• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০১৯, ০৭:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০১৯, ০৭:৩০ পিএম

কুর্দি : সর্ববৃহৎ দেশহীন জাতিগোষ্ঠীর নাম

কুর্দি : সর্ববৃহৎ দেশহীন জাতিগোষ্ঠীর নাম

দিন-তারিখের হিসেবে সভ্যতার বয়স দুইহাজার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও অনেক অনেক জাতিগোষ্ঠীর  স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা অধরাই রয়ে গেছে! জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে এই বঞ্চনার শিকার হয়েছে পৃথিবীর সব প্রান্তের মানুষ। সুদূর লাতিন আমেরিকা থেকে মিয়ানমার, প্যালেস্টাইন থেকে কাশ্মির, রুয়ান্ডা থেকে শ্রীলংকা, স্পেন থেকে ফিলিপাইন কোথায় নেই জাতিগত নিষ্পেষণ? জাতীয়তাবাদের অন্যতম উপাদান জাতিতাত্ত্বিক, ভাষা ও সংস্কৃতিগত, ভূখন্ডগত ও ধর্মীয় একতা থাকা সত্বেও পৃথিবীর বিপুল সংখ্যক মানুষ তাদের  স্বাধীনতার স্বাদ পায়নি। এক্ষেত্রে অনেক উদাহরণ দেয়া যাবে যেমন-প্যালেস্টাইন, কাশ্মির, তামিল, রোহিঙ্গা, কুর্দি এবং আরও অনেক।

ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, এই রাষ্ট্রহীন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার নাম-কুর্দি। যাদের সংখ্যা প্রায় তিন কোটি এবং এরা উত্তর-মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে। কুর্দিরা সুন্নী মহাবলম্বী মুসলিম, তাদের নিজ স্ব ভাষা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে কিন্তু তারা আরব নয়। তাদের সুদীর্ঘ ইতিহাস মূলত সংঘাত এবং বঞ্চনার ইতিহাস। সেই একাদশ শতকে সেলজুক রাজা সাজ্জার প্রথম ‘কুর্দিস্থান’ শব্দটি ব্যবহার করেন এবং এই নামে একটি প্রদেশ গঠন করে শাসন করেন। সেলজুকদের পরাজয়ের পর তারা অটোমান সাম্রাজ্যের অধিনস্ত হয়ে দীর্ঘদিন নানা নির্যাতন ভোগ করে। কিন্তু তারা শক্তিশালী অটোমান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। যখনই তারা সংগঠিত হয়েছে তখনই তাদের ওপর নেমে এসেছে নির্যাতনের ভয়াবহ খড়গ। এর পরে আরও অনেক বছর পেরিয়ে গেলেও কুর্দি জনগণের ভাগ্যে  স্বাধীনতা আসেনি ফলে আজও তারা  স্বাধীনতার দাবিতে কঠোর-কঠিন বাস্তবতা মোকাবেলা করে চলেছে।

কুর্দিদের সমকালীন ইতিহাস
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৯২০ সালের দিকে অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতন শুরু হলে কুর্দিরা নিজেদের  স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার হয়। এসময় বিজয়ী মিত্রশক্তির উদ্যোগে ‘সেভয়’ চুক্তি সম্পাদিত হয়। সেই চুক্তিতে কুর্দিস্থানের  স্বাধীনতার জন্য গণভোট অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত থাকলেও তুরস্ক তা মেনে নিতে অপরাগতা জানায়। পরবর্তীতে ১৯২৩ সালের লুসান চুক্তিতে তুরস্কের  স্বাধীনতার দাবী মেনে নিলেও কুর্দিদের  স্বাধীনতার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। এমতাবস্থায় বিজয়ী শক্তি ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স, কুর্দি অধ্যুষিত বিশাল এলাকাকে পাশ্ববর্তী দেশসমূহের মধ্যে ভাগ করে দেয়। আর এর ফলে কুর্দিরা ইরাক, ইরান, সিরিয়া ও তুরস্ক দেশের মধ্যে বহুধা বিভক্ত হয়ে পড়ে। এছাড়া কিছু সংখ্যক কুর্দি আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানেও অন্তর্ভূক্ত হয়। কিন্তু বৃহৎ শক্তি ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স কুর্দিদের সমষ্টিগত শক্তিকে খর্ব এবং  স্বাধীনতার দাবিকে অসম্ভব করে তুলতেই এই বিভাজন সৃষ্টি করে। আর এর ফলে শুরু হয় সর্ববৃহৎ জাতিগোষ্ঠী কুর্দিদের অবহেলা আর বঞ্চনার অনিঃশেষ যাত্রা। আজ একশত বছরে কুর্দিদের ন্যায্যভূমি তাদেরই রক্তে রঞ্জিত হলেও তাদের আকাশে ওঠেনি চিরকাঙ্খিত  স্বাধীনতা সূর্য।  

