ  যারা যারা দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চলে বাস করে। এই সংখ্যাটি আনুমানিক যার ভিত্তি সংশ্লিষ্ট বিষয়ের কিছু গবেষণা। কিন্তু ২০১১ সালের জনগননায় এই সংখ্যাটিকে ৮ লক্ষের কিছু বেশিদেখানো হয়েছে। এছাড়া পেশা ও বর্ণের ভিত্তিতে বিভাজিত দলিত জনগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫৫ লক্ষ। যদিও এই সংখ্যা নিয়েও সংশ্লিষ্টদের মধ্যে মতদ্বৈততা রয়েছে। শিক্ষা, আয়, কর্মসংস্থান, আবাসন এবং ভূমি মালিকানার মত জীবিকায়নের মৌলিক বিষয়গুলোতে তারা পিছিয়ে আছে। উপরন্তু, বিশেষ করে দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্যমান দৃষ্টিভঙ্গি যার কেন্দ্রে রয়েছে ‘অস্পৃশ্যতা’ যা তাদের বিকাশের পথে অন্যতম বাধা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে নির্বাচনের পূর্বে অঙ্গীকার করেছিলেন জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন করা হবে অথচ, ২০১১ সালে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আদিবাসী শব্দটির পরিবর্তে সংবিধানে উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ইত্যাদি শব্দ যোগ করে। অথচ সংবিধানের ২৮ (১) অনুচ্ছেদে রয়েছে, কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন না করার কথা বলা আছে। দলিত ও সমতল আদিবাসীদের অনন্য সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য বিলীন হয়ে যাচ্ছে। জাতীয় সংসদে সমতলের আদিবাসী সাংসদ রয়েছেন মাত্র একজন, অন্যদিকে কোন দলিত সাংসদ নেই বা সাংসদ নিজেকে দলিত হিসেবে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।সরকার বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করতে বেহাত হচ্ছে সমতলের আদিবাসীদের ভূমি। একইভাবে নগরাঞ্চলে সরকারি ভূমি বেহাত-বেদখল হলেও, বহু বছর যাবৎ খাস জমিতে বাস করে আসা দলিত-হরিজনদের ভূমির মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না, কোথাও কোথাও উচ্ছেদের হুমকিও দেয়া হচ্ছে।

টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ এবং আদিবাসী ও দলিত মানুষের অধিকার

বৈশ্বিক উন্নয়ন অগ্রাধিকার হিসেবে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ১৭টি উন্নয়ন অভিষ্ঠ (এসডিজি) নির্ধারিত হয় যার মূলসুর কাউকে পিছিয়ে রেখে নয় বরং সবাইকে সাথে নিয়েই উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন এবং পরিবীক্ষণ হতে হবে। সরকার এসডিজি অভিষ্ঠে পৌঁছানোর বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে বিস্তারিত কর্ম-কাঠামো প্রণয়ন করেছে। কিন্তু সেই প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং চিন্তায় দলিত ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের বিষয়টি কীভাবে বিবেচনা করা হয়েছে এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হওয়ার কারনে তাঁদের অধিকারভিত্তিক উন্নয়নে কী বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং সেখানে সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব কোন মাত্রায় ছিল তা মূল্যায়ন করা অত্যন্ত জরুরি। আমাদের জানা মতে, সরকারের এসডিজি পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন কমিটি ৬ মাস পরপর অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ করছেকিন্তু সে প্রতিবেদনেদলিত ও সমতলের আদিবাসীদের উন্নয়ন হিস্যা কতোটুকু উঠে আসছে সেটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। এছাড়া তাদের পরিচয়ের সংকট তো রয়েছেই।


টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ঠ ভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা এবং আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর বাস্তবতা
১.১ বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার যেখানে ২৩.২০ শতাংশে নেমে এসেছে, সেখানে দলিতদের মধ্যে তা এখনও ৯০ শতাংশ ও সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে তা ৮০ শতাংশ ;
১.৩ সামাজিক সুরক্ষায় অন্তর্ভুক্ত জনসংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। জাতীয় পর্যায়ে এটি ২৮.৭ শতাংশ  হলেও, দলিত-আদিবাসীদেরবিষয়ে পৃথক কোন তথ্য নেই; 
৩.১০ স্বাস্থ্যকর্মীদের অনুপাত ও স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশগম্যতা নগণ্য। অস্পৃশ্যতার কারণে অনেকেই হাসপাতালে যেতে পারেন না। স্বাস্থ্যসেবায় প্রবেশগম্যতা নিয়ে কোন তথ্য/উপাত্তও নেই;
৪.২ প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণের হার মূলস্রোতধারার মানুষের চেয়ে কম। এবং অ¯পৃশ্যতা ও মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগের অভাবে ঝড়ে পড়ার হারও বেশি। এ বিষয়েও কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য/উপাত্ত নেই;
৫.২ নারীরা প্রতিনিয়ত ঘরে ও বাইরে শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন;
৬ নিরাপদ খাবার পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন নেই, বিশেষত দলিত কলোনিগুলোতে অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়;
৮.১ জিডিপির অংশ সামান্য,দেশের গড় আয় বৃদ্ধি পেলেও তা দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি। বাংলাদেশের বর্তমান গড় আয় ১৭৫১ ডলার বাটাকার মূল্য ১,৪৩,৭৮৯ টাকা , কিন্তু দলিতদের ক্ষেত্রে তা ৭৮,২৫২ টাকা এবং আদিবাসীদের ক্ষেত্রে তা ৫৯,৮৮০ টাকা ;
৮.৩ অর্থনৈতিক সেবাসমূহে প্রবেশগম্যতা নেই। বাণিজ্যিক ব্যাংক, ঋণ, বীমা বা অন্যান্য অর্থনৈতিক সেবায় প্রবেশগম্যতা রয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা অত্যন্তকম;
৮.৬ যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার অত্যন্ত বেশি। বিরাট সংখ্যক যুবক শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং প্রশিক্ষণের সাথে যুক্ত নয় এবং তাদের বিশেষ কোনও দক্ষতাও নেই। অথচ সংবিধানের ১৫ (খ) কর্মের অধিকার, অর্থাৎ কর্মের গুণ ও পরিমাণ বিবেচনা করিয়া যুক্তিসঙ্গত মজুরীর বিনিময়ে কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার অধিকার প্রদানের অঙ্গিকার করেছে;
১০ (১০.১ ও ১০.২)দেশের অন্যতম দরিদ্র জনগোষ্ঠী দলিত ও সমতলের আদিবাসী মানুষদের আয় বর্তমানে জাতীয় গড় আয়ের অনেক নিচে।
১০.৩ বৈষম্যমূলক আইন, প্রথার একইভাবে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য একই রকম উন্নয়ন নিশ্চিত করতে যেতে হবে বহুপথ।
১১.১ শহরের দলিতদের আবাসন সংকট প্রকট।
১৩ দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের মত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছেন।
১৬ দলিত ও সমতলের আদিবাসীসহ সকল নাগরিকের জন্যই সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও অংশগ্রহণমূলক শাসন-পরিচালন এখনও সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত করা যায়নি ।

 

সরকারের কিছু উদ্যোগ

চলমান সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির (যেমন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুগ্ধদানকারী দুস্থ মায়ের জন্য ভাতা, স্বামী পরিত্যক্তা দুস্থ নারীর ভাতা ইত্যাদি) আওতা বাড়লেও তার কতখানি দলিত ও সমতলের আদিবাসীর জন্য ব্যয় হবে তা আলাদা করে তা যেমন বলা নেই। তেমনি বাস্তবিক কত শতাংশ তাদের অনুকূলে ব্যয় হয় তারও আলাদা তথ্য পাওয়া যায় না। এছাড়া অংশগ্রহণকারী নির্বাচন ও সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম-দূর্নীতি তাদের অধিকারকে আরও সংকুচিত করছে। সমতলের আদিবাসীদের জন্য ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা ‘(পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)’ নামে ২০১৭-১৮ সালে ৩০ কোটি, ২০১৮-১৯ সালে ৪০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ ছিল যা এবারের বাজেটে বেড়ে হয়েছে ৬০ কোটি টাকা। কিন্তু এই সামান্য পরিমাণ অর্থ যদি আনুমানিক ১৫ লক্ষ সমতলের আদিবাসীদের মধ্যে ভাগ করা হয় তাহলে মাথাপিছু প্রাপ্তিটা নগণ্য হচ্ছে। অন্যদিকে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য এ বছর বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে ৬৭ কোটি টাকা। তবে এখানে দলিতদের নামোল্লেখ করে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। এমনকি, অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কোন সুস্পষ্ট সংজ্ঞাও দেয়া হয়নি। এখানেও পরিচয় সংকট একটি বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।সমতলের আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর অধিকারভিত্তিক উন্নয়নের

*এসডিজির লক্ষ্য অর্জন এবং তাদের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রাতিষ্ঠানিক নীতি-

লক্ষ্যে সুপারিশ:কাঠামো ঢেলে সাজাতে হবে। এ লক্ষ্যে বিদ্যমান নীতি কাঠামো যেমন-পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল ২০১৫, জাতীয় খাদ্য নীতি, জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০০৬, জাতীয়  শিক্ষানীতি ২০১০, জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১, বাংলাদেশ ডেল্টা পরিকল্পনা ২১০০, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি ২০১১ ইত্যদিতে দলিত ও সমতলের আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য অধিকারভিত্তিক অগ্রাধিকার অন্তর্ভুক্ত করা;

*চলমান সরকারি কার্যক্রম বিশেষ করে মৌলিক সেবাসমূহে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনয়নে গণকেন্দ্রিক পরিবীক্ষণ বাড়ানো;
*ভূমি সমস্যা সামাধানে পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠন করা;
*দলিত ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ যেমন, কোটা সংরক্ষণ এবং নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে বিশেষ কাঠামো ঘোষণা করা;

*সমতলের আদিবাসী ও দলিত জনগোষ্ঠীর সঠিক তথ্যভান্ডার তৈরির লক্ষ্যে আগামী জনশুমারি ২০২১ এ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।


লেখক : উন্নয়নকর্মী ও গবেষক