• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১৮, ২০১৯, ০৬:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৮, ২০১৯, ০৬:১৬ পিএম

৭ কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবি

লাগাতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

লাগাতার আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টিএসসি ও পরে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীদের অবরোধে শাহবাগ ও আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর দুইটার দিকে লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা। দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

লাগাতার কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের মুখপাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, তারা কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান করে আছেন অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা লাগাতার কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানান।

এর আগে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবিতে সকাল থেকেই ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে দশটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এতে দোয়েল চত্বর, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, রোকেয়া হলের সামনের সড়ক, শাহবাগসহ বিভিন্ন মোড়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। এতে ওইসব সড়ক দিয়ে সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের এ আন্দোলন চলবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোফাজ্জল সাদাত বলেন, তাদের দাবি হচ্ছে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল। যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের শিক্ষার্থীদের দেখভালই করতে পারে না, সেখানে আরও দুই লাখ শিক্ষার্থীর দায়িত্ব কিভাবে নেয়।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশোফা তাসনিফ বলেন, তারা এতো কষ্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছেন। কিন্তু তাদের সমস্যার শেষ নেই। অন্যদিকে ক্ষণিকা এবং চৈতালি বাসে ছাত্রীকে যে হয়রানি করা হয়েছে, এর বিচার চান তিনি। এছাড়া সাত কলেজের অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক বাজে মন্তব্যের বিচারও চান তিনি।

এরপর দুপুর একটার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কয়েকশ’ শিক্ষার্থী অংশ নেন। মিছিলটি শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে গিয়ে তারা অবরোধ শুরু করেন। এসময় অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ‘শোন বোন শোন ভাই, ঢাবির কোন শাখা নাই’, ‘ঢাবির বাস আটক কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘আশ্বাস বা প্রতারণা, চলবে না চলবে না’, ‘সাত কলেজের ঠিকানা, ঢাবি হবে না’, ‘রাখতে ঢাবির সম্মান, সাত কলেজ বেমানান’সহ বিভিন্ন স্লোগান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। 

দুপুর ২টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন তারা। পরে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা। লাগাতার কর্মসূচির মধ্যে- বিক্ষোভ মিছিল, শাহবাগ মোড় অবরোধ, উপাচার্য কার্যালয় অবরোধ ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কথা জানানো হয়।

গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলসহ চার দফা দাবি মানার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। কিন্তু প্রশাসন তাদের দাবির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় তারা পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন। গত বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

তাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- যেকোনো মূল্যে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যত্রক্রম অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা, দুই মাসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষার ফলাফল দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ধরনের বহিরাগত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা।

এদিকে, প্রথমদিনের মতো আজও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শাহবাগে যান ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন। 

সেখানে তিনি বলেন, তিনি এই আন্দোলনের সঙ্গে শুরু থেকেই একাত্মতা প্রকাশ করেছিলেন, এখনও এর সঙ্গে আছেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেখানে পর্যাপ্ত সেবা পায় না, তাদের রেজাল্টের জন্য ৭ থেকে ৮ মাস অপেক্ষা করতে হয় অথচ সেই বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্যদের দায়িত্ব নেন। এসময় তিনি দ্রুত এর সমাধান দাবি করেন।


টিএফ