• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০১৯, ০৯:৫৭ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৮, ২০১৯, ০২:২৬ পিএম

প্রধান মৌসুমের শুরুতেই ৬৫ দিন অবরোধ

ইলিশ আহরণে বৃহত্তর আন্দোলনে যাচ্ছে জেলেরা

ইলিশ আহরণে বৃহত্তর আন্দোলনে যাচ্ছে জেলেরা

সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেও ইলিশ আহরণে সাগরে যেতে পারছে না জেলেরা। মৌসুমের শুরুতেই সরকার ১৮ মে (৬ জ্যৈষ্ঠ) থেকে পরবর্তী ৬৫ দিন ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় থমকে গেছে সবকিছু। লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে হতাশ হয়ে পড়েছেন ট্রলার মালিক ও মহাজনরা। প্রধান মৌসুম হিসেবে ১৫ বৈশাখ থেকেই জেলেদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় বঙ্গোপসাগরে। কিন্তু এবছর তাদের সেই আশা শঙ্কায় পরিণত হয়েছে। বুক ভরা হতাশা নিয়ে ট্রলার ঘাটে অপেক্ষা করছেন শত শত জেলে।

এদিকে, প্রধান মৌসুমের শুরুতেই অবরোধ ঘোষণা করায় ফুঁসে উঠেছে উপকূলসহ বঙ্গোপসাগরকেন্দ্রিক মৎস্য আহরণকারী সারা দেশের জেলে সম্প্রদায়। সরকারের এমন অমানবিক নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এরইমধ্যে জেলা, উপজেলায় আলাদা আলাদা কর্মসূচি পালিত হলেও রোববার (২৮ এপ্রিল) সকাল ১০টা থেকে সকল জেলে, ট্রলার মালিক, আড়ৎদার, মহাজনরা একত্রিত হবেন উপকূলীয় জেলা বরগুনায়। সেখানে হাজার হাজার মৎস্যজীবী উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ, মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশসহ প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি পেশ করবেন। শনিবার বিকাল ৪টার দিকে বাগেরহাট জেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতি ও জাতীয় মৎস্য সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার নেতারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

শরণখোলার মৎস্য ব্যবসায়ী এম সাইফুল ইসলাম খোকন ও মৎস্য আড়ৎদার মো. কবির হাওলাদার বলেন, সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ঘোষিত ৬৫ দিন অবরোধ ঘোষণায় জেলে সম্প্রদায়ে হতাশা নেমে এসেছে। ইলিশের ভরা মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে ট্রলার মালিক, আড়ৎদার, মহাজন সবাইকেই চরম লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তাছাড়া দরিদ্র জেলে পরিবারে হাহাকার শুরু হয়ে যাবে।

তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও পাশের দেশ ভারতে জেলেদের কিন্তু মাছ ধরা বন্ধ থাকবে না। আমাদের দেশের অবরোধের সুবিধাটা তারাই ভোগ করবে। এমনিতেই তারা বঙ্গোপসাগরে আমাদের জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করে সারা বছরই মৎস্য আহরণ করছে। আর এই অবরোধের সুযোগে ভারতীয় জেলেরা অত্যাধুনিক ট্রলিং ট্রলার দিয়ে আমাদের ইলিশ ছেঁকে নিয়ে যাবে, তা কোনোভাবেই ঠেকানো সম্ভব হবে না। তাই জেলে সম্প্রদায়ের জীবন-জীবিকার কথা ভেবে সরকারকে এই অবরোধ তুলে নেয়ার দাবি জানাই।

বাগেরহাট জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি ও জাতীয় মৎস্য সমিতির শরণখোলা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, একটি ট্রলার সাগরে মাছ ধরার উপযোগী করে পাঠানোর জন্য প্রত্যেক মহাজন এরইমধ্যে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। এমন সময় সরকারের জেলেবিরোধী ঘোষণায় সবাই হতাশ হয়েছে। রোববার নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে সারা দেশের মৎস্যজীবীরা বরগুনায় উপস্থিত হয়ে আন্দোলন করবে। সেখান থেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

৬৫ দিন নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা অমল কান্তি রায় বলেন, এ সময়টাতে ইলিশ, চিংড়িসহ সামুদ্রিক বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পেটে ডিম আসে এবং ডিম ছাড়ে। মূলত মা মাছ রক্ষা এবং মৎস্য ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা ছাড়া, অন্য দেশের জেলেরা যেন বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে মৎস্য আহরণ করতে না পারে সে ব্যাপারে নৌ-বাহিনী ও কোস্টগার্ড সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে।

এফসি