অস্তিত্বের সংগ্রাম দেশে দেশে 
শুরু থেকেই সিরিয়া, ইরাক, ইরান এবং তুরস্ক চারটি দেশই  স্ব- স্ব চৌহদ্দির মধ্যে কুর্দিদের মানবাধিকার এবং  স্বাধীনতার দাবিকে কঠোর হস্তে দমন করে চলেছে। সংশ্লিষ্ট শাসককূল তাদের ভাষা, সংস্কৃতি এবং জাতীয়তাবোধকে নিশ্চিহ্ন করে কুর্দিদের  স্বাধীনতার দীপশিখাটিকে চিরতরে নির্বাপিত করতে হেন চেষ্টা নেই যে করেনি। কুর্দিদের সবচেয়ে বড় অংশটির বাস আজকের তুরস্কে। সেই দেশের প্রায় ২০ শতাংশ জনগোষ্ঠী হলো কুর্দি। কুর্দিরা সংখ্যায় এত বিপুল সংখ্যক হলেও অবস্থানের দিক দিয়ে তারা দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তুর্কি সরকার কুর্দিদের প্রতি প্রথম থেকেই নির্মম অত্যাচার চালাতে থাকে। তারা তাদের ভাষাকে নিষিদ্ধ করে যা ১৯৯১ সাল পর্যন্ত বলবৎ ছিল এবং তাদের নাগরিকত্ব দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। সেখানে কুর্দি জনগোষ্ঠী নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাওয়ায় ঘুরে দাঁড়াতে কুর্দি ওয়ার্কাস পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক সংগঠন করে পদ্ধতিগতভাবে সংগঠিত হতে থাকে।

খুব  স্বাভাবিক কারনে তাদের এই সংগঠিত প্রচেষ্টা তুর্কি সরকার ভালোভাবে নেয়নি এবং উক্ত সংগঠনের ব্যানারে যে কোনো রাজনৈতিক উদ্যোগকে কঠোর হস্তে দমন করার নীতি পরিগ্রহ করে। গত কয়েক বছরে আইএস নামে একটি চরমপন্থি রাজনৈতিক মতাদর্শ ঘৃণ্য নির্যাতনকে পুঁজি করে সিরিয়া ও ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিতএলাকাগুলো দখলে নিতে থাকলে কুর্দি জনগণ জোর প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় আইএস দমনে সফলতা অর্জন করে। কিন্তু  সেই ভয়াবহ যুদ্ধ চলাকালীন সময়েও তুর্কি সরকার কুর্দিদের ওপর আক্রমন করে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে উদ্যত হয়। শুধু তাই নয় এই একপেশে আক্রমনের মাধ্যমে তারা কুর্দি ওয়ার্কাস পার্টিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে। 

