• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০১৯, ০৪:৪২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : অক্টোবর ২২, ২০১৯, ০৪:৪৫ পিএম

১৪ দলের বৈঠকে যাননি মেনন 

মেননের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা : নাসিম 

মেননের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা : নাসিম 
মোহাম্মদ নাসিম - ফাইল ছবি

একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আলোচনা করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১৪ দল আয়োজিত বাংলাদেশ-ভারত ‘সমঝোতা স্মারক শীর্ষক’ গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। 

মোহাম্মদ নাসিম যখন এ কথা বলছিলেন তখন তার পাশে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠকে রাশেদ খান মেনন আসেননি। এ বিষয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তার পার্টির সেক্রেটারি এসেছেন। তিনি কেন আসেননি, তা আমি বলতে পারব না।

উল্লেখ্য, গত শনিবার বরিশালে এক অনুষ্ঠানে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমিও নির্বাচিত হয়েছি। তারপরও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, ওই নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এমনকী পরবর্তীতে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ভোট দিতে পারেনি দেশের মানুষ।’ 

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা হিসেবে ঢাকা-৮ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে গত তিনটি সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হন মেনন। বিগত সরকারে প্রথমে বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং পরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৪ দল কোনো ব্যক্তি নয়, এটি একটি সংগঠন। জোটগতভাবে আমরা কাজ করছি, আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা তার (মেনন) বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করেছি, তাকে নিয়ে আমরা বসে আবারও আলোচনা করব, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
 
গোলটেবিল বৈঠকে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম মাহমুদ। বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার, তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর ( অব.) হারুন অর রশিদ, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ( বিএফইউজে) সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা প্রমুখ।

সভায় মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের স্বর্ণ অধ্যায় চলছে এখন। একটি মহল এখনও এ বন্ধুত্বকে বাঁকা চোখে দেখছে। যারা এ বন্ধুত্বকে বাঁকা চোখে দেখছেন, তারা কোনোকিছুই সোজা চোখে দেখেন না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন গুজব আর অপপ্রচার চলছে। এসব গুজব ও অপ্রপ্রচারের জবাব দিতে হবে তথ্য দিয়ে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, একটি মহল স্বাধীনতার পর জাতির স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে, দেশের স্বার্থ বিলিয়ে ভারতের সঙ্গে চুক্তি করা হচ্ছে বলে জিগির তুলে আসছে। কিন্তু তারা বারবার ক্ষমতায় এসেছে, কিন্তু কোনো চুক্তিই বাতিল করেনি। তিনি বলেন, তারা পাকিস্তানের চশমা দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে দেখছে। পাকিস্তানের চশমা দিয়ে দেখলে- ‘দেশ লাভবান হয়েছে, অর্থনৈতিক সুবিধা বেড়েছে’ এসব চোখে পড়বে না।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের এ দেশে আশ্রয় দিয়ে, অস্ত্রের ট্রেনিং দিয়ে, তাদের জন্য দশ ট্রাক অস্ত্র এনে ভারতের কাছে মাফ চেয়েছে। তারা যেকোনো সমস্যাকে আরও বড় সমস্যা তৈরি করে।
আওয়ামী লীগ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বার্থ বিসর্জন দেবেন না। তিনি জান থাকতে মান দেবেন না।

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, একাত্তর সালে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলাম, তাদের বিরুদ্ধে এখনও যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আগে অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে। এখন তাদের গুজব-অপপ্রচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিরোধী মহলের কাছে ভারত বিরোধিতা তুরুপের তাস। তারাই ক্ষমতায় থাকলে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করে। সুতরাং তাদের এসব বক্তব্যকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, চুক্তির ক্ষেত্রে আমরা দেখবো দেশ কতটুকু লাভবান হয়েছে। সংবিধানের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে কি না সেটাও দেখতে হবে। চুক্তি কিন্তু সরকারের একার বিষয় নয়, রাষ্ট্রের বিষয়।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ভারত সফরে যেসব সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত হয়েছে তা উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। প্রতিবেশী দুদেশের মধ্যে শান্তির সম্পর্ক থাকার কারণে উন্নয়ন এগিয়ে যাচ্ছে।

ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থ দেখার পাশাপাশি ভারতের মতো প্রতিবেশীর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ধন্যবাদ পেতেই পারেন। বিএনপি বলছে বঙ্গোপসাগরে রাডার স্থাপনের মাধ্যমে ভারত চীনের উপর নজরদারি করবে। কিন্তু এ রাডারের মালিকানা বাংলাদেশের। যা দিয়ে আমরা সমুদ্রসীমার উপরে কঠোর নজরদারি রাখতে পারব।

এএইচএস/ এফসি

আরও পড়ুন