• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ১৪, ২০১৯, ১১:৪৮ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ১৪, ২০১৯, ১১:৪৮ এএম

সুন্দরবনে ৬৫ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা

সুন্দরবনে ৬৫ দিন মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা

মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গোটা সুন্দরবনের বঙ্গোপসাগরে ২০ মে থেকে ২৩  জুলাই পর্যন্ত মোট দু’মাস ৫দিন মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এতে চরম উৎকণ্ঠায় পড়েছে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল ৫০ হাজার জেলেসহ উপকূলীয় এলাকার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ইতিমধ্যে বাগেরহাট, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, পিরোজপুর, বরগুনা, পাথরঘাটাসহ উপকূলীয় জেলা ও উপজেলাগুলিতে মানববন্ধন, সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছে জেলেদের বিভিন্ন সংগঠন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে আশ্বিন মাস পর্যন্ত শরণখোলাসহ উপকুলের লক্ষাধিক জেলে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ আহরণ করে।

জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রথমে সমুদ্র যাত্রার জন্য গত চৈত্র মাস থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা মহাজনদের কাছ থেকে দাদনের টাকা নিয়ে এবং কেউ কেউ ব্যাংক ও এনজিও থেকে লোন নিয়ে স্ব স্ব জেলেদের অগ্রিম টাকা প্রদান করেন। ট্রলার মেরামত এবং জাল ক্রয় কিংবা জাল রিপেয়ার করে যখন সমুদ্রে যাবার সময় ঘনিয়ে এসেছে, ঠিক তখন ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার খবরটি যেন তাদের মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।

শরণখোলার রাজৈর এলাকার এফবি খায়রুল ইসলাম ফিশিং ট্রলারের মালিক জাকির হোসেন, এফবি ৮ ভাই ফিসের মালিক আনোয়ার হোসেন, এফবি মায়ের দোয়ার মালিক রফিকুল ইসলাম ও এফবি জিসানের মালিক মনির হোসেনসহ অন্যান্যরা জানান, সরকার এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করলে জেলেরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়বেন।

শরণখোলা উপজেলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম কালাম ও শরণখোলা উপজেলা মৎসজীবী সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, এটি সরকারের একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত। হঠাৎ এরকম সিদ্ধান্তে উপকূলের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এ সময়ে ভারতসহ অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের জেলেরা বঙ্গোপসাগর থেকে সকল প্রকার মাছ ধরে নেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি সরকারকে পুনর্বিবেচনার করার দাবি জানান নেতৃবৃন্দ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে গত ২৮ এপ্রিল বরগুনায় উপকূলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার অন্তত ১৫ হাজার জেলেদের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বড় ধরনের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে লিখিত স্মারকলিপি বরগুনা জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করেছে জেলে সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও উপকূলের বিভিন্ন স্থানে একই দাবিতে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে জেলে পরিবারের হাজার নারী পুরুষ অংশগ্রহণ করেছে।

এ বিষয়ে মৎস্য বিভাগের খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক রনজিৎ কমার পালের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এর পূর্বে প্রতি বছর সাগরে ট্রলিং ট্রলারের ক্ষেত্রে এ ধরনের সিদ্ধান্ত কার্যকর ছিল। এবারে যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক সকল নৌযান এ নিষিদ্ধের আওতায় এসেছে। এ সময়টায় অধিকাংশ মাছ ডিম ছাড়ে।

এ কারণেই সরকার এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া, মা ইলিশ রক্ষায় অক্টোবরের শেষ থেকে ২২ দিনের অবরোধ কার্যকর থাকবে বলে তিনি জানান। 

টিএফ