সিরিয়ায়ও প্রায় কুড়ি লক্ষাধিক কুর্দির বসবাস এবং তারাও নানা বঞ্ছনাকে নিত্য সাথী করে দিনাতিপাত করছে। বিশেষ করে বাসার আল আসাদ ক্ষমতায় এলে কুর্দিদের প্রতি কঠোর নীতি গ্রহণ করে এবং নানা কায়দায় তাদের  স্বাধীকারের দাবিকে দমিয়ে রাখতে সক্রিয় হয়। অপরাপর দেশসমূহের মতই তার সরকারও কুর্দিদের প্রতি বৈষম্য ও নির্যাতনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেয়। কিন্তু কুর্দি জনগণ বাসার সরকারের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এবং নির্যাতনের প্রতিবাদ এবং  স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে নিতে একটি রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। আর সেই থেকে কুর্দি এবং বাসার সরকারের বাহিনীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে। পরবর্তীতে আইএস-এর উত্থান পর্বে বাসার সরকার আইএস ও কুর্দি উভয়ের বিরুদ্ধেই সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদের কোনঠাসা করে।এছাড়া, বাসার সরকার তাদের পরিক্ষিত বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়ার সমর্থন পেলে তাদের প্রতি আক্রমন জোরদার করে। একটা সময় কুর্দিরা মার্কিন বাহিনীর সাথে যোগ দিয়ে আইএস-এর আক্রমনকে প্রতিহত করে এবং  তাদেরকে হটিয়ে নিজস্ব এলাকাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়। উক্ত বিজয়ের ফলে কুর্দিরা মনে করেছিল এবার বাসার সরকারের কাছে কুর্দিদের  স্বাধীনতার দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরা সম্ভব হবে।

কিন্তু চলতি বছর হঠাৎ করে মার্কিন প্রশাসন কুর্দিদের  স্বাধীনতার দাবি অথবা ন্যুনপক্ষে নিরাপত্তার বিষয়টিকে বিবেচনায় না নিয়ে সিরিয়া থেকে তার সৈন্য সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এতে খুব  স্বাভাবিক কারনে কুর্দিরা খর্বশক্তির হয়ে পড়ে। এরকম একটি নাজুক সময়কে তুরস্ক সরকার কৌশলগত সুবিধা আদায়ের উপায় হিসেবে বেছে নেয়। তারা সিরিয়ায় কুর্দিদের ওপর আক্রমন করা শুরু করে যা এখনও চলমান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া এ আক্রমনের বিরোধিতা করলেও এবং তুরস্ক ন্যাটো জোটের সদস্য রাষ্ট্র হওয়ার পরও যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়নি। তারা আক্রমন  অব্যাহত রেখেছে। কুর্দিদের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধ বিষয়ে তুরস্কের খোড়া যুক্তি হলো-তারা সংশ্লিষ্ট অঞ্চল থেকে কুর্দিদের সরিয়ে দিয়ে সেখানে তাদের দেশে আশ্রয় নেয়া সিরীয় শরাণার্থীদের ফেরত পাঠাবে বা পুনর্বাসন করবে। কিন্তু রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন অন্য কথা। তারা বলছেন-তুরস্ক সবসময় সময়ের সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে কুর্দিদের দমনে উদ্যত হয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা তাদের সামরিক শক্তি দেখিয়ে কুর্দিদের শাসাতে চেয়েছে যাতে তারা কোনদিনই  স্বাধীনতা  স্বপ্ন না দেখে। আর এই আক্রমনও সেই দুরভিসন্ধি থেকে আলাদা কিছু নয়।

ইরান শিয়া মতাবলম্বী মুসলিম গরিষ্ঠ একটি দেশ হওয়ায় সুন্নি কুর্দিবিরোধী পদক্ষেপ নেবে এটা অনুমেয়। বাস্তবে হয়েছেও তাই। ইরান সরকার কুর্দিদের বিরুদ্ধে বরাবরই কঠোর দমননীতি পরিচালনার পাশাপাশি তাদের  স্বাধীনতার দাবিকেও অসম্ভব কল্পনা বলে অবিহিত করেছে। মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার এ অঞ্চলের দেশসমূহের মধ্যে নানা বিরোধ থাকলেও বিবদমান চারটি দেশ কুর্দি প্রশ্নে একাট্টা। অথচ এরাই কাশ্মির, প্যালেস্টাইন এবং ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বে চলা অন্যায় যুদ্ধ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে!  স্বার্থবাদী রাজনীতি এবং তজ্জাত কূটনীতি সত্যিই বিচিত্র, এর শেষ কথা বলে কিছু নেই।

