• ঢাকা
  • শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ৩১, ২০১৯, ০৩:৫৫ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ৩১, ২০১৯, ০৩:৫৫ পিএম

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ও শিমুলিয়া ঘাটে নিরাপত্তা জোরদার

ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক ও শিমুলিয়া ঘাটে নিরাপত্তা জোরদার

আসন্ন পবিত্র ঈদ উপলক্ষে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়ক এবং শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মহাসড়কে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সীমিত করা হয়েছে। এছাড়াও মানুষের ঈদযাত্রা স্বাভাবিক ও সচল রাখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক লোক থাকবে বলে ঢাকা-মাওয়া-খুলনা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে। 

এদিকে, শিমুলিয়া ঘাটে থাকবে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, কন্ট্রোল রুম, প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য রুমের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে একটি ডাইভারশন রোড (বিকল্প রাস্তা) ছাড়া আর কোনও ডাইভারশন রোড থাকছে না। কালভার্ট ও সেতুগুলো যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। মহাসড়কে যানবাহনের চলাচল স্বাভাবিকের চাইতে কম। এখনও ঈদের চাপ শুরু হয়নি। তেমন কোনও যানজট ও গাড়ির স্বাভাবিক চাপও নেই। বলতে গেলে মহাসড়ক একদম ফাঁকা।

ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের হাঁসাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম মোর্শেদ তালুকদার জানান, মহাসড়কে তেমন কোনও যানবাহন নেই। ঈদ যাত্রা এখনও পুরোদমে শুরু হয়নি। এবার লম্বা ছুটির কারণে মহাসড়কে একবারে চাপ পড়বে না।। হাঁসাড়া পুলিশ ফাঁড়িতে ২৫ থেকে ৩০ জন সদস্য রয়েছেন যারা মহাসড়কের কুচিয়ামোড়া থেকে মাওয়া চৌরাস্তা পর্যন্ত টহল দেন। যাত্রীদের যাতে কোনও ভোগান্তি পোহাতে না হয় এবং  ট্রাফিক চলাচল যেন স্বাভাবিক থাকে সে চেষ্টা করা হবে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে উন্নয়ন কাজ চলছে বলে অন্যান্য মহাসড়কের মতো এখানে অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর সুযোগ হয়নি। তবে পেট্রোল পাম্প স্টেশনের যে সিসিটিভি আছে। ওইগুলোও আমাদের কাজে আসবে।

ঢাকা-মাওয়া হাইওয়ের হাঁসাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ গোলাম মোর্শেদ তালুকদার আরো জানান, ভোগান্তি লাঘবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এর শিমুলিয়া ঘাটেও। এই ঘাটে দক্ষিণ বঙ্গের ২১ জেলার ঈদযাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে সেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শিমুলিয়া ঘাট ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে ঈদ যাত্রীদের নিরাপত্তায় র‌্যাব সদস্যদের পাশাপাশি থাকবে পাঁচ শতাধিক পুলিশ। এছাড়া ঘাটে থাকবে ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, কন্ট্রোল রুম, প্রাথমিক চিকিৎসার রুম ইত্যাদি।

শিমুলিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম জানান, ‘ঈদে ঘাট এলাকায় যাত্রীদের কোনও সমস্যা হবে না বলে আশা করি। যানবাহন চাঁদাবাজরাও যেন কোনোভাবে সক্রিয় হতে না পারে সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো।

লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কাবিরুল ইসলাম জানান, ঈদ উপলক্ষে ঈদের তিন দিন আগে থেকে ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে। নদীতে বন্ধ থাকবে বাল্কহেড চলাচল। ঈদের তিন দিন পর ট্রাক ও বাল্কহেড চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। ঈদ উপলক্ষে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ঢাকার বাস ভাড়া ১০০ টাকা এবং শিমুলিয়া ঘাট থেকে কাঁঠালবাড়ী ঘাট পর্যন্ত স্পিডবোট ভাড়া ১৮০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নৌরুটে ৮৭টি লঞ্চ, ১৭টি ফেরি ও দুই ঘাট মিলিয়ে ৫৪০টি স্পিডবোট চলাচল করবে। সন্ধ্যার পর স্পিডবোট ছাড়া হবে না। লাইফ জ্যাকেট ও ধারণ ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট ঘাট ছাড়বে। চার জন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঘাট এলাকায় থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এদিকে, বর্তমানে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে দুইটি রো রো ফেরিসহ ১৫টি ফেরি চলছে। তবে, ঈদের আগে আরও দুইটি ফেরি এই নৌরুটে সংযুক্ত হতে পারে।

বাংলাদশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) প্রফুল্ল চৌহান জানান, কিছু ফেরি ডকে আছে। সেগুলো ঠিক হলে ঈদের আগে আরও ফেরি এই রুটে সংযুক্ত হবে। আর বর্তমান রুটের চ্যানেল সরু হওয়ায় দুইটি ফেরি একই সঙ্গে চ্যানেল অতিক্রম করতে পারে না। একটি ফেরি চ্যানেলে থাকলে অপর ফেরিকে চ্যানেলের মুখে অপেক্ষা করতে হয়। এতে করে ১০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট সময় বেশি লাগে। আরেকটি বিকল্প চ্যানেল তৈরির কাজে ড্রেজিং কাজ চলছে। তবে ঈদের আগে তা চালু হবে না।

মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য শিমুলিয়া ঘাট ও ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে নিয়োজিত থাকবে। ইউনিফর্ম পরিহিত পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশও থাকবে। শিমুলিয়া ঘাটে ওয়াচ টাওয়ার, সিসিটিভি ক্যামেরা, কন্ট্রোল রুম, প্রাথমিক চিকিৎসা রুম স্থাপন করা হবে। সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘাট এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। যাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা মালিকদের জেল-জরিমানা করা হবে। যাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ঈদে বাড়ি যেতে পারে সেজন্য ঘাট এলাকায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

কেএসটি