একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে ৭৬টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করেছিল ওই সব দলের নেতাদের গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় ও চা-চক্রের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে গণভবনে হাজির হয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের নেতারা। রাজনৈতিক নেতাদের উপস্থিতিতে যেন মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এ চা-চক্র।
শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সম্মানে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠান ও চা-চক্রের আয়োজন করেন টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়া শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনের দক্ষিণের সবুজ লনের এ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, গণতন্ত্রী পার্টি, সাম্যবাদী দলসহ ১৪ দলীয় জোট, মহাজোট ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত হন।
ভোটের আগে গত পহেলা নভেম্বর সংলাপ শুরু করে প্রধানমন্ত্রী শতাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেন। ওই সংলাপে অংশ নেয়া সব দলের নেতাদেরই চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে আমন্ত্রণ জানানো হলেও বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আসেননি।
অতিথিদের বসার জন্য গণভবনের সবুজ লনে চেয়ার, টেবিল, মোড়া, মাদুরের ব্যবস্থা করা হয়। আপ্যায়িত নানা খাবারের মধ্যে ছিল ফুচকা, চটপটির জন্য আলাদা আলাদা টেবিল রাখা হয়। পিঠার টেবিলে ছিল পাটিসাপটা, ভাপা, চিতই, পুলি প্রভৃতি। ছিল বিভিন্ন ধরনের কাবাব, নানরুটি, পরোটা, জিলাপিসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল, নানা ধরনের শরবত ও কফি। অনুষ্ঠানস্থলকে সাজানো হয় আবহমান বাংলার বিভিন্ন ঐতিহ্য দিয়ে।
প্রধানমন্ত্রী গণভবনের মাঠে আসেন বিকেল ৪টার পরে। তিনি লনে ঘুরে ঘুরে অতিথিদের সঙ্গে সহাস্যে শুভেচ্ছা ও কুশলাদি বিনিময় করেন।
চা-চক্র সম্পর্কে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘রাজনৈতিক কোনো আলোচনা হয়নি। শুধুই চা-চক্র হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে কথা বলেছেন।’
জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের বলেন, ‘এ চা-চক্র সবার সঙ্গে হৃদ্যতার বন্ধন আরও দৃঢ় ও সম্পর্ক ঝালাই করে নেয়া। এখানে সবাই খোলামেলা আলোচনা করেছেন। এটা ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
দলটির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভালো। দলের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে একটা রিসোর্টে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। সেখানে তার নিরাপত্তার কোনো সমস্যা হবে না। তবে ওই দিনের দাওয়াতে আজকে যারা ছিলেন সবাই থাকবেন।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমুর হোসেন আমু, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবদুল মতিন খসরু, নূরুল ইসলাম নাহিদ, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাপা নেতা এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, জিয়াউদ্দিন বাবলু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মুজিবুল হক চুন্নু, সুনীল শুভ রায়, জাতীয় পার্টির (মঞ্জু) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, জাসদ (ইনু) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, জাসদ (আম্বিয়া) নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল, নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডরী, সাম্যবাদী দলের সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ডা. একিউএম বদরুদোজ্জা চৌধুরী, মহাসচিব মেজর (অব.) এম এ মান্নান, বিকল্প ধারার নেতা মাহী বি চৌধুরী, শমশের মুবীন চৌধুরী, বিএনএফ প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ।
এএইচএস/এনএ