অন্যান্য তিনটি দেশের তুলনায় ইরাকে বসবাসকারী কুর্দিরা কিছুটা হলেও ভালো আছে। শুরু থেকেই তারা সুসংগঠিতভাবে  স্বাধীকারের দাবিতে আন্দোলন পরিচালনা করেছে। বিশেষ করে উপসাগরীয় যুদ্ধ এবং সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর তারা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের জন্য  স্বায়ত্বশাসন লাভ করেছে। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকাগুলো নিয়ে পৃথক রাষ্ট্রের  স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হলে ৯২ শতাংশের বেশী মানুষ  স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয়। কিন্তু ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকার উক্ত ফলাফলকে অসম্ভব বলে গ্রহণ করেনি। পাশাপাশি সিরিয়া, ইরান এবং তুরস্ক তারাও সমস্বরে কুর্দিদের  স্বাধীনতার পক্ষে রায়কে অহেতুক বলে বাতিল করে দেয়।

কারন তাদের ভয় হলো, যদি ইরাকের কুর্দিরা  স্বাধীনতা পেয়ে যায় এবং আলাদা রাষ্ট্র গঠন করতে সমর্থ্য হয় তাহলে তাদের দেশেও বসবাসকারী কুর্দি জনগোষ্ঠী  স্বাধীনতার দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠবে যা মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়বে। সাম্প্রতিক সময়ে ইরাকে বসবাসকারী কুর্দিরা অনেকটা  স্বায়ত্বশাসন লাভ করলেও বিগত দিনগুলোতে বিশেষ করে সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলে তা ছিল অকল্পনীয়। তার সময়ে কুর্দি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অন্যায়ভাবে আক্রমন করে সাদ্দাম অনুগত বাহিনী প্রায় ৪০ হাজারেরও বেশী কুর্দিকে হত্যা করে। কথিত আছে, সেই বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রতিশোধ হিসেবে ২০০৩ সালে পলাতক সাদ্দাম হোসেনকে পাকড়াও করতে তারা মার্কিন বাহিনীকে সহায়তা করে।


কুর্দিদের  স্বাধীনতার স্বপ্ন কী অধরাই থেকে যাবে?
কুর্দিরা সংখ্যায় প্রায় তিনকোটি এবং তাদের বসবাসকারী এলাকাসমূহের আয়তন প্রায় ২ লক্ষ ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার হলেও নানা বাস্তবিক কারনে তারা সমষ্টিগত শক্তি হয়ে উঠতে পারেনি কখনও। বিশেষ করে ভিন্ন ভিন্ন দেশের সীমানায় বিভাজিত হয়ে পড়া এবং সেই সকল দেশে  স্ব- স্ব অংশ  স্বাধীকারের দাবিতে আন্দোলন পরিচালনা করায় কুর্দি জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী নেতৃত্ব তৈরী হয়নি। ফলে শুধুমাত্র নিজ নিজ ক্ষুদ্র এলাকাকে বিবেচনায় নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করায় তা তা স্থানিক হলেও সমষ্টিগত ফল আনতে পারে। এছাড়া, দীর্ঘদিনব্যাপী ভিন্ন ভিন্ন শাসন ও সংস্কৃতির মধ্যে বসবাস করায় নিজেদের সাংস্কৃতিক নৈকট্য এবং আন্তঃযোগাযোগ অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়েছে।

ফলশ্রুতিতে, বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠী হওয়া সত্ত্বেও  স্বাধীন কুর্দিস্থানের দাবিতে প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করতে এখনও পারেনি।  স্বার্থবাদী এবং একদেশদর্শী রাজনৈতিক মতাদর্শ যুগে যুগে কুর্দি জনগোষ্ঠীকে নিজেদের  স্বার্থে ব্যবহার করেছে ঠিকই কিন্তু তাদের  স্বাধীনতার ন্যায্য দাবিকে সেই মূল্য দেয়নি। তথাকথিত এ সভ্যতায় সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন অর্থ খরচ করে হলেও সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে। তারা মারনাস্ত্রের তীব্র ঝনঝনানি শুনতে পছন্দ করলেও কুর্দিদের বেঁচে করুন আর্তনাদ শুনতে পায় না।

লেখক : মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী