• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৩১, ২০১৯, ১০:৫৯ এএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৩১, ২০১৯, ১০:৫৯ এএম

মাদক ব্যবসায় রাজি না হওয়ার জের

অগ্নিদগ্ধের শিকার সেই গৃহবধূর মৃত্যু

অগ্নিদগ্ধের শিকার সেই গৃহবধূর মৃত্যু

নরসিংদীতে শ্বশুর-শাশুড়ির যৌতুকের দাবি পূরণে ব্যর্থ ও মাদক ব্যবসায় রাজি না হওয়ার কারণে অগ্নিদগ্ধের শিকার জান্নাতি আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূ ৪০ দিন মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে মারা গেলেন।

ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে বৃহস্পতিবার (৩০ মে) তার মৃত্যু হয়। এর আগে ২১ এপ্রিল ভোরে নরসিংদীর হাজিপুরে শ্বশুরবাড়িতে কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন জালিয়ে দেয়া হয়।

নিহত জান্নাতি নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর গ্রামের শরীফুল খানের মেয়ে ও পার্শ্ববর্তী চরহাজীপুর গ্রামের মাদক ব্যবসায়ী হুমায়ুন ও শান্তি বেগম দম্পত্তির পুত্রবধূ। জান্নাতি গত বছরের ঈদুল আযহার দিনে প্রেমের টানে পালিয়ে বিয়ে করেছিল হুমায়ুনের ছেলে শিপলু ওরফে শিবুকে।

নিহত জান্নাতির স্বজন সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রেমের টানে পালিয়ে বিয়ে করার পর জান্নাতিকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে পারছিল না শ্বশুরবাড়ির লোকজন। প্রায় সময়ই জান্নাতিকে তাদের কথামতো মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করার জন্য চাপ দিতো পুলিশের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী শ্বশুর-শাশুড়ি। জান্নাতি এতে রাজি না হওয়ায় তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করা হয়। নির্যাতন সইতে না পেরে একাধিকবার পিত্রালয়ে ফিরে যায় জান্নাতি। পরবর্তীতে আর নির্যাতন না করার শর্তে জান্নাতিকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নেয়া হয়। পরে আবারও নির্যাতন শুরু হলে জান্নাতি বাধ্য হয়ে ঢাকায় তার বাবার বাসায় চলে যায়। পরে সেখান থেকে স্বামী শিবুর অনুরোধে আবারও শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসে জান্নাতি।
আসার পর শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদ ফাল্গুনি ওইদিন রাতভর ঝগড়া করে জান্নাতির সঙ্গে। এসময় তারা জান্নাতির কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক ও মাদক ব্যবসায় সহযোগিতা করতে চাপ দেয়। 

একপর্যায়ে গৃহবধূ জান্নাতি নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমন্ত অবস্থায় ভোরে (২১ এপ্রিল) জান্নাতির শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এসময় তার আর্তচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে আগুন নেভায়। পরে তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে নরসিংদী আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এ ব্যাপারে নরসিংদী সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দুজ্জামান জানান, পরিবারের পক্ষে অগ্নিদগ্ধের ঘটনায় আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আহত জান্নাতি মারা গেছে কী না এমন খবর আমরা এখনও পাইনি। 
অভিযুক্ত শ্বশুর-শাশুড়ি তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী কী না সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানাতে পারেননি ওসি।

কেএসটি