• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মার্চ ১, ২০১৯, ০৮:২০ পিএম

টানা বৃষ্টিতে মুন্সীগঞ্জে আলুর ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক

টানা বৃষ্টিতে মুন্সীগঞ্জে আলুর ব্যাপক ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক
আলুর ক্ষেত থেকে বৃষ্টির পানি অপসারণের কাজ করছেন কৃষক। ছবি- জাগরণ

 

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে গত ৪ দিনের টানা বৃষ্টিতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে কৃষককুল দিশেহারা হয়ে উঠেছেন। এমনিতেই গত কয়েক বছর ধরে আলুতে তাদের বেশ লোকসান গুনতে হয়েছে। এ বছর গত ৪ দিন ধরে টানা বৃষ্টির কারণে এরইমধ্যে বহু এলাকায় আলুর পাশাপাশি শাক-সবজিসহ বিভিন্ন মৌসুমী ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার এ উপজেলায় ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করেছেন প্রায় ১৫ হাজার কৃষক। তবে অসময়ের বৃষ্টির কারণে অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা।

এ বছর কৃষক যখন আলু ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই শুরু হয় টানা ৪ দিন ধরে বৃষ্টি। এ উপজেলার অনেক আলুর জমি বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। আবহাওয়া ভাল হলে রোদের তাপ পেলে মাটি গরম হলে আলু পঁচে যাওয়া এবং পোকার আক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কৃষকরা এখন আলু উঠানোর পরিকল্পনা করছেন। ভিজে আলুর স্টোর জাত করলেও পঁচে যাওয়ার সমস্যা থেকে যায়।

শুক্রবার (১ মার্চ) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা যায়।

কৃষকরা আরো জানান, জমির পানি অপসারণ করছেন, আবার কোথাও পানির মধ্যে থেকেই আলু তুলছেন। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর ফলন ভাল হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি তাদের বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষকদের গত কয়েক বছর আলুতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। তাদের দাবি সরকার যদি কোন সুযোগ সুবিধা করে দিত তাহলে তারা লোকশানে নিঃস্বতা থেকে রেহাই পেত।

সিরাজদিখান উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে জৈনসার, মধ্যপাড়া, মালখানগর, বয়রাগাদী, ইছাপুরা, রশুনিয়া ও কোলা ইউনিয়নে বেশি আলু আবাদ করা হয়।

থরিগাঁও গ্রামের কৃষক আলমগীর হোসেন জানান, তিনি এ বছর আলু চাষ করেছেন ২শ ৮০ শতাংশ জমিতে। ৪ দিনের টানা বৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে আলুর ক্ষতি হতে পারে। তাই তিনি ড্রেন করে দেওয়ায় পানি জমতে পারেনি। তবে আবহাওয়া ভাল হলেও রোদের তাপ গেলে জমিতে আলুর পঁচন ধরতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব আলু উঠিয়ে নিবেন তিনি।

জৈনসারের হারুন ও মোসলেম জানান, তারা প্রতিবছর ১০ থেকে ১২ কানি করে জমিতে আলু চাষ করেন। বাপ দাদা ও নিজেরা এ আলু চাষ ও ব্যবসা করে ভালই ছিলেন। গত কয়েক বছর ধরে লাভের মুখ দেখছেন না। ধারাবাহিকভাবে করে আসায় ছাড়তে পারছেন না। এবার ফলন ভাল হয়েছে কিন্তু বৃষ্টির কারণে ভাগ্যে কি ঘটতে পারে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।

বয়রাগাদী গ্রামের নাছির উদ্দিন জানান, এবার অল্প জমিতে আলু চাষ করেছি। বাকি ১০ গন্ডা জমিতে শাক-সবজি চাষ করেছি। টমেটো লাউ ভালই দাম পেয়েছি। কিন্তু বেশি বৃষ্টির কারণে এ মৌসুমের ফসলেও ক্ষতি হয়েছে। এ অঞ্চলে শিলা বৃষ্টি হয়নি, হলে ব্যাপক ক্ষতিতে পরে যাব।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবোধ চন্দ্র্র রায় বলেন, গত ৪ দিন ধরে বৃষ্টি হওয়াতে আলুর কোনো ক্ষতি হবে না। এখনও জমিতে পানি জমে নাই, কিছু নিচু জমিতে জমেছিল কৃষক পরিচর্যা করেছে। আরো কয়েক দিন বৃষ্টি হলে জমিতে পানি জমে দাউদ (স্ক্যাব) রোগ হতে পারে। আলুর বয়স ৯০ দিনের বেশি হয়েছে। আবহাওয়া শুষ্ক হলেই কৃষক দ্রুত আলু উঠাতে পারলেই ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে না।

কেএসটি