• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম

কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত মহম্মদপুরবাসী

কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা বঞ্চিত মহম্মদপুরবাসী
মাগুরার মুহাম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

 

মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলায় চিকিৎসক ও জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। এসব চিকিৎসালয়ে ১৬৬টির মধ্যে ডাক্তারসহ ৭৫ কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ শূন্য রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শয্যা সংখ্যা ৩১ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু বাড়ানো হয়নি কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদের সংখ্যা। এখন ৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ১৮টি পদের মধ্যে ১১টি রয়েছে শূন্য। কর্মরত রয়েছেন মাত্র সাতজন চিকিৎসক। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক রয়েছেন বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে। অন্যজন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। ফলে মাত্র পাঁচজন চিকিৎসক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া) এবং ডেন্টাল সার্জন থাকার কথা। কিন্তু সবগুলো পদই শূন্য রয়েছে। ফলে সব ধরনের অপারেশন বন্ধ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ, উপ-স্বাস্থ্য ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসকের ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ পদের মধ্যে ১৬টিই রয়েছে শূন্য। নয়টি চিকিৎসালয় চলছে মাত্র সাতজন ডাক্তার দিয়ে। এভাবে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এ উপজেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা। ফলে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলাবাসী।

তাছাড়া, ২০ শয্যার বিনোদপুর হাসপাতালে চিকিৎসকের ছয়টি পদের পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোনো স্থাপনা না থাকায় একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার সংযুক্তিতে মাগুরা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেসথেসিয়া) এবং মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও সবগুলো পদই শূন্য রয়েছে। ফলে এ হাসপাতালের সব ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রায় বন্ধ। রোগীদের ভোগান্তি দিনের পর দিন বাড়ছে।

একইভাবে বিনোদপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দীঘা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং নহাটা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন করে মেডিকেল অফিসার থাকার কথা। কিন্তু সব স্বাস্থকেন্দ্রে পদগুলো শূন্য রয়েছে। বাবুখালী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, রাজাপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বালিদিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং পলাশবাড়ীয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে একজন করে সহকারি সার্জন বা সমমানের কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও কোনোটিতেই তা নেই। কাগজে-কলমে মহম্মদপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র নামে একটি সেবালয় থাকলেও কার্যত তার কোনো অস্তিত্ব নেই।

এছাড়া উপজেলার ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকসহ এসব চিকিৎসাকেন্দ্রে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর ১০৬টি পদের মধ্যে ২৮টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে কর্মরত ৭৮ জনের মধ্যে সাতজন রয়েছেন প্রেষণে। চতুর্থ শ্রেণির ৩০টি পদের মধ্যে ২৫টি পদ শূন্য।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোকছেদুল মোমেনিন সঙ্কটের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, মাত্র পাঁচজন ডাক্তার নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে যাচ্ছি। সঙ্কটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

এসসি/