• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ৩, ২০১৯, ০২:১৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ৩, ২০১৯, ০৮:২১ পিএম

বরিশালে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে আহত

বরিশালে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে পিটিয়ে আহত

পরিচালনা কমিটির সভাপতি না করায় স্কুলের মধ্যেই প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যানের ছেলে ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কাগাশুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। কিন্তু ব্যস্ততার কারনে তিনি ওই পদ থেকে সরে যান। পরে তার পরামর্শে একটি এ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহাবুব উদ্দিন আহমেদ-বীর বিক্রমকে। এদিকে বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে চেয়েছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। তা না হতে পেরে তিনি প্রধান শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরই ধা রাবাহিকতায় আগের ওই ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার ভাইস চেয়ারম্যান তার ছেলে ও ভাইকে দিয়ে তার ওপর হামলা করিয়েছে বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের। ঘটনার সময় উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম নিজেও উপস্থিত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম বর্তমানে কাগজে-কলমে ওই স্কুলের শিক্ষক। এ জন্য তিনি স্কুলের শিক্ষক হিসেবে বেতন-ভাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছেন। কিন্তু তিনি কোনো দায়িত্ব পালন করেন না। মাসের শেষে এসে হাজিরা খাতায় এক সঙ্গে এক মাসের স্বাক্ষর করে চলে যান। এতে বাধা দিয়ে আগেও এই ভাইস চেয়ারম্যানের কাছে লাঞ্চিত হয়েছি।

তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন বেলা ১২টার দিকে আগের মত এক মাসের হাজিরা দিতে আসেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। তিনি খাতায় স্বাক্ষর করে তার ছোট ভাই রাসেল মুন্সীর স্ত্রীকে বিদ্যালয়ের ক্লার্ক পদে ও আরেক ভাইয়ের ছেলেকে বিদ্যালয়ের পিয়ন পদে জরুরি ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলেন। তখন আমি আইনের বাধ্যবাধকতা তুলে ধরলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর বিদ্যালয়ের কমিটির বিষয়ে কথা তুলে আমাকে গালাগাল শুরু করে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন ভাইস চেয়ারম্যান ছেলে হৃদয়, তার ভাই মনির মুন্সি ও তার সহযোগি যুবলীগ নেতা খোকন দিদার। তারা রেহানাকে কেন কমিটির সভাপতি করা হবে না এমন কথা বলে আমাকে মারধোর শুরু করে। পরে বিদ্যালয় থেকে আমাকে হুমকি দিয়ে বের করে দেয়। বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং শিক্ষক সমিতিকে জানিয়েছি।

এ প্রসঙ্গে চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহাতাব হোসেন সুরুজ বলেন, প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আমাকে ফোন করেছিলো। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগমের ভাই মনির মুন্সী, ছেলে হৃদয় ও সহযোগী খোকন দিদার নাকি তার ওপর হামলা করেছে। পরে আমি খোঁজ নিয়ে তার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগের উচ্চ পদস্থ নেতাদের জানানো হয়েছে।

তবে শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেহানা বেগম। তিনি জানান, প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কমিটি নিয়ে একটু বাক-বিতন্ডা হয়েছে। কিন্তু তাকে কেউ মারধর করেনি। সম্পর্ক খারাপ থাকায় তিনি এমন অপবাদ ছড়াচ্ছেন বলে দাবি করেন তিনি।

শিক্ষক সমিতি বরিশাল জেলা সভাপতি আ. মালেক হাওলাদার জানান, হামলার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম আমাদের অবহিত করেছেন। আমরা সন্ধ্যায় বিষয়টি নিয়ে জরুরি সভা ডেকেছি। ওই সভায় এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এসসি/