• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০১৯, ০৭:১৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ১, ২০১৯, ০৭:১৭ পিএম

অধ্যাপক দিয়ে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব মনিটরিংয়ের নির্দেশ

অধ্যাপক দিয়ে ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাব মনিটরিংয়ের নির্দেশ
হাইকোর্ট

সহযোগী অধ্যাপক পদের নিচে এমন চিকিৎসককে দিয়ে বিদ্যমান ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব মনিটরিং না করানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দায়িত্ব দেয়া ওই চিকিৎসককে ২৪ ঘণ্টা হাসপাতালে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত । সরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (০১ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়াদীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

মশক নিধন ওষুধ আনার বিষয়ে শুনানির সময় এ আদেশ দেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে এই শুনানি ঈদের পরও করবেন বলে জানান আদালত।

সেইসঙ্গে ঢাকার দুই সিটিকে ডেঙ্গুর ওষুধ আনারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের সহযোগিতা করতে স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌফিক ইনাম টিপু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সায়রা ফাইরোজ।

এর আগে মশা মারতে নতুন ওষুধ আনার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য জানাতে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিবকে তলব করেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় তাকে হাজির হতে বলা হয়।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ আদালতে হাজির হয়ে বলেন, ‘মশার উপদ্রব যখন শুরু হয় তখন দুই সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে মশক নিধন কার্যক্রম শুরু করি। কিন্তু ওষুধ ঠিক মতো কাজ করছে না’।

বিদেশ থেকে কার্যকর ওষুধ আনতে গড়িমসি’র বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সশরীরের হাইকোর্টে উপস্থিত হয়ে বলেন, ‘চায়না থেকে ওষুধ আনার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা তদারকি করছি। ওষুধ আনতে লাইসেন্স লাগবে।’

আদালত এ সময় বলেন, ‘সরকার টু সরকার (জিটুজি) ওষুধ আনলে কি লাইসেন্স লাগে? বন্যা, ভূমিকম্প বা বিভিন্ন দুর্যোগের সময় তো সরকার অন্য দেশের সরকারকে বলে অনুদান আনেন। তখন তো লাইসেন্স লাগে না। একটা সমস্যার কথা বললে, আমার দেশে মশার উপদ্রব যে বেড়েছে তারা কি সেটা দেখবে না?’

এ সময় হেলালুদ্দীন বলেন, ‘উত্তর সিটি করপোরেশন নমুনা সংগ্রহ করেছে। যত দ্রুত সম্ভব ওষুধ আনার ব্যবস্থা করা হবে, ওষুধ আনার প্রক্রিয়া চলছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও দুই সিটি করপোরেশেনের সঙ্গে গত ২৮ জুলাই বৈঠক করেছি।’ আদালত বলেন, ‘বৈঠক করেছেন ঠিক আছে, কিন্তু ওষুধ আনবে কারা? স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নাকি সিটি করপোরেশন?’ তখন সচিব বলেন, ‘আমরা সব ধরনের তদারকি করব। কিন্তু ওষুধ আনবে সিটি করপোরেশন।’

হাইকোর্ট বলেন, ‘আপনাকে ঠিক মতো ব্রিফিং করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীও তো বলে দিয়েছেন, মশার কার্যকর ওষুধ ছিটানোর জন্য। সকালে দক্ষিণ সিটির আইনজীবী বললো, আপনারা ওষুধ আনবেন। আর আপনি বলছেন সিটি করপোরেশন। আসলে মশার ওষুধ কে আনবে সেটা জানার জন্য আপনাকে ডাকা।’

তখন সচিব বলেন, ‘আমরা সমন্বয় করে ওষুধ আনব।’ এ পর্যায়ে সচিব আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমাদের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং সিটি করপোরেশন মিলে ওষুধ আনবে।

আদালত বলেন, ‘সিটি করপোরেশন থেকে তো এখন ডেঙ্গু সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। সিটি করপোরেশন ওষুধ আনবে ঠিক আছে যদি ইউনিয়নে সমস্যা হয় তা হলে কি ইউনিয়ন পরিষদ দেখবে সেটা, নাকি স্থানীয় সরকার?’ সচিব বলেন, ‘এখন যে দেশে ক্রাইসিস চলছে, এ বিষয়ে আমরা বসে নেই। কাজ করছি।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনারা ঠেলাঠেলি করছেন, একজন আরেক জনকে দোষ দিচ্ছেন। সিটি করপোরেশনের আইনজীবী সকালে দরখাস্ত দিয়ে বলেছে, আপনারা ওষুধ আনবেন। আপনাদের ঠেলাঠেলিতে তো কিছুই হচ্ছে না।’

এসময় আদালত আদেশ দিয়ে ঈদের পরে এ ব্যাপারে আরও শুনানি হবে বলে জানান।

এমএ/বিএস 

আরও পড়ুন