বরিশাল-বানারীপাড়া সড়কের গরিয়ারপাড়ে বাস ও থ্রি-হুইলার আলফা (অটো টেম্পু) সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জন হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে শিশুসহ ৫ জন। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শুক্রবার (২২ মার্চ) সকালে গরিয়ারপাড় এলাকাধীন বানারীপাড়া সড়কের তেতুল তলা নামক স্থানে এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সদর ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর স্টেশন অফিসার মো. ইউনুস আলী।

নিহতরা হলো- ঝালকাঠির বাসিন্দা ও বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজের ছাত্রী শীলা হালদার (২৪), আলফা চালক নগরীর কাশিপুর গণপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস খান এর ছেলে মো. সোহেল খান (২৫), বাকেরগঞ্জের ইউনুস সিকদারের ছেলে ও নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার বাসিন্দা রং মিন্ত্রি মানিক সিকদার (৪০), ২৯নং ওয়ার্ডস্থ কাশিপুর এলাকার এনছাফ আলী’র ছেলে অটোরিক্সা চালক খোকন (৩৫), বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা ইউনিয়নের দুর্গা সাগর এলাকার মোকলেছ হাওলাদারের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫) ও একই এলাকার বাসিন্দা মেহেরুন্নেছা (৫০)।

হতাহতদের উদ্ধারকারী ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর স্টেশন অফিসার ইউনুস আলী জানিয়েছেন, থ্রি-হুইলার অটো টেম্পুতে করে শিশুসহ ১১ জন যাত্রী নিয়ে বানারীপাড়া থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে গরিয়ারপাড় এলাকাধীন তেতুল তলা নামক স্থানে বানারীপাড়াগামী ‘দুর্যয় পরিবহন’ নামক একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাহেন্দ্রটি দুমড়ে মুচড়ে রাস্তার পাশে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই কলেজছাত্রী শিলার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মানিক ও খোকনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাছাড়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান থ্রি-হুইলার চালক সোহেল ও পারভীন বেগম ও মেহেরুন্নেছা।

বাকি আহতদের হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতরা হলেন- দুলাল হাওলাদার (৩৫), তন্নি আক্তার (১৭), শিশু তাইয়ুম (৭), সুমন (২৫) ও আব্দুল্লাহ (৭)। এর মধ্যে তাইয়ুম নিহত পারভীন এর ছেলে ও আব্দুল্লাহ নিহত গৃহবধূ মেহেরুন্নেছা’র নাতী। এদের দু’জনের অবস্থায় আশঙ্কাজনক।

বরিশাল মেট্রোপলিটন এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল জানান, দুর্ঘটনায় কবলিত বাসটি অটো টেম্পুকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশ নথুল্লাবাদ এলাকা থেকে বাসটি আটক করে। তাছাড়া দুর্ঘটনার কারণে বরিশাল-বানারীপাড়া-স্বরুপকাঠি সড়কে আধা ঘণ্টার মত যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।

পরে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় অটো টেম্পুটি উদ্ধার করা হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে বাস চালককে খুঁজে পাওয়া যায়নি। দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও অটো টেম্পু দুটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

অপরদিকে, মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহতের ঘটনায় শোকের ছাড়ায় নেমে এসেছে। বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালজুড়ে স্বজনদের আহাজারি আর আর্তনাদে আকাশ ভারী হয়ে উঠছে। খবর পেয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোশারফ হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কেএসটি